Hot

মজুতদারি করলে তাদের গণধোলাই দেওয়া উচিত

মজুতদারি করে যারা পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে, তাদের বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, মজুত করে রেখে পচিয়ে যারা বস্তায় বস্তায় পেঁয়াজ পানিতে ফেলে, তাদের কী করা উচিত? এদের গণধোলাই দেওয়া উচিত। সরকার কিছু করতে গেলে বলবে, সরকার করছে। এর প্রতিকারে জনগণ কিছু করলে সব থেকে ভালো; কেউ কিছু বলতে পারবে না। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নির্বাচনটা যাতে না হয়, তার জন্য একটা বিরাট চক্রান্ত ছিল। ২৮ অক্টোবরের ঘটনাটা দেখেন। ২০১৩, ’১৪ ও ’১৫ সালের সেই অগ্নিসন্ত্রাস। এগুলো যে হঠাৎ করা, তা তো নয়। এটা পরিকল্পিতভাবে।’ আসন্ন রমজানে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কোনো সংকট হবে না বলে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেন তিনি। 

গতকাল শুক্রবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জার্মানিতে অনুষ্ঠিত মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগদানের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে এ আয়োজন করা হয়। গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জিতে টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় আসার পর এটি তাঁর প্রথম সংবাদ সম্মেলন।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা নির্বাচন বানচালের পক্ষে ছিল; তারা দেখল, নির্বাচন কিছুতেই আটকাতে পারবে না। কারণ, মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা আছে। চক্রান্ত হলো– জিনিসের দাম বাড়বে; সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হবে; তখন আন্দোলন করে সরকারকে উৎখাত করবে। এটা তাদের পরিকল্পনার অংশ। কারও নাম বলতে চাই না; বলার দরকারও নেই আমার। কিন্তু এই চক্রান্তটা আছে। তিনি বলেন, ডিম লুকিয়ে রেখে দাম বাড়ানোর ঘটনায় যারা সরকার উৎখাতের আন্দোলন করে, তাদের কারসাজি আছে– সেটি মনে হয় না? এর আগেও এ রকম ঘটেছে। পেঁয়াজের খুব অভাব হলো। কিন্তু দেখা গেল, বস্তায় বস্তায় পচা পেঁয়াজ পানিতে ফেলে দিচ্ছে। জিনিস লুকিয়ে রেখে পচিয়ে ফেলে দেবে, আর জিনিসের দাম বাড়বে! 

দেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার ওপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এতে দেশ উন্নত হয়। গণতন্ত্র থাকায় গত ১৫ বছরে আমরা দেশের উন্নতি করতে পেরেছি। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। 

সদ্য সমাপ্ত জার্মানি সফর নিয়ে এই আয়োজন হলেও এতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মাধ্যমে সাম্প্রতিক নির্বাচন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বিরোধী দলের আন্দোলনসহ সমসাময়িক রাজনীতির বিভিন্ন প্রসঙ্গ উঠে আসে।

দেশে আগামী মার্চের দিকে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির একটি আন্তর্জাতিক চক্রান্ত চলছে বলে জাতীয় নির্বাচনের আগে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই শঙ্কা এখনও আছে কিনা– এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র তো ছিল, ষড়যন্ত্র তো আছে। ১৯৮১ সালে আমি দেশে আসার পর থেকে বারবার আমাকে বাধা দেওয়া হয়েছে, যেন ক্ষমতায় যেতে না পারি। ’৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার ঘটনাই ধরেন না কেন। রাসেলকেও তো ছাড়েনি। কেন? যেন ওই রক্তের কেউ বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসতে না পারে। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র প্রতিবারই হচ্ছে। মানুষের ভোটের অধিকার, সেটা তো বারবার আমরাই আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করেছি। গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে এনেছি। তার সুফল দেশবাসী পাচ্ছে।

‘আগামীতে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না’

এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, পেঁয়াজ আমাদের যথেষ্ট উৎপাদন হচ্ছে। সেটি আমরাই শুরু করেছি। আগামীতে বাইরে থেকে পেঁয়াজ আনতে 

হবে না– এটি বাস্তবতা। খুব খোলামেলা কথা বলছি। লুকানোর কিছু নেই। তিনি বলেন, এই কথাটা আমি বলতে পারি, এই যে কালকে বৃষ্টি হলো না? কথায় তো আছে, যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্যি রাজার পুণ্যি দেশ। মাঘের শেষে কিন্তু বৃষ্টি হলো, আবার এই ফাল্গুনের শুরুতেও কিছু বৃষ্টি। খাদ্যপণ্য উৎপাদনে কোনো অসুবিধা হবে না। খাদ্যপণ্য সংরক্ষণে সরকারের পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন তিনি। 

রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রমজানে কোনো জিনিসের অভাব হবে না। ইতোমধ্যে সব কিছুর ব্যবস্থা করা আছে। এটা নিয়ে অনেকে কথা বলবে, কিন্তু কোনো অসুবিধা হবে না। তিনি বলেন, সাধারণত রমজানে যে পণ্যগুলো– যেমন ছোলা, খেজুর ও চিনি নিয়ে বেশি চিন্তা। এগুলো পর্যাপ্ত আনার ব্যবস্থা আছে। সেই ব্যবস্থা অনেক আগেই করে রেখেছি।

‘ইউরোপীয়রা জানত– আমিই নির্বাচনে জিতে আসব’ 

নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ফ্রান্সসহ ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইউরোপীয় প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের যেমন রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক আছে, সেই সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কও আছে। এবারের নির্বাচন নিয়ে তারা কোনো কথা বলেনি। কেউ উদ্বেগও জানায়নি। ইউরোপীয়রা জানত– আমিই নির্বাচনে জিতে আসব। যারা আমাকে চায়নি, তাদের মাধ্যমেই নির্বাচন নিয়ে কথা ওঠে, প্রশ্ন ওঠে।
পাকিস্তানের সাম্প্রতিক নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, একটি দেশে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে ১২-১৪ দিন সময় লাগলেও তাদের নির্বাচন হয়ে গেল– ফ্রি-ফেয়ার। আর বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাত্র ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল এসে গেল। সেটি ফ্রি-ফেয়ার নয়? সুতরাং এই রোগের কোনো ওষুধ আমাদের হাতে নেই। আমার শক্তি আমাদের দেশের জনগণ। জনগণ আমার পাশে আছে। আমি সেটাই বিশ্বাস করি।

‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা হলেও বলব, যুদ্ধ চাই না’

জার্মানি সফরকালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে যুদ্ধ বন্ধের উপায় খুঁজে দেখার আহ্বান রেখেছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে সরাসরি জিজ্ঞেস করেছি, যুদ্ধ কীভাবে বন্ধ করা যায়, সেটা বলেন। কারণ এতে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা হলেও বলব, আমি যুদ্ধ চাই না, যুদ্ধ বন্ধ করেন। তারপর যে যেটা বুঝুক, তাতে আমার কিছু আসে যায় না।’ ফিলিস্তিন ও ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে বিশ্বমোড়লরা দুই মুখো নীতি নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

‘টাঙ্গাইল শাড়ি আমাদের, কেউ নিতে পারবে না’

টাঙ্গাইল শাড়ির পেটেন্ট বাংলাদেশ, না ভারতের পশ্চিমবঙ্গের– এমন বিতর্ক-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পেটেন্ট রাইটসের জন্য আমরা ইতোমধ্যে আবেদন করেছি। আপনারা লক্ষ্য করবেন, ক’দিন আমি সমানতালে টাঙ্গাইল শাড়ি পরলাম এ জন্য যে, দেখাতে পারি– এটা আমাদের। কাজেই অন্য কেউ এটা নিতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনের জন্য আমি যে শাড়িটা পরেছি, সেটা শিফন শাড়ি। এটা আমাদের আনসার-ভিডিপির তৈরি করা। সবাই ফ্রেঞ্চ শিফনের প্রশংসা করে। এটার নাম দিলাম সফিপুর শিফন। ওরা শাড়ি তৈরি করে, আমি কিনে উপহার দিই। আজকে পরে এলাম। কাজেই এটা বুঝতে হবে, আমি এ দেশের মাটি-মানুষের সঙ্গে আছি। ফ্রান্স থেকে এনে আমি পরি না।’ 

‘দেশে রাজনৈতিক দলের অভাব রয়েছে’

এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, রাজনৈতিক দলের অভাব রয়েছে দেশে। আওয়ামী লীগ ১৯৪৯ সালে গঠিত হয়েছিল গণমানুষের কথা বলে। সেই সময় থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করেই দল এগিয়ে গেছে। আমি যদি প্রতিপক্ষ কয়েকটি দল দেখি, একটি হচ্ছে যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াত, যাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমান সংবিধান সংশোধন করে তাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়। আর সামরিক শাসকদের পকেট থেকে যে দুটি দল গঠিত হয়েছে, সে দুটি হচ্ছে– বিএনপি ও জাতীয় পার্টি। তারা চায় এমন একটা পরিবেশ হোক, তাদের কেউ ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। সেটা করতে গিয়ে তারা যে প্রথম ধরা খেল, সেটা ২০০৮ সালের নির্বাচনে। প্রচার-প্রচারণা সবদিক থেকে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সমান-সমান ভাব ছিল। সেই নির্বাচনের ফলাফলটা কী? গণতান্ত্রিক ধারাকে আমরা স্থায়ী করেছি, যার সুফল মানুষ পাচ্ছে। তাদের জীবনমান উন্নত হয়েছে। আমরা চাই, এই ধারাবাহিকতা যেন বজায় থাকে।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ আগে দরিদ্র ছিল। কোনোভাবে এক বেলার খাবার জোটাত। আল্লাহর রহমতে এখন তো সেটা নেই। যেসব মঙ্গাপীড়িত এলাকা এক বেলা খাবার জোটাতে পারত না, এখন তারা দুই বেলা, তিন বেলা, চার বেলাও খায়। এটা বোঝে সবাই। বুঝেও বোঝে না; ভান করে। কিছু লোক তো আছে, সেটা থাকবে। যুগ যুগ ধরে আছে, যুগ যুগ ধরে থাকবে। ওগুলোকে পাত্তা না দিলেও চলে। আমি এগুলোকে পাত্তা দিই না।

ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে ট্রাফিক লাইটিং পদ্ধতি আবারও চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ে হওয়ায় যানজট অনেকটা সহনশীল হয়ে গেছে। তবে কিছু কিছু এলাকায় আছে। এক্সপ্রেসওয়েটা এখন মাঝামাঝি জায়গায় ফার্মগেট পর্যন্ত করা হয়েছে। পুরোটা হয়ে গেলে সুযোগ সবাই পাবে। তা ছাড়া আরও পাঁচটা (রুট) মেট্রোরেল ঢাকাজুড়ে হবে। সেভাবে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। তিনি বলেন, কিছু কথা বলা আমাদের বাঙালির চরিত্র– কিছু ভালো লাগে না। একটা দলই আছে, যাদের কিছু ভালো লাগে না। তারপর যখন হয়, তখন সেটা তারা উপভোগ করে।

সংবাদ সম্মেলন মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ও মন্ত্রি-প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও কর্মাধ্যক্ষ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
bacan4d
bacan4d