পশুখাদ্যও শেষ, জীবন বাঁচাতে এখন বন্য লতাপাতা খাচ্ছেন গাজার মানুষ!
দীর্ঘ পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরা চলা ইসরায়েলি নৃশংস আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের গাজায় চরম মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলি অবরোধের ফলে ওই উপত্যকায় খাদ্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এতদিন পশুখাদ্য খেয়ে জীবন নির্বাহ করলেও এখন তাও ফুরিয়ে গেছে। ফলে বর্তমানে বন্য লতাপাতা খেয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করছেন গাজার মানুষ।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদেনে উঠে এসেছে গাজাবাসীর দুর্বিসহ জীবনের এই গল্প। জানা গেছে, চলতি মাসের (মার্চ) শুরু থেকে গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা হাজেম সাঈদ আল-নাইজির পরিবার পশুপাখির খাবার খেয়ে কোনওমতো জীবন বাঁচিয়ে রাখছিল। কিন্তু দুই সপ্তাহ পর সেই খাবারও শেষ হয়ে গেছে। এখন তার পরিবার বন্য লতাপাতা খেয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম করছে।
গণমাধ্যমকে হাজেম সাঈদ বলেছেন, “দুর্ভাগ্যবশত পশুপাখির খাবারও শেষ হয়ে গেছে। বাজারে এখন আর এটি পাওয়া যাচ্ছে না।”
জানা গেছে, গাজায় খাদ্য সংকট এতটাই তীব্র হয়েছে যে, পশুপাখি যেসব খাবার খায় সেসব খাবার খাওয়া শুরু করেন মানুষ। এছাড়া পরিবহন কাজে ব্যবহারের জন্য লালন-পালন করা ঘোড়াও জবাই করে খান তারা। এখন এই খাবারও শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হওয়া বন্য লতাপাতা খাচ্ছেন তারা।
হাজেম সাঈদ গত নভেম্বরে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে চলে আসেন। সঙ্গে নিয়ে আসেন তার ৬ বছর বয়সী ছেলেকে।
তার স্ত্রী এবং অন্যান্য সন্তানরা উত্তরাঞ্চলেই রয়ে যায়। যদিও তার স্ত্রী এদিকে আসার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি সেনাদের বাধার মুখে আসতে পারেননি। এছাড়া রক্তজনিত সমস্যা থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় আরেকবার এই কঠিন পথ পাড়ি দিতে চাননি তিনি।
এরপর থেকে স্ত্রী ও অন্যান্য সন্তানদের কাছ থেকে আলাদাই থাকছেন হাজেম সাঈদ। খান ইউনিসে নিজ ছেলে ও অন্যান্য এতিম শিশুদের দেখাশুনা করছেন তিনি।
সাঈদ বলেছেন, “আমার স্ত্রী আর সন্তানরা পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। বন্য লতাপাতাও শেষ হয়ে আসছে। এগুলোও হয়ত এক সময় ফুরিয়ে যাবে।”