Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
USA

ছেলে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার রায় কি বাইডেনের ভোটের মাঠে প্রভাব ফেলবে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেন আগ্নেয়াস্ত্র কেনার সময় মাদকাসক্তি নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্যের একটি আদালত আজ মঙ্গলবার এ–বিষয়ক ফৌজদারি অপরাধের তিনটি অভিযোগেই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন কোনো প্রেসিডেন্টের ছেলে হিসেবে ৫৪ বছর বয়সী হান্টার বাইডেনই প্রথম ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেন। তাঁর সর্বোচ্চ ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথমবার এই অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁর সাজা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা কম।

বাইডেনপুত্রের বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ, ২০১৮ সালে একটি পয়েন্ট ৩৮ ক্যালিভারের রিভলবার কিনেছিলেন হান্টার বাইডেন। সেই অস্ত্র কেনার সময় নিজের মাদকাসক্তির কথা গোপন করেছিলেন তিনি। এ ঘটনায় হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ এনেছেন সরকারি কৌঁসুলিরা। প্রথম অভিযোগ, আগ্নেয়াস্ত্র কেনার সময় মিথ্যা তথ্য দেন হান্টার বাইডেন। দ্বিতীয় অভিযোগ, অস্ত্র বিক্রেতার নথিপত্রেও মিথ্যা তথ্য থাকার বন্দোবস্ত করেন তিনি। আর তৃতীয় অভিযোগ হলো, হান্টার বাইডেন অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র কাছে রেখেছিলেন।

আগ্নেয়াস্ত্র কেনার সময় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য হান্টার বাইডেনের সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। অস্ত্রবিক্রেতার নথিতে মিথ্যা তথ্য সন্নিবেশের অপরাধে সর্বোচ্চ ৫ বছর এবং মাদকাসক্ত অবস্থায় অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখায় তাঁর সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, দেশটির নাগরিকদের অস্ত্র কেনার অধিকার রয়েছে। কিন্তু অস্ত্র কেনার সময় একজন ব্যক্তিকে আবেদনপত্রে অবশ্যই এটা উল্লেখ করতে হবে যে, তিনি মাদকে আসক্ত কি না।

মাদকাসক্তি ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে হান্টার বাইডেনকে। দীর্ঘদিন ধরে এসব বিষয় নিয়ে তাঁকে ভুগতেও হয়েছে। তিনি ২০১৮ সালে কোকেনে আসক্তির কথা স্বীকার করেন। ২০১৫ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান হান্টারের বড় ভাই বিউ বাইডেন। হান্টার বাইডেন তাঁর আত্মজীবনী ‘বিউটিফুল থিংস’-এ লিখেছেন, ভাইয়ের মৃত্যুর পর তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। ২০১৯ সালে মাদক ছাড়েন তিনি।

এই মামলায় এক সপ্তাহ ধরে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন ১২ সদস্যের বিচারক প্যানেল। আজ প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে রায় ঘোষণা করা হয়। কবে নাগাদ হান্টার বাইডেনের সাজা ঘোষণা হতে পারে, সে বিষয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করেননি আদালত। তবে রায় ঘোষণার পর একজন বিচারক বলেছেন, সাধারত ১২০ দিনের মধ্যে সাজা ঘোষণা করা হয়ে থাকে।

আদালতের রায় ঘোষণার পর একটি বিবৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এই মামলায় যে রায় ও সাজা হয় তা তিনি মেনে নেবেন। বিচারিক প্রক্রিয়ার প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা অবিচল থাকবে। হান্টার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা বিবেচনা করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

বিবৃতিতে জো বাইডেন বলেন, ‘গত সপ্তাহে আমি যেমনটি বলেছি, আমি প্রেসিডেন্ট, কিন্তু একই সঙ্গে আমি একজন পিতাও। জিল ও আমি আমাদের সন্তানকে ভালোবাসি। সে (হান্টার) এখন যেমন মানুষ হয়ে উঠেছেন, সে জন্য আমরা খুবই গর্বিত।’

বাইডেন আরও বলেন, ‘আমি ও জিল সব সময় হান্টারের পাশে থাকব এবং আমাদের পরিবারের বাকি সবাইও ভালোবাসা ও সমর্থন নিয়ে তাঁর পাশে থাকবে। কখনোই এর কোনো পরিবর্তন হবে না।’

এই রায় হয়ে উঠতে পারে রাজনৈতিক হাতিয়ার

হান্টার বাইডেনের ফৌজাদির অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার এই রায় আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর বাবা জো বাইডেনের প্রতিপক্ষ শিবিরের প্রচারণার হাতিয়ার হয়ে উঠবে। রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পও সম্প্রতি ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। শারীরিক সম্পর্কের কথা চেপে যাওয়ার জন্য এক পর্নো তারকাকে অর্থ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেই তথ্য ব্যবসায়িক লেনদেনের নথিতে উল্লেখ না করার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি। আগামী ১১ জুলাই তাঁর বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করবেন আদালত।

নির্বাচনের মাঠে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আদালতের রায়কে ডেমোক্র্যাট শিবির কাজে লাগাতে চাইলে প্রতিপক্ষ শিবিরও পাল্টায় হান্টার বাইডেনের প্রসঙ্গ নিয়ে আসার সুযোগ পাবে। তাছাড়া ছেলের সাজা ঘোষণা হলে তা বাইডেনের মনোযোগ নির্বাচন থেকে অন্যদিকে সরিয়ে নিতে পারে।

তবে বিবিসির উত্তর আমেরিকা প্রতিনিধি অ্যান্থনি জুরচার মনে করেন, নভেম্বরের নির্বাচনে আমেরিকানরা কাকে ভোট দেবেন, সে বিষয়ের ওপর হান্টার বাইডেনের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার রায় খুব একটা প্রভাব ফেলবে না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button