মুহুর্মুহু গোলায় কাঁপছে সেন্টমার্টিন শাহপরীর দ্বীপ
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও জান্তা সরকারের মধ্যে সংঘর্ষে এবার মর্টার শেল, গুলির শব্দে কেঁপে উঠছে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শাহপরীর দ্বীপের সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির শব্দে এপারের মানুষের ঘুম ভাঙে। বেলা ১১টা পর্যন্ত গুলির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল।
শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা সালাউদ্দীন বলেন, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে যেভাবে বিকট গোলার শব্দ শোনা যায়, তাতে অনেকে আতঙ্কিত। অন্য দিনের চেয়ে বেশিই গোলাগুলি হয়। সীমান্তের জেলেরা মর্টার শেল ও গুলি আতঙ্কে বেশি ভুগছে। দ্বীপের ইউপি সদস্য আবদুস সালাম বলেন, সীমান্তে সকাল থেকে বৃষ্টির মতো গোলাগুলির শব্দ হয়। সীমান্তের ওপারে আগুনের ধোঁয়া এবং কুণ্ডলীও দেখা যাচ্ছে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের এক আবাসিক হোটেলের পরিচালক মো. ইসহাক বলেন, ভারী মর্টার শেল ও গুলির শব্দে দ্বীপের ভবনও কাঁপছে। এমন শব্দ আগে কখনও পাইনি।
কৃষক মোহাম্মদ আমিন বলেন, ভোরে আমি নাফ নদের পাশে ক্ষেতে কাজ করতে যাই। ওই সময়ে মিয়ানমার থেকে গুলির শব্দ শুনি। ঘণ্টাখানেক সময়ে একশর বেশি গুলির শব্দ পাই।
টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলির খবর পেয়েছি। সীমান্তে আমাদের বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, শাহপরীর দ্বীপের ওপারে মিয়ানমারের মংডুতে হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। সীমান্তের ওপারের গ্রামগুলোতে দেশটির জান্তা সরকার এবং আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। দু’পক্ষই ভারী অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করছে।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুর হোসাইন বলেন, নয়াপাড়া, শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের কাছাকাছি হওয়ায় স্থানীয় লোকজন ভয়ে আছেন। কেউ কেউ ফোন করছেন। স্থানীয়দের মাঝে যাতে আতঙ্ক সৃষ্টি না হয়, সে ব্যাপারে খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।
এদিকে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, সীমান্তে বিজিবি টহল ও জনবল বাড়ানো হয়েছে। পরিস্থিতি যাই হোক, সীমান্ত দিয়ে আর একজন মিয়ানমার নাগরিককেও বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না।