Bangladesh

কোচিং গিলে খাচ্ছে ‘শিক্ষা’, যৌন হয়রানি, ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে প্রশাসনের টনক নড়ে

শাস্তি হয়নি নির্দেশনা অমান্য করে কোচিংয়ে জড়িত শিক্ষকদের :: এক যুগেও বাস্তবায়ন হয়নি নীতিমালা :: মাউশি বলছে লোকবল সঙ্কট
কোচিং-বাণিজ্য রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে এখন শিক্ষার সবচেয়ে বড় বাণিজ্য। হাজার হাজার কোটি টাকা এই বাণিজ্যে লেনদেন হয়। রাজধানীর সাধারণ স্কুল-কলেজে শিক্ষা দূরের কথা সুপ্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে লেখাপড়া মানসম্পন্ন না হওয়ায় অভিভাবকরা কোচিংয়ের দিকে ছোটেন। রাজধানী ঢাকায় পড়ালেখা করেন এমন শিক্ষার্থীর প্রায় শতকরা ৯৯ জনই কোচিংয়ে পড়াশোনা করেন। স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা নিজ প্রতিষ্ঠানের ক্লাসে পড়ানোর বদলে নিজেদের কোচিং সেন্টারে শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে বেশি উৎসাহ দেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্যারালাল হয়ে ওঠা কোচিং সেন্টারগুলোতে অহরহ ঘটছে যৌন হয়রানি, ধর্ষণের মতো অপরাধ ঘটনা, যা নৈতিকতার বদলে সমাজকে কলুষিত করে তুলছে; অভিভাবকদের বিপর্যয়ের মুখে ফেলছে।

মূলত রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশেই কোচিংয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোনার প্রচলন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সমান্তরাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চেয়ে প্রাধান্য বেড়েছে কোচিংয়েরই। শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা ভালো ফলের তাগিদ থেকে কোচিংয়ে অনুভব করলেও শিক্ষকদের কাছে এটি এখন অত্যন্ত লোভনীয় বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। কেউ এই বাণিজ্যে অংশ নিতে না চাইলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় নম্বর কম দিয়ে, মানসিক নির্যাতন করে, বিভিন্ন কলাকৌশল অবলম্বন করে একশ্রেণির শিক্ষকেরা তাদের কাছে পড়তে বাধ্য করছেন। তাদের কাছে জিম্মি হয়ে আছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। যদিও এক যুগ আগেই ২০১২ সালে কোচিং-বাণিজ্য বন্ধে নীতিমালা করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটি কাগজেই সীমাবদ্ধ আছে।

এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর নেহাল আহমেদ বলেন, কোচিং-বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা অনুযায়ী নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট কোচিংয়ে পড়ানোর সুযোগ নেই। কিন্তু পড়ানো হচ্ছে বলে আমরা জানছি। কিন্তু শিক্ষা অধিদপ্তরের কম জনবল থাকায় বিষয়টি মনিটরিং করার সুযোগ কম। বিষয়টি অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক মনিটরিং করতে পারে। তবে এই নীতিমালা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শিক্ষা প্রশাসনের নাকের ডগার ওপর রাজধানী থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রকাশ্যে শিক্ষকরা কোচিং-বাণিজ্য চালিয়ে এলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি মন্ত্রণালয়। আর যাদের দেখভাল করার দায়িত্ব সেই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর নীরব দর্শকের ভূমিকায়। ফলে স্কুলে পড়ানোর পরিবর্তে কাঁচা টাকা কামানোর এই মাধ্যমটিই এখন বেছে নিয়েছেন শিক্ষকেরা। আর এসব কোচিং সেন্টারেই প্রায়ই ঘটছে শিক্ষার্থী নির্যাতন, ছাত্রী ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির মতো নানা ঘটনা। হাতেগোনা কিছু প্রকাশ পেলেও অধিকাংশই থাকছে আড়ালে। এসব ঘটনার প্রায় প্রতিটিতে জড়িত শিক্ষার্থীদের কাছে আদর্শ হওয়ার কথা শিক্ষকরাই। যখনই কোনো ঘটনা প্রকাশ পায় তখন মন্ত্রণালয়, মাউশি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্টরা নড়েচড়ে বসেন, কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় কিছুদিন পর আবার চলে পুরনো রুটিনে। সাম্প্রতিক সময়ে কোচিং সেন্টারে ছাত্রী শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের ঘটনায় ফের জোরেশোরে শুরু হয়েছে সমালোচনা। যার সর্বশেষটি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর দিবা শাখার গণিতের শিক্ষক মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে। ২০১০ সাল থেকে তিনি এখানে পড়াচ্ছেন। পাশাপাশি আজিমপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাটে কোচিং সেন্টার খুলে ছাত্রী পড়াতেন। ভুক্তভোগী ছাত্রীদের অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ‘ভালো সম্পর্ক’ তৈরি করে ওই কোচিংয়েই তাদের যৌন হয়রানি করে আসছিলেন তিনি। বছরের পর বছর ধরে তার এ ধরনের কর্মকাÐ চললেও ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পেত না। গত ৭ ফেব্রুয়ারি কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এক অভিভাবক। এ বিষয়টি নিয়ে একটি সংবাদপত্র অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করলে শোরগোল পড়ে যায়। এরপর মুরাদ হোসেন সরকারকে আজিমপুরের ক্যাম্পাসের দিবা শাখা থেকে প্রত্যাহার করে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। কলেজের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে ভিকারুননিসার ছাত্রীরা। অভিভাবকরা জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি তাকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানান। এই প্রেক্ষাপটে সোমবার রাতে কলেজের পরিচালনা কমিটির সভায় মুরাদ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সেদিন সন্ধ্যায় এক শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে লালবাগ থানায় মামলা করেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কলাবাগানের বাসা থেকে মুরাদকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ কর্মকর্তা মহিদ উদ্দিন বলেন, “বাদীর মেয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। তার মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় মুরাদের কোচিংয়ে পড়ত। প্রায় সময় মুরাদ তার মেয়েসহ তার সহপাঠীদের কুরুচিপূর্ণ কৌতুক শোনাত। ‘বাদীর মেয়ে স্কুলে নাচ করত। ওই নাচের ভিডিও মুরাদ ঘুমানোর আগে দেখত বলে ওই শিক্ষার্থীকে প্রায়ই বলত।’

এর আগে এই প্রতিষ্ঠানের বসুন্ধরা শাখার নবম শ্রেণির দিবা শাখার এক ছাত্রী ঐ শাখার ইংরেজি শিক্ষক আবু সুফিয়ানের কাছে প্রাইভেট পড়ত। প্রাইভেট পড়ানোর ফাঁকে ঐ শিক্ষক বিভিন্ন সময় ছাত্রীকে অশালীন এসএমএস পাঠাতেন। যেগুলো খুবই আপত্তিকর ও সম্মানহানিকর। বিষয়টি নিয়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেন ছাত্রীর অভিভাবক। বিষয়টি প্রমাণ পাওয়ার পর ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে আবু সুফিয়ান নামে ইংরেজির ঐ শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছিল।

তবে ভিকারুননিসার আলোচিত ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১১ সালে। ওই স্কুলের শিক্ষক পরিমল জয়ধর কোচিংয়ের সময় ছাত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেন ২০১১ সালের ২৮ মে। ঐ ঘটনায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ভিকারুননিসা নূন স্কুলের বসুন্ধরা শাখার ঐ শিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদÐের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। সে সময়ের ভিডিওচিত্র মোবাইলে ধারণ করা হয়েছিল। অল্প কিছুদিন পর সেই ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে আবারও ধর্ষণ করেন।

এরকম ঘটনা শুধু ভিকারুননিসায় নয়, রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই এসব ঘটনা ঘটছে। স¤প্রতি চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁওয়ের একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকের ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত¡া হয়ে পড়ে এক ছাত্রী। বিষয়টি পরিবারের লোকজন জেনে ফেলায় লজ্জায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় মেয়েটি। অবশেষে হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যায় মেয়েটি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক হামিদ মোস্তফা জিসান বর্তমানে কারাগারে আছেন।

শাহাদাৎ ঢালীর মালিকানাধীন সেইফ কোচিং সেন্টারে প্রায় ছাত্রী নির্যাতনের অভিযোগ করেন আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক-অভিভাবকগণ।
গত আগস্টে গাজীপুর মহানগরে কোচিং সেন্টারে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় ওই কোচিং সেন্টারের দোলোয়ার হোসেন নামে এক শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার মুঠোফোন থেকে ধর্ষণের ভিডিও জব্দ করা হয়।

অভিভাবকরা বলছেন, সামনে আসা এমন তিন-চারটি ঘটনা প্রকাশ পাচ্ছে। এর বাইরে কত নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে, যা শিক্ষার্থীরা নানা কারণে মুখ বুজে সহ্য করছে। এগুলো হিসাবের বাইরেই থেকে যাচ্ছে। তারা বলছেন, এই সব প্রাইভেট কোচিং অনৈতিক শিক্ষকদের যৌন হয়রানির সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের বাধ্য করে কোচিংয়ে নেওয়া হয়। আর কোচিংয়ে নিয়েই এই সর্বনাশ করে।

অভিভাবক ঐক্য ফোরামের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল কবির দুলু বলেন, শ্রেণিকক্ষে পাঠদান হচ্ছে না। আবার এক ক্লাসরুমে ৬০-৭০ জন শিক্ষার্থী বসছে। পেছনে যারা থাকছে তারা কিছুই বুঝছে না। ফলে বাধ্য হয়ে অভিভাবকরা কোচিংয়ে পাঠাচ্ছেন। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমাতে হবে। প্রতিটি ক্লাসে ৩০ জনের বেশি শিক্ষার্থী রাখা যাবে না। শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে হবে, ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষকের মান বাড়াতে হবে।
নীতিমালায় যা ছিল : অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা কোচিং-বাণিজ্যে যুক্ত শিক্ষকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন; যা পরিবারের ওপর বাড়তি আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছে এবং এ ব্যয় মেটাতে অভিভাবকরা হিমশিম খাচ্ছেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকার ২০১২ সালে কোচিং-বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা জারি করে।

ওই নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে কোচিং করাতে পারবেন না। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি নিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ১০ জন শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে ছাত্রছাত্রীর তালিকা, রোল, নাম ও শ্রেণি উল্লেখ করে জানাতে হবে।
নীতিমালায় আরো বলা হয়, কোনো শিক্ষক বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে ওঠা কোনো কোচিং সেন্টারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত হতে পারবেন না বা নিজে কোনো কোচিং সেন্টারের মালিক হতে পারবেন না বা কোচিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না। কোনো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কোচিং-এ উৎসাহিত, উদ্বুদ্ধ বা বাধ্য করতে পারবেন না।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, অভিভাবকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করতে পারবেন। এক্ষেত্রে মহানগরী এলাকার প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মাসে তিনশ’ টাকা, জেলা পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দুইশ’ টাকা এবং উপজেলা ও অন্যান্য এলাকার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দেড়শ’ টাকা নেওয়া যাবে। তবে প্রতিষ্ঠান-প্রধান ইচ্ছা করলে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের এই অতিরিক্ত কোচিংয়ের টাকা কমাতে বা মওকুফ করতে পারবেন বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী অতিরিক্ত ক্লাসের ক্ষেত্রে একটি বিষয়ে মাসে কমপক্ষে ১২টি ক্লাস নিতে হবে, প্রতি ক্লাসে সর্বোচ্চ ৪০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারবে। অতিরিক্ত ক্লাস থেকে আয়ের টাকার ১০ শতাংশ বিদ্যালয়ের পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সহায়তা কর্মচারীদের ব্যয় বাবদ রাখা হবে। বাকি টাকা শিক্ষকেরা পাবেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ এই অর্থ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্যদ কোচিং বাণিজ্যরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে। কোচিং-বাণিজ্য বন্ধে তদারকি করতে মেট্রোপলিটন ও বিভাগীয় এলাকার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে সভাপতি করে নয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হবে। এছাড়া জেলার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে এবং উপজেলার ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি করে আট সদস্যের কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে।

শাস্তি: এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষক কোচিং- বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তার এমপিও স্থগিত, বাতিল, বেতন-ভাতা স্থগিত, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, বেতন একধাপ অবনমিতকরণ, সাময়িক বরখাস্ত, চূড়ান্ত বরখাস্ত ইত্যাদি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওবিহীন কোনো শিক্ষক কোচিং-বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও একই ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমপিওবিহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের বিরুদ্ধেও একই ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়, কোচিং-বাণিজ্যে জড়িত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্যদ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সরকার পরিচালনা পর্যদ ভেঙে দেওয়াসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি, স্বীকৃতি ও অধিভুক্তি বাতিল করতে পারবে। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক কোচিং- বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী বিধিমালার অধীনে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এক যুগ আগে কোচিং বন্ধে নীতিমালা হলেও এখন পর্যন্ত এর বাস্তবায়ন করেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর ও প্রতিষ্ঠান। মাঠ পর্যায়ে এই নীতিমালা বাস্তবায়নের হার প্রায় শূন্যভাগ। নেই কোনো মনিটরিং কার্যক্রমও। এতে খুশি কোচিং ও প্রাইভেট টিউশনিতে সুবিধাভোগী শিক্ষকেরা। আর সর্বনাশ ঘটছে ছাত্রীদের।

কোচিং-বাণিজ্য বন্ধে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, কোচিং-বাণিজ্য নীতিমালা বাস্তবায়নের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে নতুন কারিকুলামে কোচিং করার সুযোগ কমে গেছে। এছাড়া যৌন নির্যাতন নিয়ে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
toto gacor Toto Gacor bacan4d slot toto casino slot slot gacor bacantoto totogacorslot Toto gacor bacan4d login slotgacor bacan4d bacan4d toto Slot Gacor toto 4d bacan4d toto slot bacan4d slot gacor