মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা: খালাস ৯৫ ভাগ আসামি
অধিকাংশ মামলাই আদালতের বাইরে আপস হয়ে যায় -মো. আবদুল্লাহ আবু * টাকা-পয়সা ও সম্মান হারিয়ে অনেকে মামলায় আগ্রহ বোধ করেন না -ব্যারিস্টার মিতি সানজানা
ভালো কর্মসংস্থানের আশায় বিদেশে পাড়ি জমিয়ে ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছেন অনেকে। কেউ বাধ্য হচ্ছেন পতিতাবৃত্তিতে, কেউ কাজ না পেয়ে ঘুরছেন রাস্তায়, কেউ বিনা অনুমতিতে প্রবাসে অবস্থান করতে গিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন কারাগারে। কাউকে আবার জিম্মি করে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে মুক্তিপণ। অনেকে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে বিদেশে গিয়ে পাচ্ছেন না প্রতিশ্রুত কাজ। একই ধরনের ঘটনা ঘটছে দেশেও। এসব ঘটনায় মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়। তবে ৯৫ শতাংশ আসামিই খালাস পেয়ে যান। ফের জড়ান পুরোনো অপরাধে। এভাবে মানব পাচারের অপরাধ বেড়েই চলছে। এতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে নারী ও শিশুরা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ বছরে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে ৩ হাজার ৩২০টি মামলা হয়েছে। এ সময়ে নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ৫২৮টি মামলা। এরমধ্যে ৪৯৭টি মামলাতেই আসামিরা খালাস পেয়েছে। অর্থাৎ ৯৪ দশমিক ১২ শতাংশ মামলাতেই সব আসামি খালাস পেয়েছে। খালাস হওয়া আসামির সংখ্যা এক হাজার ৮৫৪ জন। আর সাজা হয়েছে মাত্র ৯৭ জনের। অর্থাৎ আসামির হিসাবে ৯৫ শতাংশই খালাস পেয়েছে। সাজা হয়েছে মাত্র ৫ শতাংশের।
বিভিন্ন সময়ে মানব পাচারের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার পাঁচ বাদীর সঙ্গে কথা হয়। এই চারজনের কাছেই নিজেদের মামলার বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। একজন মামলা করার ৩ বছরে মাত্র একবার পুলিশের থেকে মোবাইলে কল পেয়েছেন। ২০২১ সালের ১৯ জুন হাতিরঝিল থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে একটি মামলা হয়। সেখানে ভুক্তভোগী তরুণী (২৭) অভিযোগ করেন, চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে তাদের ভারতে নিয়ে আটকে রাখে টিকটকার হৃদয় বাবুসহ কয়েকজন। সেখানে তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এই চক্রটি দেশ থেকে মেয়েদের নিয়ে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তির জন্য পাঠায়। তাকেও জোরপূর্বক নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে জোরপূর্বক অশ্লীল ভিডিও ও স্থিরিচিত্র ধারণ করে। এরপর তাকে জিম্মি করে দুই লাখ টাকা চাওয়া হয়। যদিও পরে তিনি পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। শুক্রবার এই মামলার বাদী যুগান্তরকে বলেন, ‘দেশে ফিরে টিকটক হৃদয়সহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। এখন আর মামলার কোনো খবর জানি না। আসামিরা গ্রেফতার হয়েছে কিনা তাও জানি না। মামলার পর পুলিশ কখনো আমাকে ডাকেনি।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তদন্তে ত্রুটি-গাফিলতি, ধীরগতি ও বিচারে দীর্ঘসূত্রতাই আসামি খালাসের মূল কারণ। তাছাড়া আদালতের বাইরে দুপক্ষের আপস-মীমাংসার কারণে অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। কারণ দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে দেশে ফিরে মামলা পরিচালনার মতো মানসিক অবস্থা এবং আর্থিক সঙ্গতি কোনোটিই অধিকাংশ বাদীর থাকে না। এজন্য তারা আর্থিক ক্ষতিপূরণ আদায়ে বেশি মনোযোগী হন। এটি পেলেই তারা মামলা পরিচালনা থেকে সরে দাঁড়ান। নারীদের ক্ষেত্রে সম্মানের ভয়ে কেউ দীর্ঘ সময় মামলা চালিয়ে নিতে চান না। এর বাইরে মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসাবে দেখা দেয় দেশের বাইরে সংঘটিত অপরাধ প্রমাণ করা। এক্ষেত্রে ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনের ক্ষেত্রে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায় বড় ঘাটতি রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, বিচারে দীর্ঘসূত্রতা হলে সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজিরে ঝামেলা হয়ে যায়। বেশি সময় অতিবাহিত হলে বাদীও মামলা পরিচালনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। মামলা তদন্তেও কখনো কখনো গতি কমে যায়। তাছাড়া মামলার তদন্তেও ত্রুটি থাকতে পারে। যেহেতু অনেক মামলার ঘটনাস্থল দেশ এবং দেশের বাইরে-এ কারণে প্রমাণাদি হাজির করাও একটি চ্যালেঞ্জ। আর ঠিকভাবে এটি করতে না পারলে মামলা দুর্বল হয়ে যায়। এ ধরনের দুর্বলতার কারণে আসামিরা খালাস পেয়ে যায়। এজন্য বিচার প্রক্রিয়ায় গতিশীলতা আনয়ন এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন ডিজিটালাইজড করা জরুরি। পুলিশ সদর দপ্তরের ত্রৈমাসিক বৈঠকেও বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আশা করছি, আগামীতে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
পাঁচ বছরের মানব পাচার মামলার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নতুন মামলার তুলনায় পুরোনো মামলা নিষ্পত্তির হারও অনেক কম। ২০১৯ সালে হওয়া ৬৮৫টি মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ৩৯টি। ২০২০ সালে হওয়া ৫৩৩টি মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ১৪টি। এর মধ্যে মাত্র একটি মামলায় একজন আসামির সাজা হয়েছে। বাকি মামলায় সবাই খালাস। ২০২১ সালে নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র দুটি মামলা। অথচ ওই বছর নতুন মামলা হয় ৫৫৪টি। ২০২২ সালের নিষ্পত্তি হয়েছে ৩৭ মামলা। সে বছর নতুন মামলা হয় ৬৯৭টি। এই দুই বছরের নিষ্পত্তি হওয়া মামলায় কোনোটিতেই কোনো আসামির সাজা হয়নি। অর্থাৎ এই সময়ে শতভাগ আসামি খালাস পেয়েছে। সর্বশেষ গত বছর নতুন মামলা হয় ৮৫১টি। এবছর নিষ্পত্তি হয়েছে ৪৩৬টি। তবে ৪১৫টি মামলাতেই সব আসামি খালাস হয়েছে। এই আসামির সংখ্যা এক হাজার ৬১৭ জন। এ অবস্থায় সম্প্রতি মামলা তদন্তের সময় পাচারে জড়িত ব্যক্তির পরিচয়, পাচারের রুটসহ ছয়টি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধান করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. আবদুল্লাহ আবু বলেন, মামলাগুলোর আসামি খালাসের মূল কারণ আদালতের বাইরে বাদী-বিবাদীর আপস হয়ে যাওয়া। অধিকাংশ মানব পাচার মামলাই হয় বিদেশে লোক পাঠানোকে কেন্দ্র করে। এজন্য যখন তারা আসামিদের থেকে টাকা পেয়ে যান তখন আর মামলা পরিচালনা করতে চান না। সাক্ষীরা অর্থের বিনিময়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দেন। তখন আদালতেরও কিছু করার থাকে না। এভাবে অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। মামলা থেকে খালাস পেয়ে তারা আবার পুরনো অপরাধে জড়িয়ে পড়েন।
এসব কারণে বেড়ে চলছে মানব পাচার। এতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে নারী ও শিশুরা। সরকারের তথ্য অধিদপ্তরের একটি সচেতনামূলক ফিচারে বলা হয়েছে, দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে প্রতিবছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কয়েক লাখ নারী ও শিশু পাচার হচ্ছে। মালয়েশিয়ার পাচারের উদ্দেশ্যে সমুদ্রপথে নৌকায় যাদের পাঠানো হয় তাদের অধিকাংশের বয়স ১৮র নিচে। একটি বেসরকারি সূত্রমতে, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ৩০ হাজার নারী ও শিশু দালালের হাতে পড়ে পাচার হচ্ছে। এদের মধ্যে ছেলে শিশুর সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার এবং মেয়ে শিশু প্রায় ১০ হাজার। প্রতি মাসে বাংলাদেশ থেকে ২শ থেকে ৪শ তরুণী ও শিশু পাচার হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানে। ভারতীয় সমাজকল্যাণ বোর্ডের তথ্যমতে, ভারতে মোট ৫ লাখ বিদেশি যৌনকর্মী রয়েছে। এর শতকরা ১ ভাগ বাংলাদেশি। কলকাতায় এই সংখ্যা শতকরা ২ দশমিক ৭ ভাগ। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে তিন লাখের বেশি নারী-শিশু পাচার হয়েছে ভারতে। তবে বেসরকারি এনজিওগুলোর দাবি, পাচারের সংখ্যা ৫ লাখেরও বেশি।
মানব পাচারের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে মামলাগুলোর বিচারে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মিতি সানজানা।তিনি বলেন, মানব পাচারের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়-নারী, শিশু ও কিশোরীরা। এ ধরনের অপরাধের শিকার হলে অনেক সময় তারা ভালনারেবল হয়ে পড়েন। কারণ মামলাগুলোর সঙ্গে অনেক স্পর্শকাতর প্রমাণাদি থাকে। সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় তারা অনেকসময় এগুলো আদালতে উপস্থাপন করতে চান না। ফলে মামলাও দুর্বল হয়ে পড়ে। এছাড়া টাকা-পয়সা, মান-সম্মান হারিয়ে আবার মামলা পরিচালনায় আগ্রহ বোধ করেন না। এতে আসামিরা ছাড়া পেয়ে যায়। এ অবস্থা মোকাবিলায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থায় অধিক মনোযোগী হতে হবে। পাশাপাশি সাক্ষী ও প্রমাণাদির গোপনীয়তা রক্ষার প্রত্যাশিত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সমাজের সব পর্যায়ে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে ভুক্তভোগীদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
Howdy! Someone in my Myspace group shared this website with us so I came
to take a look. I’m definitely enjoying the information.
I’m book-marking and will be tweeting this to my
followers! Great blog and terrific design.
Feel free to surf to my website … vpn special coupon code 2024
I got this website from my friend who shared with me about
this website and now this time I am visiting this web site and reading very informative posts at this
time.
Here is my web blog – vpn special coupon code 2024 (http://vpnspecialcouponcode.wordpress.com)
Hey I know this is off topic but I was wondering if
you knew of any widgets I could add to my blog that automatically tweet my newest twitter updates.
I’ve been looking for a plug-in like this what does vpn stand for
quite some time and was hoping maybe you would have some experience with something like this.
Please let me know if you run into anything.
I truly enjoy reading your blog and I look forward to your new updates.
hi!,I like your writing very a lot! share we communicate more
about your post on AOL? I need an expert on this house to resolve my
problem. Maybe that’s you! Taking a look
forward to see you.
My homepage … vpn special coupon code 2024
What’s up everyone, it’s my first pay a visit at this website, and article is in fact fruitful for me, keep up posting
these types of posts.
Also visit my web page: vpn coupon code ucecf
Hello! Do you know if they make any plugins to assist with SEO?
I’m trying to get my blog facebook vs eharmony to find love online rank for some targeted keywords
but I’m not seeing very good gains. If you know of any please share.
Cheers!
Quality content is the key to attract the people to pay a visit the web page, that’s what this web page is providing.
My webpage; eharmony special coupon code 2024
I think the admin of this website is really working hard for his website, as here every data is
quality based information.
Here is my website: nordvpn special coupon code 2024