গাজায় জুটছে মাথাপিছু মাত্র ৩ লিটার পানি
খাওয়া, গোসল এবং অন্যান্য প্রয়োজন মেটানোর জন্য একজন মানুষের প্রতিদিন গড়ে ১০০ লিটার পানি দরকার হয়।
হামাসের হামলাকে কেন্দ্র করে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে গাজা ভূখণ্ডকে সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল; বন্ধ করে দিয়েছে জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় রসদের সরবরাহ।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির পাশাপাশি পানির সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে দেশটি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, জরুরি প্রয়োজনে মেটানোর জন্য পর্যাপ্ত পানিও পাচ্ছে না গাজাবাসী।
বিবিসি জানিয়েছে, খাওয়া, গোসল এবং অন্যান্য প্রয়োজন মেটানোর জন্য একজন মানুষের প্রতিদিন গড়ে ১০০ লিটার পানি দরকার হয়। কিন্তু গাজার বাসিন্দারা আগে থেকেই তার কম পেতেন। গত ৭ অক্টোবর নতুন করে সংঘাত শুরুর আগে জনপ্রতি তারা পেতেন গড়ে ৮৪ লিটার পানি। আর এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, সেখানে প্রতিদিন একজন ব্যক্তি পাচ্ছেন গড়ে মাত্র ৩ লিটার।
ফলে রান্না, ধোয়ামোছা কিংবা গোসল তো দূরের কথা, ফিলিস্তিনের একজন ব্যক্তি তার খাবার পানিটুকুও পুরোপুরি পাচ্ছে না।
ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৩ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিদ্যুৎ-জ্বালানি থেকে শুরু করে খাবার ও চিকিৎসা সংকটের পরিস্থিতিতে সেখানে তীব্র মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতির আরও অবনতি ঠেকাতে সেখানে সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ।
ফিলিস্তিনের শরণার্থীদের জন্য কাজ করে আসা ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র প্রধান ফিলিপ্পে লাজারিনি গাজা সংকটে বিশ্বকে মানবিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবিসিকে তিনি বলেন, “চলমান যুদ্ধে গাজার জন্য সাহায্য নিরবচ্ছিন্ন ও অর্থবহ হওয়া জরুরি। আমরা ইসরায়েল ও এই সংঘাতের সঙ্গে জড়িত সকলকে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানাচ্ছি।”
সংকটের পরিস্থিতি বর্ণনা করে তিনি বলেন, “নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর সংকটে পড়েছে ফিলিস্তিনের ২২ লাখ মানুষ, যাদের অর্ধেকই বাস্তুচ্যুত।
“পানি নেই; ৪ হাজার মানুষের জন্য চারটি টয়লেট। মেঝেতে বা মাটিতেই তারা ঘুমাচ্ছে। আমরা খাদের কিনারে চলে এসেছি। পানি না থাকলে গাজায় সংকট আরও বাড়বে। আমাদের চোখের সামনে বিপর্যয় ঘটছে, সেটা আরও তীব্র হবে।”
অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার আগে প্রতিদিন ত্রাণ সাহায্য নিয়ে ৫০০ ট্রাক প্রবেশ করত গাজায়। জ্বালানিসহ অন্যান্য ত্রাণ পৌঁছে দিত ট্রাকগুলো। এখন মিশরও গাজার মধ্যে রাফা সীমান্ত ক্রসিংয়ে ত্রাণের ট্রাকগুলো আটকে আছে।