মেধা পাচার: তরুণেরা কেন দেশ ছেড়ে যেতে এত উন্মুখ?
মেধা পাচার বা ব্রেইন ড্রেইন হলো কোনো একটি দেশ থেকে উচ্চ প্রশিক্ষিত ও যোগ্য ব্যক্তিদের অন্য দেশে গমন এবং তা পুরোদমে চলতে থাকা। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা দলে দলে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম ও মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য বিদেশে যাচ্ছেন এবং সেখানেই থেকে যাচ্ছেন। মেধা পাচারের কারণে আমরা আমাদের দক্ষ শ্রমশক্তি ও মননশীল ব্যক্তিদের হারাচ্ছি। বাংলাদেশে যখন দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটছে, তখন এ বিষয়টি অবশ্যই দেশের জন্য উদ্বেগের। কারণ এ সময় দেশের জন্য অনেক বেশি দক্ষ ও মেধাবী শ্রমশক্তি দরকার।
তাসনিম ফেরদৌস ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতক শেষ করেছেন। বর্তমানে তিনি দুই বছরের কিছু বেশি সময় ধরে বাস করছেন কানাডার উইনিপেগে।
এর আগে তিনি ইউনিভার্সিটি অভ ম্যানিটোবায় ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেকচারে মাস্টার্স ডিগ্রির জন্য আবেদন করেছিলেন। ফেরদৌস বলেন, ‘ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেকচারের জন্য ম্যানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি প্রতিষ্ঠান। আমার বোন যুক্তরাষ্ট্রে বাস করে, সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কাছেই। বাংলাদেশে ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেকচার পড়ানো হয় না। সুতরাং বিদেশে পড়তে আসাই আমার একমাত্র উপায় ছিল।’
তাসনিম গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামগুলোর পাশাপাশি কো-অপ প্রোগ্রামেও যুক্ত। এ কো-অপ প্রোগ্রাম শিক্ষার্থী ও চাকরির বাজারের দূরত্ব ঘোচাতে কাজ করে। তাসনিম বলেন, ‘আমি আমার মাস্টার্স প্রোগ্রামের ব্যবহারিক কাজগুলো চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি একজন জুনিয়র ল্যান্ডস্কেপ ডিজাইনার হিসেবে কো-অপ প্রোগ্রামে এ গ্রীষ্মেই কাজ শুরু করেছি।’ তাসনিমের মাস্টার্স ২০২৫ সালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
তার কি দেশে ফেরার পরিকল্পনা আছে? এ প্রশ্নের জবাবে তাসনিম বলেন, ‘আমি কিছু ব্যক্তিগত কারণে কানাডায় অবস্থান করার কথা ভাবছি।’
তবে চাকরির নিশ্চয়তা থাকলে তাসিনম হয়তো দেশে ফিরে আসার কথা ভাবতে পারেন। তিনি বলেন, ‘এখানেও সবকিছু একদম ত্রুটিহীন নয়। এখানেও সমস্যা রয়েছে, ভিন্ন ধরনের সমস্যা। কিন্তু এখানে অন্তত কর্মপরিবেশ প্রতিকূল নয়। বাংলাদেশে সুস্থ কর্মস্থল পাওয়া সম্ভব বলে আমার মনে হয় না।’
তাসনিম একা নন। এমন হাজারো বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের দিকে ঝুঁকছেন এবং তাদের চিন্তাভাবনাও তাসনিমের মতোই। যদিও বাংলাদেশ থেকে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়া শিক্ষার্থীদের কতজন সেখানে থেকে যান, সে সংখ্যাটা জানা সহজ নয়। কিন্তু উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
ইউনেস্কোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে এ সংখ্যাটি ছিল সাড়ে ৫২ হাজার। ওপেন ডোরস ডেটা-এর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ সংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করছেন। এ সংখ্যা ১৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৮ শতাংশ বেড়েছে।
মেধা পাচার বা ব্রেইন ড্রেইন হলো কোনো একটি দেশ থেকে উচ্চ প্রশিক্ষিত ও যোগ্য ব্যক্তিদের অন্য দেশে গমন এবং তা পুরোদমে চলতে থাকা। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা দলে দলে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম ও মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য বিদেশে যাচ্ছেন এবং সেখানেই থেকে যাচ্ছেন।
মেধা পাচারের কারণে আমরা আমাদের দক্ষ শ্রমশক্তি ও মননশীল ব্যক্তিদের হারাচ্ছি। বাংলাদেশে যখন দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটছে, তখন এ বিষয়টি অবশ্যই দেশের জন্য উদ্বেগের। কারণ এ সময় দেশের জন্য অনেক বেশি দক্ষ ও মেধাবী শ্রমশক্তি দরকার।
বিশ্বব্যাংকের ২০২১ সালের পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ ১০ পয়েন্টের মধ্যে সাত পয়েন্ট পেয়েছে। যা বাংলাদেশকে মেধা পাচার প্রবণ শীর্ষ ২০ শতাংশ দেশের একটিতে পরিণত করেছে। ফান্ড ফর পিস ডেটা-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে মেধা পাচার সূচকে বাংলাদেশের পয়েন্ট ছিল ৭.৬ যা বৈশ্বিক গড় ৫.৫৫ থেকে তুলনামূলক খারাপ।
অবশ্য মেধা পাচার উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য নতুন কোনো বিষয় নয়। সাধারণত অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে উচ্চদক্ষ মানুষ গুণগত শিক্ষা, অধিক সুযোগ-সুবিধা, শ্রেষ্ঠতর প্লাটফর্ম, সামাজিক নিরাপত্তা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং জীবন যাত্রার উন্নতমানের জন্য উন্নত দেশগুলোতে চলে যান।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম-এর পরিচালিত এক জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশের ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সি যুবসমাজের প্রায় ৮২ শতাংশ ভালো ভবিষ্যতের আশায় দেশত্যাগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ প্রবাসীদের কাছ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ রেমিট্যান্স হিসেবে পায়। কিন্তু মেধাবী ও দক্ষ জনবলের ক্ষেত্রে সমীকরণটি এতটা সহজ নয়। কারণ যদি কোনো ব্যক্তি সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠেন, তবে তাকে শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত করে তুলতে সরকারকে বড় অংকের অর্থ ব্যয় করতে হয়।
উচ্চদক্ষ শ্রমশক্তি একটি নির্দিষ্ট সময় পর দেশের রেমিট্যান্সে খুব বড় একটা ভূমিকা রাখতে পারে না, এ বিষটিরও প্রমাণ রয়েছে। কারণ ওই সময়ের মধ্যে তারা তাদের পরিবারের পরবর্তী সদস্যদেরও অভিবাসনে সহায়তা করে।
অতীতে কিছু দেশ মেধা পাচারের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় প্রবাসীদের উপর বাধ্যতামূলক রেমিট্যান্স পাঠানোর শর্ত আরোপ করত (ফিলিপাইনের নাগরিকদের বিদেশে কাজ করতে হলে আইন অনুযায়ী এখনো তাদের আয়ের ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ দেশে পাঠাতে হয়।) কিন্তু এ ধরনের নীতি বাস্তবায়ন করা বেশ কঠিন। অতীতে এ ধরনের আইন প্রয়োগে সফল হওয়া একমাত্র দেশ ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। যদিও তাদের সফলতার বড় একটি কারণ হলো, তাদের অভিবাসী শ্রমিকেরা কোরিয়ান মালিকানাধীন কোম্পানিতে কাজ করতেন।
সুতরাং বিদেশে অভিবাসন কেন বাংলাদেশিদের জন্য একটি লোভনীয় বিকল্প হিসেবেই রয়ে গেছে এবং এই প্রবণতার পরিবর্তন ঘটাতে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার তার অনুসন্ধান জরুরি।
অনাকর্ষণীয় চাকরির বাজার
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস (সিপিজে) ও বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার (বিওয়াইএলসি)-এর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত ‘ইয়ুথ ম্যাটার্স সার্ভে-২০২৩’-এ ফেইসবুকের মাধ্যমে ১৬ থেকে ৩৫ বছর বয়সি পাঁচ হাজার ৬০৯ জন অংশগ্রহণকারীর ওপর একটি জরিপ করা হয়। এতে দেখা যায়, বিভিন্ন সমস্যার কারণে যুবসমাজের ৪২ দশমিক ৪ শতাংশ বিদেশে চলে যেতে চান।
গবেষণাটিতে কারণ হিসেবে দুর্নীতি, বেকারত্ব, অর্থনৈতিক সংকট, মুদ্রাস্ফীতি, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবকে উল্লেখ করা হয়।
একইসাথে সমস্যাগুলো সমাধান করার শর্তে ৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী দেশে ফিরে আসার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন।
হালিমা নূর (ছদ্মনাম) ২০১৫ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশলবিদ্যায় স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। তিনি দেড় বছর ধরে ঢাকায় চাকরি খুঁজেছেন, কিন্তু ভাগ্য তার সুপ্রসন্ন হয়নি।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানত তথ্য-প্রযুক্তি ও প্রযুক্তি খাতে চাকরি করতে আগ্রহী ছিলাম। এরপর যেকোনো খাতে ব্যবস্থাপনায় কাজ করতে আমি নিজেকে তৈরি করি।’ চাকরির ব্যবস্থা করতে না পারার প্রধান কারণ হিসেবে তিনি ব্যক্তিগত সংযোগের অভাবকে উল্লেখ করেন।
হালিমাকে চাকরি না দেওয়ার অনেক হাস্যকর কারণের পাশাপাশি তাকে নিয়োগদাতাদের কাছ থেকে আরও অনেক কথা শুনতে হয়েছে — ‘যেহেতু আপনার সিজিপিএ বেশি, তাই আপনি এখানে বেশিদিন চাকরি করবেন না,’ আপনি রাতের বেলা কাজ করতে পারবেন না, তা-ই না?’ ‘আপনি কি বিবাহিত? আপনার পারিবারিক পরিচয় কী? [স্থানীয় একটি কোম্পানি থেকে এ প্রশ্ন করা হয়েছিল],’ ‘আপনি ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করেছেন, যা এখানে চাকরি করার জন্য উপযুক্ত নয়’ ইত্যাদি।
হালিমা বলেন, বিষয়টি খুব হশাতাজনক। অনেক নিয়োগকারী তাকে বেশকিছু উপদেশও দিয়েছেন। তারা তাকে বলতেন, ‘আপনার বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পড়তে যাওয়া উচিৎ’, ‘আপনার পরিবার আপনাকে এ ধরনের কাজ করার অনুমতি দেবে না’ ইত্যাদি।
তিনি বলেন, সাক্ষাৎকারগুলো খুব তাড়াতাড়ি শেষ করার চেষ্টা করা হতো। এটা বোঝা যেত যে, তারা সম্পূর্ণ বহিরাগতদের নিয়োগ দিতে চান না।’
হালিমা ২০১৯ সালের শেষের দিকে চাকরির জন্য নিউজার্সিতে চলে যান। তিনি বলেন, ‘আমি একটি প্রযুক্তি সেবা কোম্পানিতে চার বছর ধরে কাজ করছি। এ বিষয়েই আমি পড়াশোনা করেছি। আমি বড় বড় প্রকল্প নিয়ে কাজ করছি।’
পেশাগত উন্নতির ব্যাপারে হালিমা বলেন, ‘আমি এখানে ইন্ডাস্ট্রি উপাত্ত ব্যবস্থাপনা ও বিকাশের ব্যাপারে জানতে পারি। এতে আমি এসব প্রকল্পে পেশাগত প্রশিক্ষণ নিতে আরও আগ্রহী হয়ে উঠছি।’
অনুপ্রেরণা
‘আপনি কি অনুপ্রেরণা পান?’ এ প্রশ্নের উত্তরে ফাতিমা কাজী (ছদ্মনাম) বলেন, ‘আমি কর্পোরেট অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সরকারি অনুদান খাতে কাজ করি। এটি ব্যবসায়ের বিকাশের জন্য প্রণোদনা হিসেবে কাজ করে।’ তিনি টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন এবং এখন সেখানে পূর্ণকালীন কাজ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি যখন আমার কাজের ফল পাই, তখন আমার খুব ভালো লাগে। তাছাড়া বর্তমানে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে এই শিল্প। অন্যদিকে সরকারও এ শিল্পে বিনিয়োগ করছে।’
‘বাংলাদেশে এ শিল্পের তেমন প্রবৃদ্ধি নেই। আমাদের দেশের জটিল আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা এর জন্য একটি বড় প্রতিবন্ধকতা,’ তিনি আরও বলেন।
ইস্ট কোস্টে বসবাসকারী তাহসিন মাহমুদ বলেন, ‘স্টেম [বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত] থেকে স্নাতক সম্পন্ন করার পর যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করার ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে আমাদের। কিন্তু বাংলাদেশে এ সুবিধা পাওয়া সম্ভব নয়।’
তাহসিন বাংলাদেশের গাজীপুরে অবস্থিত ইসলামিক প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশলবিদ্যায় স্নাতক সম্পন্ন করেন। তারপর তিনি ঢাকায় একটি বহুজাতিক ভোক্তা পণ্য কারখানায় প্রসেস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘বিদেশে যাওয়া আমার দীর্ঘদিনের একটি লক্ষ্য ছিল। বিশ্বের সবচেয়ে ভালো শিক্ষা ও গবেষণার অভিজ্ঞতা লাভের ব্যাপারে আমার তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল। এছাড়া বিগত দশ বছরে শিল্পখাতের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা তাদের কোম্পানিতে গবেষণার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন।’
ভার্জিনিয়া টেক ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স ও পিএইচডি করতে তাহসিন যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন। বর্তমানে তিনি একটি ফরচুন-২০০ প্রযুক্তি কোম্পানিতে পূর্ণকালীন কাজ করছেন।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণার মূল্য আছে। এখানে একটি পিএইচডি ডিগ্রি শিক্ষায়তনিক ও শিল্পক্ষেত্রে বিবিধ সুযোগ-সুবিধার দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়।’ তাহসিন আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার পথে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতাটি হলো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা লোকদের থেকেই নিয়োগ দেয়।’
এছাড়া বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি এবং পেশাগত ও প্রাযুক্তিক দক্ষতা বাস্তব জীবনে প্রয়োগের ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে মনে করেন এ তরুণ।
স্বাধীনতা
‘নারীর নিরাপত্তা, রাস্তায় বের হওয়ার সক্ষমতা, চাকরি করা, নিজের মতো করে বাঁচা… এগুলো মৌলিক বিষয়,’ বলেন তাসনিম।
নিউইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির কাউন্সেলিং সাইকোলজিতে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত অত্রি হাসানও একই কথা বলেন। ‘আমি ট্রেনে করে দ্বিধাহীনভাবে কানেকটিকাটে আমার বন্ধুর বাসায় বেড়াতে যেতে পারি। কিন্তু বাংলাদেশে একই দূরত্বে যাওয়ার জন্য অনেক পরিকল্পনা করতে হবে, বাড়ি থেকে অনুমতি নিতে হবে।’
‘শুধু তা-ই নয়, অনেক ছোট ছোট বিষয়েও স্বাধীনতা রয়েছে। যেমন দেশে বাসায় ফেরার সময় আমাকে চালকের ওপর ভরসা করতে হতো। এখানে শুধু নিরাপদে যাতায়াতই নয়, এখানে কোনো বাধার তোয়াক্কা করি না। এখানে আমি অনেক দূর পর্যন্ত দৌড়াতে পারি এবং আমি একদম নিরাপদ বোধ করি.’ বলেন অত্রি।
ফাতিমা বলেন, ‘বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে আমার ব্যক্তিগত স্পেস থাকুক, তা আমি পছন্দ করি। আমি এখানে ছোট-বড় অসংখ্য কাজই শিখেছি। সুযোগ-সুবিধা পেতে এবং নিজের বিকাশের জন্য আমাকে আমার নিজের পথের বাইরে যেতেই হবে। আমি যে বিষয়ে ডিগ্রি নিয়েছি, সে বিষয় সংশ্লিষ্ট বহু ও বৈচিত্র্যময় কাজের সুযোগ এখানে রয়েছে।’