Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Trending

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বাঁধলে চীনের ভূমিকা কী হবে?

ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই যেহেতু পারমাণবিক অস্ত্র ক্ষমতা সম্পন্ন দেশ, সেটাই হয়তো সরাসরি সংঘর্ষ আটকিয়ে রাখছে।

পেহেলগামে হামলার পরে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তার মধ্যেই একদিকে যেমন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ভারতীয় হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, অন্যদিকে এই বিতর্কে চীনের ভূমিকা কী হবে, তা নিয়েও আলোচনা চলছে।

পাকিস্তান আর চীনের মধ্যে যে সুসম্পর্ক রয়েছে, সে কারণে কি ভারত কোনো কড়া পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকবে? চীন এই বিতর্কে কতটা পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াবে? উঠছে এসব প্রশ্নও।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সম্প্রতি মন্তব্য করেছিলেন যে জম্মু-কাশ্মিরে হামলার পরে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার দিকে নজর রাখছেন তারা।

বেইজিং থেকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসাক দারের সাথে কথা বলার সময়ে ওয়াং ই অনুরোধ করেছিলেন যাতে দুই পক্ষই সংযত থাকে।

পেহেলগামের হামলার পরের দিনই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছিল চীন। ভারতে চীনের রাষ্ট্রদূতও ওই হামলায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছিলেন।

বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে বিবিসি জানার চেষ্টা করেছে যে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চীনের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে আর তারা পাকিস্তানকে কতটা সহায়তা দিতে পারে।

নিরাপত্তা নিয়ে পাকিস্তান কেন চিন্তিত?

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী তথা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসাক দারের সাথে কথা বলার সময় ওয়াং ই জানিয়েছিলেন যে দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিকে চীন সমর্থন করে।

এর কারণ হিসেবে বলা হয়, এই সঙ্ঘাত পাকিস্তান বা ভারত কারো পক্ষেই যেমন ভালো নয়, তেমনই আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্যও ক্ষতিকারক।

পেহেলগাম হামলার জন্য যে সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা অস্বীকার করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবার সবসময়ে তাদের পাশে থাকার জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।

পেহেলগাম হামলার ‘নিরপেক্ষ তদন্ত‘

বেইজিংয়ের তাই হে ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো আইনার ট্যাঙ্গেন বলছেন, কোনো প্রমাণ ছাড়াই ভারত দাবি করছে যে পাকিস্তান এই হামলা করিয়েছে। এ ধরনের অভিযোগের তালিকাটা লম্বা। কিন্তু অভিযোগের সত্যতার জন্য তো পাকাপোক্ত প্রমাণের দরকার।

তার কথায়, পানি বন্ধ করে দেয়ার যে হুমকি দিয়েছে ভারত, সেটাও খুবই গুরুতর বিষয়। আসল প্রশ্ন হলো সত্যিই কি ভারত পানি বন্ধ করে দেবে? যদি সেটা করা হয় তাহলে দুটি দেশের মধ্যে সঙ্ঘর্ষের বিপদ বাড়বে। শান্তি বজায় রাখতে তাই একমাত্র পথই হলো পেহেলগাম হামলার নিরপেক্ষ তদন্ত করা এবং সত্যের ভিত্তিতে সব প্রশ্নের জবাব সামনে আনা।

এই উদ্যোগে চীনের মতো পাকিস্তানঘনিষ্ঠ দেশগুলোই শুধু না থেকে তুরস্ক এবং ‘ব্রিকস‘এর মতো সংগঠনগুলোকেও শামিল করা হোক যাতে সঠিক তদন্ত হয় এবং দুই পক্ষের কাছেই গ্রহণযোগ্য হয়, বলছিলেন ট্যাঙ্গেন।

চীনের কাছে কোন বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে?

পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে গত কয়েক দশক ধরেই প্রতিরক্ষা এবং কূটনৈতিক সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে। এই সময়কালের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবেও চীনের প্রতি পাকিস্তানের নির্ভরতা বেড়েছে।

আধুনিক সমরসজ্জার যোগান হোক বা প্রতি বছর আর্থিক ঘাটতি সামাল দিতে দেনা নেয়া হোক অথবা ‘এফএটিএফ‘-এর কড়া পদক্ষেপের হাত থেকে বাঁচতে – অনেক ক্ষেত্রেই পাকিস্তানকে সহায়তা দিতে এগিয়ে এসেছে চীন।

‘এফএটিএফ‘ বা ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স হলো বিশ্বের নানা দেশের একটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংস্থা, যারা অর্থপাচার এবং ‘সন্ত্রাসবাদ-এর অর্থায়নের ওপরে নজরদারি চালায়।

আবার ‘চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর‘ বা ‘সিপেক‘ -এর মাধ্যমে পাকিস্তানে চীন ৬২ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। সম্প্রতি গদরে চীনা বিনিয়োগে নির্মিত বিমানবন্দরের উদ্বোধন করা হয়েছে।

চীন এবং পাকিস্তান শুধু যৌথ সামরিক মহড়া দেয় তা নয়, চীনের কাছ থেকে পাকিস্তান বড় পরিমাণে আধুনিক অস্ত্রও কিনে থাকে।

স্টকহোমের ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক প্রতিবেদন দেখা যাচ্ছে যে বিগত পাঁচ বছরে পাকিস্তান ৮১ শতাংশ অস্ত্রই চীন থেকে আমদানি করেছে।

পাকিস্তানের সাবেক কূটনৈতিক তসনীম আসলামের কথায়, পাকিস্তানের মাধ্যমে চীন উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে পৌঁছাতে পারে। কিন্তু পাকিস্তানে চীনের নাগরিকদের ওপরেও হামলা হয়েছে।

চীন এই অঞ্চলের এমন একটা বড় দেশ, যার সাথে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের সাথেই বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে। ভারত যেমন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সীমান্ত অঞ্চলে উত্তেজনা তৈরির জন্য অভিযোগ তুলে থাকে, তেমনই পাকিস্তানও বালুচিস্তানের ঘটনাবলীর জন্য ভারতকে দোষী বলে অভিযোগ করে। কিন্তু এই অঞ্চলে শান্তি বজায় থাকলেই চীনের স্বার্থ পূর্ণ হবে। চীনের দরকার নিজের অর্থনৈতিক স্বার্থ নিরাপদে রাখা, বলেন আসলাম।

চীন এই অঞ্চলের দু’টি দেশ পাকিস্তান আর ভারতের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে পারে, যদিও এর জন্য নিরপেক্ষভাবে প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে এই ঘটনার তদন্ত করা জরুরি, যোগ করেন তিনি।

চীন থেকে পাকিস্তান কী আশা করে?

ভারতের সাথে সম্প্রতি যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষার বিষয়ে চীনের কাছ থেকে কী আশা করতে পারে পাকিস্তান?

বেইজিং থেকে ট্যাঙ্গেন বলছিলেন, যদি কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ থাকে যার ওপর ভিত্তি করে বলা যাবে যে পেহেলগামে হামলা চালিয়েছে যে সংগঠনটি, তাদের পাকিস্তান সরকার সমর্থন দিয়েছে, অথবা তারা নিজেরাই হামলায় যুক্ত ছিল, সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি বদলিয়ে যাবে। কিন্তু সম্ভবত ঘটনা এ রকমটা নয়।

ভারত আর যুক্তরাষ্ট্র ২০২০ সালে ‘গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ‘ চুক্তি করেছিল। ওই চুক্তি অনুযায়ী ‘সন্ত্রাসবাদ‘সহ আন্তর্জাতিক অপরাধের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার কথা।

আইনার ট্যাঙ্গেন ওই চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে বলছিলেন যে তারপর থেকে পাকিস্তান এবং চীনও একই রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কিন্তু এই চুক্তিটা কোনো সামরিক সহযোগিতার নয়। বর্তমানে চীনের সাথে সামরিক সহযোগিতার চুক্তি শুধু উত্তর কোরিয়ার সাথে রয়েছে, বলছিলেন ট্যাঙ্গেন।

কী করতে পারে চীন?

পাকিস্তান ও চীনের সম্পর্কের ওপরে গভীরভাবে নজর রাখেন, এমন একজন বিশেষজ্ঞ কায়েদ-এ-আজম ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মুহম্মদ শোয়েব।

তিনি বলছেন যে চীন সবসময়েই নিরপেক্ষতা বজায় রাখে আর ভারত ও পাকিস্তান – দুই পক্ষকেই সংযত হতে বলে থাকে।

তার কথায়, এখনো চীন সেটাই করছে। চীনের একটা বাধ্যবাধকতা হলো যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শুল্ক-যুদ্ধে ফেঁসে আছে, তাই তারা ভারতের সাথে নতুন কোনো ফ্রন্ট খুলতে চাইবে না।

তার ব্যাখ্যা, চীনের বাণিজ্যের একটা বড় অংশীদার ভারত, তাই ভারতের সাথে চীন সবসময়েই মজবুত সম্পর্ক রাখতে চায়।

তবে চীন কখনো খোলাখুলি তাদের বক্তব্য প্রকাশ করবে না, তারা সবসময়ের মতোই আকার-ইঙ্গিতে নিজেদের অবস্থান বুঝিয়ে দেবে, যেরকম বক্তব্য তারা এই সঙ্কটের সময়েও দিয়েছে।

চীনের ওই বক্তব্যে বলা হয়েছিল, প্রতিরক্ষা নিয়ে পাকিস্তানের যথার্থ দুশ্চিন্তার ব্যাপারে চীন অবহিত আছে। সার্বভৌমত্ব ও প্রতিরক্ষার স্বার্থে পাকিস্তানের প্রচেষ্টাকে চীন সমর্থন করে।

অধ্যাপক শোয়েব বলছিলেন, এটা আসলে একটা ইঙ্গিত যে পাকিস্তান একটা সার্বভৌম দেশ এবং এই বক্তব্যের আরেকটা অর্থ হলো আগের বারের মতো এবারো যদি ‘মুখ রক্ষার খাতিরে‘ বালাকোটের মতো কোনো হামলা হয় তা যেন প্রথম রাউন্ডেই শেষ হয়ে যায়।

কূটনৈতিক ফ্রন্টে চীন কিভাবে পাকিস্তানকে সমর্থন করছে, সেই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অধ্যাপক শোয়েব বলছিলেন, চীনের কাছ থেকে পাকিস্তানের এই সুবিধাটাই নিয়েছে, যেভাবে ২০১৯ সালে পুরো বিশ্ব পাকিস্তানের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, এবার আর সেটা হয়নি।

অধ্যাপক শোয়েব বলছিলেন যে হামাসের হামলার পরে ইসরায়েল বিশ্বের কাছে যেরকম সমর্থন আশা করেছিল, ভারতও বিশ্বনেতাদের থেকে সেরকমটাই আশা করেছিল। তবে এক্ষেত্রে ভারতের কূটনৈতিক প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে চীন।

যুদ্ধ শুরু হলে চীন পাকিস্তানকে কতটা সাহায্য করবে?

চীনের কাছ থেকে পাকিস্তান কী কী আশা করে, এ ব্যাপারে বলতে গিয়ে অধ্যাপক শোয়েব বলছিলেন, পাকিস্তানের নীতি নির্ধারকরা এটা ভালোই জানেন যে চীন এসে তো আমাদের পেছনে থেকে যুদ্ধ করবে না বা সরাসরি যুদ্ধে সামিলও হবে না।

যদি পরিস্থিতি এক বছর আগের মতো থাকত তাহলে হয়ত চীন ভারতের সঙ্গে সীমান্তে কিছু না কিছু করত যাতে ভারতের কাছে এই বার্তা পৌঁছায় যে তাদের দুটো সীমান্তে যুদ্ধ করতে হবে, বলছিলেন অধ্যাপক শোয়েব।

তবে এখন তার মতে, চীন-ভারত সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে।

তার কথায়, আমরা উন্নত দেশ তো নই, তাই বিশেষত কৃত্রিম উপগ্রহের জন্য আমাদের চীনের ওপরে নির্ভর করতে হয়, যার মধ্যে আবার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো তথ্য আদান-প্রদান। যদি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, তাহলে এই সব ব্যাপারে চীন ধোঁকা দেয় না।

‘বাইডু‘-র উদাহরণ দিয়ে তিনি বলছিলেন, আমরা বিশ্বের প্রথম দেশ, যাদের কাছে বাইডু সিস্টেমসের সামরিক ব্যবহারের ক্ষমতা আছে।

‘বাইডু‘ হলো চীনের সবথেকে বড় ইন্টারনেট ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংস্থা যারা সার্চ ইঞ্জিন, স্বয়ংচালিত গাড়ি ও ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের পরিষেবা দিয়ে থাকে। গুগলের মতোই এই সংস্থা চীনে ইন্টারনেট সার্চ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করে।

চীন থেকে পাকিস্তান যেসব অস্ত্র পেয়েছে

অধ্যাপক শোয়েব বলছিলেন যে ভারতীয় জাহাজ ও সেনাবাহিনীর গতিবিধি সংক্রান্ত তথ্যের জন্য পাকিস্তানকে চীনের ওপরে নির্ভর করতে হবে।

বিভিআর – ‘বিয়ন্ড ভিজুয়্যাল রেঞ্জ‘ অর্থাৎ যে লক্ষ্যবস্তু চোখে দেখা যায় না এরকম ক্ষেপণাস্ত্রের জন্যও পাকিস্তান চীনের ওপর নির্ভরশীল।

তার কথায়, বিগত পাঁচ বছরে পাকিস্তানের কাছে যত অস্ত্র এসেছে, তার প্রতি পাঁচটির মধ্যে চারটিই চীনের। ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হলে এইসব অস্ত্রই ব্যবহৃত হবে।

আইনার ট্যাঙ্গেনের মতে চীন পাকিস্তানকে পিএল ১৫ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে, কিন্তু সেটা আগেই সম্পাদিত একটি চুক্তির অধীনে। সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।

পিএল ১৫ ও এসডি ১০ এর মতো ক্ষেপণাস্ত্রগুলো চীনের আধুনিক বিভিআর প্রযুক্তিতে বানানো হয়েছে। বহু দূরে থাকা কোনো বিমানকে আকাশেই ধ্বংস করে দিতে পারে এসব ক্ষেপণাস্ত্র।

আইনার ট্যাঙ্গেন ব্যাখ্যা করছিলেন যে ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই যেহেতু পারমাণবিক অস্ত্র ক্ষমতা সম্পন্ন দেশ, সেটাই হয়তো সরাসরি সংঘর্ষ আটকিয়ে রাখছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
slot demo
bacan4d
bacan4d
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot toto