Bangladesh

তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছে জুন মাসে

মার্কিন ডলার

সদ্য বিদায়ী জুন মাসে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এই অর্থ প্রায় তিন বছরের মধ্যে কোনো একটি মাসে দেশে আসা সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয়। এর আগে ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলারের সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেখা গেছে, গত বছরের একই মাসে অর্থাৎ জুনে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৮৩ কোটি ৭২ লাখ ডলার। সে হিসাবে প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। সাম্প্রতিক সময়ে ২০২০ সালের জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল। তবে তখন করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পরিবহন বন্ধ থাকায় হুন্ডি বন্ধ ছিল। ফলে বৈধ পথে আসা প্রবাসী আয়ের পরিমাণ বেড়েছিল।  

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষিত দামের চেয়ে বেশি দামে প্রবাসী আয় কেনা বন্ধ করে দিয়েছিল ব্যাংকগুলো। তবে সংকটের কারণে ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর দেনা শোধের চাপের কারণে বিদায়ী মাসে তদারকি অনেকটা শিথিল ছিল। ফলে কিছু ব্যাংক নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে প্রবাসী আয়ের ডলার কেনে। এতে প্রবাসী আয় বেড়েছে। তবে এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে কিছু ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত প্রবাসীরা প্রায় ২০২ কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন। এর পরের কয়েক দিনে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলারে। গত মে মাসে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৬৯ কোটি ১৬ লাখ ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত বছরের জুনে প্রায় ১৮৪ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল। ২০২১ সালের জুনে এসেছিল ১৯৪ কোটি ডলার। ২০১৯ ও ২০২০ সালের জুনে এসেছিল যথাক্রমে ১৩৬ কোটি ও ১৮৩ কোটি ডলার।

প্রবাসী আয় ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত ব্যাংক খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখেই মূলত প্রবাসীরা দেশে থাকা তাঁদের পরিবার-পরিজনের কাছে বাড়তি অর্থ পাঠিয়েছেন। সাধারণত প্রতি ঈদের আগে দেশে অতিরিক্ত প্রবাসী আয় আসে। তবে গত এপ্রিলে উদ্‌যাপিত ঈদুল ফিতরের আগে প্রবাসী আয় খুব বেশি বাড়েনি। সেই তুলনায় ঈদুল আজহার সময় দেশে প্রবাসী আয় বেশি এসেছে।

এর কারণ হিসেবে ব্যাংক খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকেই দেশে কোরবানি দিয়ে থাকেন, তাই তাঁরা বাড়তি অর্থ পাঠিয়েছেন। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে বিভিন্ন সংস্থা কোরবানির জন্যও বাংলাদেশে অর্থ পাঠায়।
প্রবাসী আয় দেশে আনার দিক থেকে বরাবরের মতো এবারও শীর্ষে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে। তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এনেছে বেসরকারি খাতের প্রিমিয়ার ব্যাংক।

দেশে দীর্ঘ সময় ধরে চলা ডলার-সংকট এখনো চলছে। তবে প্রবাসী আয় বৈধ পথে দেশে আনার জন্য চেষ্টা জোরদার করা হয়েছে। প্রবাসী আয়ে এখন ব্যাংকগুলো ডলারপ্রতি ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা দাম দিচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র সরোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ডলারের সংকট কমে আসছে। একদিকে প্রবাসী আয় ভালো পরিমাণে আসছে, অন্যদিকে ব্যাংকগুলোতে ডলারের মজুতও বাড়ছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button