বিচারের অপেক্ষায় এক হাজার ডেথ রেফারেন্স
- ফাঁসির মামলার নিষ্পত্তি কম
- হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ডাদেশের নিষ্পত্তি করতে লেগে যায় কমপক্ষে পাঁচ বছর
২০০৭ সালের ৬ নভেম্বর নাটোরের লালপুরের একটি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হন মো. শাহারুল ইসলাম (ঘটনার সময় তার বয়স ২০ বছর)। সংশ্লিষ্ট মামলায় ২০১৬ সালের ৯ মার্চ তাকে প্রাণদণ্ডাদেশ দেয় নাটোরের একটি বিচারিক আদালত। আসামিকে পাঠানো হয় কারাগারের কনডেম সেলে। একই সঙ্গে আসামির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের নথি) আসে হাইকোর্টে। কয়েক বছর আগে পেপারবুক (বিচারিক আদালতের রায়সহ নথিপত্র) প্রস্তুত হলেও এখনো শুনানিতে আসেনি।
আইনি নিষ্পত্তির অপেক্ষায় শাহারুল কনডেম সেলে কাটিয়ে দিয়েছেন প্রায় আট বছর। তার মতো ২ হাজার ৪০০-এর বেশি ফাঁসির আসামি কনডেম সেলে আছেন বিচার নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। পর্যায়ক্রমে তাদের মামলা একদিন কার্যতালিকায় উঠবে। সে অপেক্ষায় তাদের প্রতিমুহূর্ত কাটে মৃত্যুযন্ত্রণায়।
আইনি প্রক্রিয়ার ফেরে পড়ে বছরের পর বছর শত শত আসামিকে থাকতে হচ্ছে কারাগারের কনডেম সেলে। আর তাদের পরিবার ও স্বজনরা থাকেন উৎকণ্ঠায়। তাদের আর্থিক দুরবস্থা ও ভোগান্তি চলে বছরের পর বছর।
সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখার তথ্য অনুযায়ী, হাইকোর্টে এখন ১ হাজার ৯টি ডেথ রেফারেন্স আছে এবং এ সংখ্যা গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ডেথ রেফারেন্সের নিষ্পত্তিতে হাইকোর্টে এখন মাত্র পাঁচটি বেঞ্চ। যেগুলোতে ২০১৮ সালের ক্রম অনুযায়ী মামলার শুনানি ও নিষ্পত্তি হচ্ছে।
ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রাণদণ্ডের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে বিচারিক আদালতে কোনো নীতিমালা নেই। ফলে ফাঁসির আসামি বাড়ছে। অন্যদিকে উচ্চ আদালতে নিষ্পত্তির গতি না বাড়ায় অনিষ্পন্ন মামলা বাড়ছে।
নিয়মিত ডেথ রেফারেন্স মামলা পরিচালনা করেন এমন আইনজীবীরা বলেন, হাইকোর্টে বিচারিক আদালতের রায়ের পর মৃত্যুদণ্ড বা ডেথ রেফারেন্সের নিষ্পত্তিতে কমপক্ষে পাঁচ বছর সময় লাগে।
আইন ও বিধিতে যা আছে : বিচারিক আদালতে কারও মৃত্যুদণ্ড হলে কারাবিধি (বাংলাদেশ জেল কোড) ৯৮০ অনুযায়ী তাকে কারাগারের বিশেষ সেলে রাখা হয়, যা কনডেম সেল নামে পরিচিত। হাইকোর্টের বিচারে মৃত্যুদণ্ড রহিত (যাবজ্জীবন বা অন্য সাজা) হলে রাখা হয় সাধারণ সেলে।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী, হাইকোর্টের অনুমোদন ছাড়া ফাঁসির সাজা কার্যকর করা যায় না। এজন্য দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির রায়সহ যাবতীয় নথি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠাতে হয়। এটিকে বলে ডেথ বা কোর্ট রেফারেন্স। পেপারবুক যাচাই সাপেক্ষে মামলাগুলো পর্যায়ক্রমে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ওঠে। অন্যদিকে বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল ও জেল আপিলের সুযোগ পান। তবে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের আপিলের সুযোগ নেই। হাইকোর্টে সর্বোচ্চ সাজা বহাল থাকলে আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল ও জেল আপিল করতে পারেন। আপিল বিভাগে সর্বোচ্চ দণ্ড বহাল থাকলে শেষ সুযোগ হিসেবে দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করা যায়। এ আবেদন নাকচ হলে কারাবিধি অনুযায়ী ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করে কারা কর্তৃপক্ষ।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগেই আসামিকে কনডেম সেলে রাখা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। গত বছর এপ্রিলে এ সংক্রান্ত জেল কোডের বৈধতা প্রশ্নে হাইকোর্টের দেওয়া রুলের শুনানি গত বছর ১২ ডিসেম্বর শেষ হলেও তা এখনো অপেক্ষমাণ রয়েছে।
ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডেথ রেফারেন্স মামলার নিষ্পত্তির সময়সীমা নিয়ে ফৌজদারি আইন বা উচ্চ আদালতের রুলসে (বিধি) কিছু উল্লেখ করা নেই। অন্যদিকে এ ধরনের মামলার নিষ্পত্তির আইনি প্রক্রিয়া যেমন সময়সাপেক্ষ, তেমনি খরচসাপেক্ষও। আসামিপক্ষের অনেকের এ সামর্থ্য থাকে না।
তাদের ভাষ্য, ২০২২ সালের আগের কয়েক বছরে বিচারিক আদালতে ব্যাপকহারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে। বিপরীতে নিষ্পত্তি যত হয় তার চেয়ে বেশি ডেথ রেফারেন্স মামলা প্রস্তুত হয় শুনানির জন্য। সাধারণত বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশের বেশিরভাগ হাইকোর্টে রহিত হয় এবং আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় অথবা তারা খালাস পায়। ২০২২ সালের জুনে দেশ রূপান্তরের এক ধারাবাহিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বিচারিক আদালতের ৮৬ শতাংশ মৃত্যুদণ্ডাদেশ হাইকোর্টে রহিত হয়ে যাবজ্জীবন বা বিভিন্ন মেয়াদে সাজা অথবা খালাস হয়।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও ব্লাস্টের (বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যাণ্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট) ট্রাস্টি অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ড এমনিতেই কঠোর সাজা। এ সাজা পেয়ে যারা বছরের পর বছর কনডেম সেলে থাকে বা থেকেছে শুধু তারাই টের পায় বা পেয়েছে এ সাজার শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা কত। দণ্ডপ্রাপ্তের পরিবারও নানাভাবে ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অপরাধীর শাস্তি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। তার অনেক পদ্ধতি আছে। আশা করি, সুপ্রিম কোর্ট ডেথ রেফারেন্স মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করবে।’
অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘এখন ঘৃণিত অপরাধ ছাড়া ফাঁসি হয় না। হাইকোর্টে বেঞ্চ কম থাকায় প্রত্যাশা অনুযায়ী নিষ্পত্তি হচ্ছে না। আমরা চাই, মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি হোক। বছরের পর বছর পড়ে থাকলে লাভ হয় না, বরং দুর্ভোগ বাড়ে। আমি প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বেঞ্চ বাড়িয়ে দিতে।’
নিষ্পত্তি হয় মামলাও বাড়ে : ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে অনিষ্পন্ন ডেথ রেফারেন্স মামলা ছিল ৯১০টি। বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) ২৪টি, পরের তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) ১৯টি এবং পরের তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ২৯টিসহ ৯ মাসে মোট ৭২টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। একই সময়ে নিষ্পত্তির জন্য কার্যতালিকায় আসে আরও ৯৪টি মামলা। ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৩ বছর ৯ মাসে ১ হাজার ৬৮২টি ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তির জন্য কার্যতালিকায় উঠেছে। নিষ্পত্তি হয়েছে ১ হাজার ২৫৩টি মামলা। স্মরণকালে সবচেয়ে বেশি ফাঁসির মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ সময়ে ১৯৫টি ডেথ রেফারেন্সের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ১৫৫টি।
প্রতিবেদনের শুরুতে উল্লিখিত আসামি শাহারুলকে আইনি সহায়তা দিচ্ছে আইনি সহায়তা ও গবেষণা সংস্থা ল ল্যাব ফাউন্ডেশন। ২০১৪ থেকে ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত অন্তত ১০০টি ডেথ রেফারেন্স মামলার পর্যালোচনা ও শুনানি করে সংস্থাটি জানাচ্ছে, অগ্রাধিকার, চাঞ্চল্যকর বা বিশেষ কিছু মামলা ছাড়া পাঁচ বছরের মধ্যে পেপারবুক প্রস্তুত হয় না। সংশ্লিষ্ট আসামিদের কমপক্ষে পাঁচ বছর কনডেম সেলে থাকতে হয়। দণ্ডপ্রাপ্তদের বেশিরভাগ দরিদ্র শ্রেণির হওয়ায় তাদের অনেকের পেপারবুক ও মামলার নথি প্রস্তুত করার এবং আইনজীবীদের ফি দেওয়ার সামর্থ্য নেই।
সংস্থাটির সমন্বয়ক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অনেকে কনডেম সেল থেকে রেহাই পাওয়ার আকুতি জানিয়ে প্রায়ই টেলিফোন করেন। বিচারিক আদালতে ফাঁসির দণ্ড নিয়ে কোনো বিচারিক নীতিমালা নেই। ফলে মৃত্যুদণ্ড বেশি হয়। অন্যদিকে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স মামলার নিষ্পত্তি আগের চেয়ে বাড়লেও বিচারাধীন মামলাও বাড়ছে। এর ফলে কনডেম সেলের আসামি ও তার পরিবারের মানসিক ও আর্থিক যন্ত্রণা বাড়ে। এর থেকে উত্তরণে নীতিমালার পাশাপাশি হাইকোর্টে বেঞ্চ বাড়াতে হবে।’
Wonderful items from you, man. I’ve understand your stuff previous to and you’re simply too
magnificent. I really like what you have received here, really like what you’re saying and the
way wherein you say it. You make it entertaining and you still take care of to keep it smart.
I can not wait to learn far more from you. This is really a great
website.
Visit my webpage … vpn special
Greetings! I’ve been reading your blog for a long
time now and finally got the bravery to go ahead and
give you a shout out from Atascocita Texas! Just wanted
to say keep up the fantastic work!
My web site vpn special coupon code (vpnspecialcouponcode.wordpress.com)
Quality posts is the crucial to interest the visitors to pay
a visit the website, that’s what does vpn mean this site is providing.
Simply want to say your article is as astounding. The clarity to your
submit is simply great and i could think you are
an expert in this subject. Well with your
permission allow me to snatch your feed to stay up to date with imminent
post. Thank you one million and please carry on the rewarding work.
Also visit my web page … vpn special coupon code
Very nice post. I just stumbled upon your blog and wanted to say
that I’ve really enjoyed surfing around your blog posts.
After all I will be subscribing to your rss feed and I
hope you write again very soon!
Also visit my webpage: vpn ucecf
Quality posts is the secret to be a focus for the visitors facebook vs eharmony to find love online
visit the site, that’s what this web page is providing.
Hello, just wanted to mention, I loved this
post. It was practical. Keep on posting!
Here is my website … eharmony special coupon code 2024
excellent submit, very informative. I ponder why the other specialists of this sector don’t
realize this. You must continue your writing. I am sure,
you’ve a huge readers’ base already!
My web site :: nordvpn special coupon code 2024