মনিপুরের মর্গে ৯৬ লাশ
ভারতের মনিপুরে জাতিগত দাঙ্গা শুরু হওয়ার পর থেকে রাজ্যের তিনটি বড় হাসপাতালের মর্গে ৯৬টি লাশ পড়ে আছে, যার জন্য এখনো কেউ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেনি। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ভয়ে লোকজন হাসপাতাল থেকে স্বজনদের লাশ নিয়ে যাচ্ছেন না।
পরিস্থিতিতে এখন সুপ্রিম কোর্ট গঠিত সাবেক বিচারপতিদের একটি কমিটি রাজ্য সরকারকে মৃতদের একটি তালিকা প্রকাশ্যে প্রকাশ করার পরামর্শ দিয়েছে, যাতে মৃতদের শনাক্ত করা যায় এবং লাশগুলো তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা যায়।
মনিপুর রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই এবং কুকি উপজাতিদের মধ্যে জাতিগত দাঙ্গা বেধেছে। এই গোষ্ঠী দুটি রাজ্যের দুটি ভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলে বসবাস করে।
দাঙ্গার পর এখন পরিস্থিতি এমন যে, এক জাতিগোষ্ঠীর মানুষ অন্য গোষ্ঠীর ভূখণ্ডে যেতে পারে না। সমগ্র মনিপুর রাজ্য জাতিগত ভিত্তিতে ভাগ হয়ে গেছে। সহিংসতার ঘটনা এখনো ঘটছে।
গোষ্ঠীভিত্তিক এলাকা ভাগ
মনিপুরের রাজধানী ইম্ফলের সিনিয়র সাংবাদিক ওয়াহেংবাম টেকেন্দর সিং বলেন, জাতিগত সহিংসতায় নিহত ৯৬ জনের লাশ ইম্ফলের দুটি হাসপাতালে রাখা হয়েছে- রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস, জওহরলাল নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস এবং চুড়াচাঁদপুরের রিজিওনাল মেডিকেল কলেজ।
ইম্ফল উপত্যকায় মেইতেই গোষ্ঠীর আধিপত্য রয়েছে এবং এখানকার দুটি হাসপাতালে রাখা লাশগুলো কুকি নৃগোষ্ঠীর অন্তর্গত। চুড়াচাঁদপুরের জেলা মেডিক্যাল হাসপাতালে যে লাশগুলো রাখা হয়েছে তার মধ্যে কুকি এবং মেইতেই উভয় গোষ্ঠীরই দেহ রয়েছে, যদিও তাদের মধ্যে কুকিদের লাশের সংখ্যা বেশি।
তাতেও যদি কোনো লাশের কোনো দাবিদার না এগিয়ে আসেন, তাহলে সসম্মানে অন্তিম সংস্কার করে দেয়া হোক।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মনিপুরে জাতিগত সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ১৭৫ জন নিহত হয়েছেন এবং অনেকে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।