International

বিদ্রোহীদের কাছে আরও এক শহরের নিয়ন্ত্রণ হারাল মিয়ানমার জান্তা

বিদ্রোহীদের কাছে আরও এক শহরের নিয়ন্ত্রণ হারাল মিয়ানমার জান্তা সরকার। কয়েক দিনের তুমুল সংঘর্ষের পর জাতিগত বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলোর সমন্বয়ে গঠিত স্থানীয় প্রতিরোধ জোটের কাছে উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের নমশান শহরের নিয়ন্ত্রণ হারায় দেশটির সামরিক বাহিনী।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মির (এএ) সমন্বয়ে গঠন করা জান্তাবিরোধী জোটের চলমান অপারেশন-১০২৭ এর অংশ হিসেবে শান রাজ্যজুড়ে হামলা চালাচ্ছে জাতিগত বিদ্রোহীগোষ্ঠী। তারা সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে শান রাজ্যের নমশান শহরের দখল নেওয়ার দাবি করেছে। গত ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সামরিক ব্যাটালিয়ন, ঘাঁটি এবং পুলিশ স্টেশনের বিরুদ্ধে ছয় দিনের টানা আক্রমণের পর শহরটির দখল নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে টিএনএলএ। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ওয়াই-১২, এআরটি-৪২ পরিবহন বিমান, এমআই-৩৫ যুদ্ধবিমান থেকে হামলা সত্ত্বেও নমশান দখল করেছে টিএনএলএ বিদ্রোহীরা। বিমান হামলার পাশাপাশি নমশান শহরের কাছের মানতং শহেরে বিদ্রোহীদের অবস্থানে জান্তা-নিয়ন্ত্রিত সামরিক বাহিনীর আর্টিলারি ইউনিট গোলাবর্ষণ করেছে।

জাতিগত ওই বিদ্রোহী গোষ্ঠী বলছে, শহরটির দখল নেওয়ার সময় জান্তা সৈন্যদের ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে। তুমুল আক্রমণের মুখে সামরিক বাহিনী পালিয়ে যাওয়ার পর শহরের বিভিন্ন স্থানে ৬০ জান্তা সৈন্যের মরদেহ পাওয়া গেছে। এছাড়াও পরিবারের ২৯ সদস্যসহ ৩৬ সৈন্য এবং পুলিশকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

টিএনএলএ নমশানের জান্তা ঘাঁটি থেকে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ ও অস্ত্র উদ্ধারেরও তথ্য জানিয়েছে। গোষ্ঠীটি বলছে, জান্তার গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলায় তিন বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে। সামরিক বাহিনীর হামলায় অর্ধ-শতাধিক বাড়ি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং একটি স্কুল ধ্বংস হয়েছে।

জাতিগত বিদ্রোহীদের জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স গত ২৭ অক্টোবর দেশটির সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অপারেশন-১০২৭ নামে অভিযান শুরু করে। তখন থেকে এই জোটের সদস্যরা মিয়ানমার-চীন সীমান্তের শান রাজ্যের অন্তত ৮টি বাণিজ্যিক শহরের দখল নিয়েছে। একই সময়ে ওই রাজ্যে জান্তা বাহিনীর ২৫০টিরও বেশি ঘাঁটি দখল করেছে তারা।

গোষ্ঠীটি বলছে, টিএনএলএর সৈন্যরা শান রাজ্যের নামখাম, কুটকাই এবং মান্টং শহরের আরও কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। রবিবার শান রাজ্যের উত্তরে সামরিক বাহিনীর সাথে বিদ্রোহীদের ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হয়।

অন্যদিকে, সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম অধ্যুষিত মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নেওয়ার দাবি করেছে ওই অঞ্চলের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলন করে আসা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। রাখাইন ছাড়াও মিয়ানমারের চীন ও ভারত সীমান্ত লাগোয়া একাধিক রাজ্যের বেশিরভাগ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সামরিক বাহিনীর সাথে লড়াইরত সেখানকার বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলো।

দ্য ইরাবতির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরাকান আর্মি (এএ) বলেছে, তারা রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরের মধ্যে অন্তত ১৫টি এবং প্রতিবেশী চিন রাজ্যের পালেতওয়া শহরের দখল সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করেছে। এই দুই রাজ্যে সেনাবাহিনীর ১৪২টি সামরিক চৌকির দখলও নিয়েছে তারা।

Show More

7 Comments

  1. I truly love your blog.. Great colors & theme. Did you make this web
    site yourself? Please reply back as I’m attempting to create my
    own website and want to find out where you got this
    from or just what the theme is named. Kudos!

    Here is my homepage – vpn coupon ucecf

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button