Bangladesh

মনোনয়নেও ‘কিংস পার্টি’ ফ্লপ

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নানা নাটকীয়তা চলছে। নিবন্ধন পাওয়ার পর থেকেই আলোচনায় কিংস পার্টি। বলাবলি হচ্ছিল বিএনপি’র অনেক নেতা কিংস পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন। বাস্তবে এর ছিটেফুটাও দেখা যায়নি। যা দেখা গেছে তা হলো- বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত, দলছুট ও নিস্ক্রিয় সাবেক কয়েকজন সংসদ সদস্য ছাড়া কাউকেই টানতে পারেনি তারা। তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই বেশ হাঁকডাক ছিল কিংস পার্টির। ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে জোর প্রস্তুতি ছিল দলগুলোর। গোপনে চলেছে দেন-দরবারও। তবে প্রার্থী সংগ্রহে তেমন চমক দেখাতে পারেনি। তবে প্রার্থী সংগ্রহে অদক্ষতায় ছোট দলের বড় নেতাদের দুষছেন কেউ কেউ।

বিজ্ঞাপন তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম, সুপ্রিম পার্টি ও  মেজর ইব্রাহিমের যুক্তফ্রন্টের কেউই ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে পারেননি। সর্বোচ্চ ১৫১ আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে তৃণমূল বিএনপি। অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ৪৯, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি ৮২ ও  মেজর ইবরাহিমের বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির নেতৃত্বে নতুন জোট যুক্তফ্রন্টের তিন দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ১৩, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ৫, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১৮ আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে। সূত্র বলছে, দলের নেতারা জেলায় জেলায় ঘুরেও প্রার্থী সংগ্রহ করতে পারেননি। মনোনয়ন ফরম বিক্রিতেও ছিল হতাশা। অধিকাংশ জেলার একাধিক আসনে কেউই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি। এতে রাজনীতির মাঠে আলোড়ন সৃষ্টি করা ছোট দল কিংস পার্টির বড় স্বপ্ন ভেস্তে যেতে বসেছে। প্রার্থী খুঁজে না পাওয়ায় দলগুলোর নেতাদের মাঝেও হতাশা দেখা যাচ্ছে। 

তবে দলগুলোর নেতারা বলছেন, তারা প্রায় ২ শতাধিক আসনে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছেন। সময় স্বল্পতার কারণে নির্ধারিত সময়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়ন ফরম জমা দিতে পারেননি। এ বিষয়ে তৃণমূল বিএনপি’র মহাসচিব এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার  মানবজমিনকে বলেন, আমরা ২৮০ আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছি। তবে সরকারদলীয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ে সঠিক সময়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আমাদের প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম জমা দিতে পারেননি। দেরি করে যাওয়ায় অনেকের ফরম জমা নেয়া হয়নি। অনেকে ফরম ফিলাপের সমস্যার কারণে বাদ পড়েছেন। আবার অনেকে ৪টার পরে গেছেন এজন্য তার পেপার জমা নেয়া হয়নি। এ নিয়ে একটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। তবে আমরা এই জটিলতা সমাধানের চেষ্টা করছি। আমাদের দলের মাত্র ১৫১ জন জমা দিতে পেরেছেন।

ইসি’র ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে মনোনয়ন দাখিল কার্যক্রম। নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে মোট ৩০টি রাজনৈতিক দল থেকে এবার প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এসব দল ও স্বতন্ত্র মিলে সারা দেশের রিটার্নিং অফিসে ২৭১৩ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এদিকে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ৪৪টি দলের মধ্যে ১৭টি দল জানিয়েছে তারা এই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছে না।

তৃণমূলের তালিকায় চমক নেই-
তৃণমূল বিএনপি ঘোষিত প্রার্থী তালিকাতেও চমক নেই। দলটি জানিয়েছে, ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮০টিতে প্রার্থী দিয়েছে তারা। এদের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১৬০ জন। এরমধ্যে ফরম পূরণে ভুল থাকায় ৯ জনের ফরম বাতিল হয়েছে। তবে দল ঘোষিত প্রার্থীদের মধ্যে পাঁচজন সাবেক সংসদ সদস্য রয়েছেন। 

বিএনএম-এ চমক শুধুই আবু জাফর-
সাবেক সংসদ সদস্যসহ বিএনপি থেকে গুরুত্বপূর্ণ অনেকেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন বলে আলোচনা ছিল। তবে বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য ও দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মো. আবু জাফর ছাড়া আলোচিত কেউই নেই দলটিতে। তবে দল ঘোষিত প্রার্থীদের মধ্যে পাঁচজন সাবেক সংসদ সদস্য রয়েছেন। তারা হলেন বরগুনা-২ আসনে অধ্যাপক আবদুর রহমান, সাতক্ষীরা-৪ আসনে এইচএম গোলাম রেজা, নীলফামারী-১ আসনে জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, জামালপুর-৪ আসনে মামুনুর রশিদ এবং সুনামগঞ্জ-৪ আসনে দেওয়ান শামসুল আবেদিন। এ ছাড়া দলের মহাসচিব মো. শাহ্‌জাহান চাঁদপুর-৪, সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনী পাবনা-২, আরএকে সিরামিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ একে একরামুজ্জামান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। একরামুজ্জামান বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন।

Show More

8 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button