পূর্ব পশ্চিম চেনে না ঢাকা
৪০০ বছরেরও বেশি সময় আগে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল দেশের বর্তমান রাজধানী ঢাকা। তখনকার যোগাযোগব্যবস্থা ছিল মূলত নৌপথকেন্দ্রিক। তাই নদীকে কেন্দ্র করেই ঢাকা শহরের গোড়াপত্তনের শুরু। কালের পরিক্রমায় এ শহর বিস্তৃত হয়েছে দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে গুলশান, বনানী, বারিধারা, নিকুঞ্জ, উত্তরা হয়ে টঙ্গী-গাজীপুর পর্যন্ত। কিন্তু পূর্ব-পশ্চিম দিকে বিস্তৃতি তেমনটা হয়নি। যাকে অসম সম্প্রসারণ বলছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। তারা মনে করেন, সম্প্রসারণ কোন দিকে কতটুকু হবে তার সীমারেখা না টানা এবং সুপরিকল্পিত শহর সম্প্রসারণ ব্যবস্থাপনা না থাকায় ঢাকার সুষম বিস্তৃতি হয়নি। এ ছাড়াও এই শহরের সুষম সম্প্রসারণ না হওয়ার পেছনে রয়েছে বন্যাপ্রবণ ও
কৃষিভিত্তিক অঞ্চল, মাটির গুণগত মান এবং যোগাযোগব্যবস্থার অপ্রতুলতাসহ আরও বেশ কয়েকটি কারণ। আর এর ফল হিসেবে একদিকে উন্নয়ন হলেও আরেক দিক অবহেলার শিকার হয়েছে। উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রশস্ত সড়ক যোগাযোগের যেমন কানেক্টিভিটি রয়েছে তেমনিভাবে পূর্ব থেকে পশ্চিমে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি। যে কারণে পূর্ব-পশ্চিম অংশের অর্থনৈতিক কর্মকা-ের পালে লাগেনি তেমন হাওয়া।
ইতিহাস বলছে, ১৬১০ সালে বাংলার তৎকালীন সুবেদার ইসলাম খান ঢাকায় তার রাজধানী স্থাপন করেন। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ বিভক্তির পর ঢাকাকে পূর্ববাংলার প্রাদেশিক রাজধানী করা হয়। রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কারণে ঢাকা শহরের জনসংখ্যা ও অবকাঠামো সম্প্রসারিত হতে থাকে।
ঢাকা পৌরসভা গঠিত হয় ১৮৬৪ সালে। পরে ১৯৭৮ সালে যা সিটি করপোরেশনে রূপ নেয়। ঢাকার সীমানা হলো দক্ষিণে বুড়িগঙ্গা, উত্তরে তুরাগ, পূর্বে শীতলক্ষ্যা ও পশ্চিমে বুড়িগঙ্গা। ঢাকা শহর প্রথম থেকেই বুড়িগঙ্গা নদীর তীর থেকে ক্রমেই উত্তর দিকে সম্প্রসারণ হতে থাকে। ১৯৫৬ সালে এই শহরের উন্নয়ন দেখভালের জন্য ঢাকা ইম্প্র“ভমেন্ট ট্রাস্ট (ডিআইটি) গঠিত হয় এবং ১৯৫৯ সালে ঢাকার প্রথম মাস্টারপ্ল্যান বা মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। যে মহাপরিকল্পনার আওতায় ছিল ২২০ বর্গমাইল এলাকা, যা পরে ৩২০ বর্গমাইলে উন্নীত হয়। ১৯৮৭ সালে ডিআইটিকে রাজধানী উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষে (রাজউক) রূপান্তর করা হয়। রাজউক ২০১০ সালে ঢাকার উন্নয়নে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) প্রণয়ন করে। ড্যাপের আওতাধীন এলাকা ৫৯০ বর্গমাইল।
ঢাকা শহর সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে ১৯৬১ সালে তৎকালীন ডিআইটি গুলশান আবাসিক এলাকা গড়ে তোলে। এরপর পর্যায়ক্রমে গড়ে ওঠে বনানী, বারিধারা, নিকেতন, নিকুঞ্জ, উত্তরা ও পূর্বাচল আবাসিক শহর। একই সঙ্গে এসব এলাকার বাসিন্দাদের নাগরিক সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি বিবেচনা করে গড়ে উঠতে থাকে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতালসহ নানা প্রতিষ্ঠান। যার প্রায় সব স্থাপনাই মূল ঢাকার উত্তর অংশে গড়ে ওঠে। এ ছাড়া বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ পাশে কেরানীগঞ্জে গড়ে তোলা হয় ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্প। বর্তমানে সেখানে রাজউকের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রকল্প শেখ হাসিনা স্মার্ট সিটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকা শহর উত্তর-দক্ষিণে যেমন বেশি সম্প্রসারণ হয়েছে, তেমনিভাবে এ অংশের বাসিন্দাদের চলাচলের সুবিধার্থে একে একে নির্মাণ হয়েছে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার, তেজগাঁও ওভারপাস, হানিফ ফ্লাইওভার, হাতিরঝিল চক্রাকার সড়ক, উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেল এবং বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে। এ ছাড়া উত্তর-পূর্বদিকে হয়েছে ৩০০ ফুট পূর্বাচল মহাসড়ক এবং মাদানী অ্যাভিনিউ সড়ক। এখন পূর্বাচল ও মাদানী অ্যাভিনিউকে কেন্দ্র করে এমআরটি লেন নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। আর পশ্চিম দিকে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে মিরপুর বেড়িবাঁধ ঘিরে একটি রিংরোড নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এসব প্রকল্প রাজউক ও সিটি করপোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বাস্তবায়ন করছে। অর্থাৎ সরকারের গৃহীত বেশিরভাগ উন্নয়ন প্রকল্পই ঢাকার উত্তর-দক্ষিণ এলাকাকে কেন্দ্র করে বাস্তবায়ন হয়েছে ও হচ্ছে।
রাজধানী ঢাকার সম্প্রসারণ নিয়ে কথা হয় রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঢাকা মূলত বুড়িগঙ্গা নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। তখন মানুষ ওয়াটারওয়েকে (নৌপথ) ব্যবহার করত। সে কারণে নদীকে কেন্দ্র করেই মূল শহরের গোড়াপত্তন হয়। কালের পরিক্রমায় অবকাঠামোগুলো উত্তর দিকে সম্প্রসারিত হতে থাকে। নদীর ওপারে কেরানীগঞ্জের জিনজিরা। সেখানে কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়ন তেমনটা হয়নি। কারণ নদী বড় বাধা হিসেবে কাজ করেছে। নদীর ওপারে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হলে একটি বড় সেতু প্রয়োজন ছিল আর সেতুর খরচ একটু বেশি। সে কারণে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে মানুষের আগ্রহ ছিল যেখানে কম খরচে বিনিয়োগ করা যায় সেখানে। তখন থেকে এ শহর উত্তর দিকে যেতে শুরু করে।’
ঢাকা উত্তর-দক্ষিণে সম্প্রসারিত হওয়ার পেছনে আরও কয়েকটি কারণ রয়েছে বলে মনে করেন এ নগর পরিকল্পনাবিদ। তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা পার্ক, ধানম-ি আবাসিক এলাকাসহ অন্যান্য অবকাঠামো তৈরি হয় ঢাকার মূল শহরে। যখন কোনো একটি স্থাপনা হয় তাকে কেন্দ্র করে মানুষের বসবাসের জায়গা তৈরি হয়। মানুষ বসবাসের জায়গা তৈরি করে যেখান থেকে অল্প সময়ে বা দ্রুত তার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। মানুষ দেখল উত্তর দিকে যেহেতু নদী অনেক দূরে, সেখানে অবকাঠামোগত উন্নয়ন খরচও কম, তাই শহরের বিস্তৃতি দক্ষিণ থেকে উত্তরে চলে যায়। তবে এখন বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা ও পদ্মা নদীর ওপর সেতু হয়েছে। এ কারণে নদীর ওপারেও উন্নয়নকাজ বাড়ছে।’
আশরাফুল ইসলাম আরও বলেন, ‘পূর্ব-পশ্চিম দিকে ঢাকার বিস্তৃতি ও উন্নয়ন তেমন হয়নি। এর মূল কারণ হচ্ছে পশ্চিম দিকে যে জায়গা সেটা হলো ঢাকার লো-ল্যান্ড (নিম্নভূমি)। ওই জায়গা মূলত কৃষি-অধ্যুষিত ছিল। ওই এলাকার বেশিরভাগই বন্যাপ্রবণ এলাকা। স্বাভাবিকভাবেই বন্যাপ্রবণ এলাকায় কৃষিভিত্তিক কার্যক্রম বেশি হবে। সেখানে কৃষিভিত্তিক আয় ছাড়া অন্য কোনো অর্থনৈতিক আয় আসে না। আবার পূর্ব দিকের মাটি অবকাঠামোর জন্য উপযুক্ত নয়। সেটিও বন্যাপ্রবণ এলাকা। এজন্য সরকার পূর্ব-পশ্চিমে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখায়নি।’
পূর্বাচল ৩০০ ফুট সড়ক এবং ১০০ ফুট মাদানী অ্যাভিনিউ সড়ক নির্মাণ করায় পূর্ব দিকের সঙ্গে যোগাযোগের বড় সংযোগ তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ বলেন, ‘এর ফলে মানুষও পূর্বমুখী হয়েছে। এখন পূর্ব দিকে এমআরটি লেনসহ অন্যান্য উন্নয়নকাজও হচ্ছে। এই এলাকা ভুলতা পর্যন্ত চলে যাচ্ছে। তবে ওই এলাকার মূল চ্যালেঞ্জ হলো সেখানে যদি বাড়িঘর তৈরি করতে চায় তাহলে হাইড্রোলজিক্যালি অ্যানালাইসিস (ভূতাত্ত্বিক গবেষণা) হলো সেখানে অবকাঠামো নেগেটিভ হওয়া উচিত। কারণ সেখানকার মাটির লেয়ার অতি দুর্বল। সেখানে মানুষ ফাউন্ডেশন নিয়ে কাজ করলেও আমাদের আশঙ্কা ১০০ বছর পরপর বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে। আর ভূমিকম্প হলে মাটির লেয়ার সরে যেতে পারে। তখন বহুতল ভবন ধসে পড়তে পারে। তাই সেখানে বাড়ি নির্মাণ করতে হলে ১০০ থেকে ১৫০ ফুট পর্যন্ত পাইলিং করতে হবে।’
ঢাকা শহরের সুষম বিস্তৃতির ওপর গুরুত্বারোপ করেন আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘যদি ঢাকা শহরকে বিস্তৃত করতে হয় তাহলে তা করতে হবে সুষমভাবে। এটা শুধু উত্তর-দক্ষিণ না হয়ে পূর্ব-পশ্চিম দিকেও হওয়া উচিত। ডেভেলপমেন্ট (উন্নয়ন) হওয়া উচিত গাইডেড ডেভেলপমেন্ট (পরিকল্পিত উন্নয়ন)। কোনো এলাকায় মাটির মান অনুযায়ী ভবনের উচ্চতা কী নির্ধারিত হবে, কী ধরনের ইকোনমিক অ্যাকটিভিটিজ (অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড) হবে, তার সয়েল কন্ডিশন (মাটির মান) থেকে শুরু করে যোগাযোগব্যবস্থা এবং ওই এলাকার লোকাল ক্যারেক্টরের (আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য) ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। কিন্তু তা না করে যদি উত্তর-দক্ষিণের মতো পূর্ব-পশ্চিমে বেশি বিস্তৃত করা হয়, অপরিকল্পিতভাবে করা হয়, তাহলে সমস্যা তৈরি হবে। এসব এলাকায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন হতে হবে গ্রামীণ প্রকৃতির সঙ্গে মিল রেখে।’
সাম্প্রতিক সময়ে পূর্ব দিকে যে পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে পশ্চিম দিকে তা হচ্ছে না উল্লেখ করে আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘এর মূল কারণ হচ্ছে বধ্যভূমির পাশ দিয়ে যে মহাসড়ক রয়েছে, বসিলা ব্রিজ আছে, সেটি পশ্চিম দিকের একমাত্র কানেকশন (সংযোগ)। অন্য কোনো অলটারনেটিভ (বিকল্প) কানেকশন না থাকায় সবসময় যানজট লেগে থাকে। সে কারণে এটি ঢাকার এত কাছে হওয়া সত্ত্বেও মানুষ সেখানে যাচ্ছে না। কাছাকাছি এলাকায় না গিয়ে উত্তরা, টঙ্গী, গাজীপুরের দিকে যাচ্ছে।’
ঢাকার পূর্ব দিকে মতিঝিলের খুবই কাছের এলাকা আমুলিয়ার বাসিন্দা আতিকুর রহমান। শহরের সুষম সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন হয়নি অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ঢাকার প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলের খুব কাছে অবস্থান হলেও আমাদের ৭০ ও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে নানা সমস্যা বিদ্যমান। সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্ত হলেও এখনো শহরের ছোঁয়া লাগেনি। রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল গড়ে ওঠেনি। আমাদের এলাকা সিটি করপোরেশনের আওতায় এসেছে মাত্র পাঁচ বছর আগে। অথচ আমাদের চেয়ে উত্তরা অনেক দূরে হলেও সেখানে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে।’
একই ধরনের ভাষ্য ঢাকার পশ্চিম দিকের মোহাম্মদপুরের বসিলার বাসিন্দা রোকসানা আলমের। তিনি বলেন, ‘আমাদের এলাকা কিছুটা নিচু। যোগাযোগব্যবস্থা ভালো নয়। বৃষ্টি হলে পানি আটকে যায়। তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। তবে বর্তমান মেয়রের আমলে এই এলাকা ঘিরে চার লেনের সড়ক নির্মাণসহ বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী দিনে এখানেও ঢাকার অন্যান্য এলাকার মতো উন্নয়ন হবে বলে বিশ্বাস করি।’
এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবান ও রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের অধ্যাপক এবং ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘ঢাকা শহর উত্তর-দক্ষিণে সম্প্রসারণ হয়েছে জিওগ্রাফি (ভৌগোলিক) ও মাটির মানের ওপর ভিত্তি করে। ঢাকার পূর্ব-পশ্চিম দিকের মাটির যে মান তা নগর সম্প্রসারণের জন্য উপযোগী নয়। এ কারণে উত্তর দিকে টঙ্গী, গাজীপুর ও সাভারের দিকে সম্প্রসারণটা বেশি হয়েছে। এটা মূলত জিওগ্রাফিক্যাল কারণে হয়েছে। পূর্ব-পশ্চিমের কথা যদি বলা হয়, তাহলে দেখা যাবে পূর্ব দিকে বেশিরভাগই বন্যাপ্রবণ অঞ্চল ছিল। আর পশ্চিম দিকে বুড়িগঙ্গা ছিল। এ কারণে পূর্ব-পশ্চিম দিকে শহর সম্প্রসারণ তেমন হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নগর পরিকল্পনা নিয়ে নিয়ন্ত্রণ থাকা দরকার। কোথায় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, কোথায় সম্প্রসারণ করতে হবে ও গ্রোথ ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো খুবই সুচিন্তিত হওয়া উচিত। আমাদের শহর উত্তর-দক্ষিণে সম্প্রসারণ তো হচ্ছেই, পূর্ব-পশ্চিমেও যে সম্প্রসারণ হচ্ছে সেটা ঠিক কিনা। একটা শহরের জন্য গ্রোথ ম্যানেজমেন্ট লাগে। কেউ চাইলেই তাকে ইচ্ছামতো ডেভেলপ করতে দেওয়া যাবে না। পরিকল্পনা যেখানে পারমিট (অনুমোদন) করে সে অনুযায়ী ডেভেলপ করার সুযোগ দিতে হবে।’
উত্তর-দক্ষিণ দিকে যে সম্প্রাসরণ হচ্ছে তার পুরোটাই অপরিকল্পিত উল্লেখ করে এই নগরপরিকল্পনাবিদ বলেন, ‘ঢাকা এখন চারদিকে বাড়ছে। উত্তর-দক্ষিণ দিকে তুলনামূলক বেশি বাড়ছে। আবাসন কোম্পানিগুলো উত্তর-দক্ষিণে বিশাল বিশাল প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বিশেষ করে যেখানে উচ্চমানের ভূমি সেখানে তো অবধারিতভাবে বাড়ছে। আবার যেখানে নিম্নমানের ভূমি সেখানেও মাটি ভরাট হচ্ছে। তবে সম্প্রাসরণ বা বিস্তৃতি যেটাই বলি না কেন, তার পুরোটাই অপরিকল্পিত, স্বেচ্ছাচারীভাবে করা হচ্ছে। সরকারিভাবে ঢাকার পরিকল্পনা নিয়ে যে নির্দেশনাগুলো হয়েছে সেটা আমরা মানিনি। ঢাকার সম্প্রসারণ কোন দিকে কতটুকু করব তার কনটেইন করা (সীমারেখা টানা), সেটি নেই। কোনো শহরের কনটেইনমেন্টটা না থাকলে শহর যত সম্প্রসারণ করা হবে সমস্যা তত বাড়বে।’