যুক্তরাষ্ট্রে আবার বেড়েছে মূল্যস্ফীতি
ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পেট্রল ও বাড়ির দাম বেড়েছে—সেই ধাক্কায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটির মূল্যস্ফীতির হারও কিছুটা বেড়েছে। দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩ দশমিক ২। আগের মাস, অর্থাৎ জানুয়ারিতে এই হার ছিল ৩ দশমিক ১।
পেট্রল ও বাড়ির বাড়তি দামের সঙ্গে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বিমানভাড়া, পোশাক ও গাড়িবিমার ব্যয় বেড়েছে। তবে গত কয়েক মাসে খুচরা দোকানে পণ্যের দাম বাড়লেও গত মাসে তা অপরিবর্তিত ছিল। আগের কয়েক মাসে এসব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে জনমনে অসন্তোষ ছিল।
চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে; সেই সঙ্গে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের বহুল প্রতীক্ষিত নীতি সুদহার হ্রাস নিয়ে চলছে তর্কবিতর্ক—এ পরিস্থিতিতে গত মাসে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ঘরে উঠে যায়। ফেডের লক্ষ্যমাত্রা ছিল মূল্যস্ফীতির হার ২ শতাংশের মধ্যে রাখা। ফলে ফেড আগ্রাসীভাবে নীতি সুদহার বাড়াতে শুরু করে এবং এর জেরে মূল্যস্ফীতির হার বর্তমানে ৩ শতাংশের ঘরে নেমে আসে।
অর্থনীতি–সংশ্লিষ্ট মানুষের আহ্বান ছিল, ফেডারেল রিজার্ভ যেন মার্চ মাসেই নীতি সুদহার কমায়। কিন্তু মূল্যস্ফীতি হ্রাসের হার কমে আসায় অনেকেই এখন ধারণা করছেন, জুন মাসের আগে নীতি সুদহার কমছে না।
তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও নীতি সুদহারের মধ্যেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ভালো করছে। সমস্যা হচ্ছে, মূল্যস্ফীতির হার দীর্ঘ সময় ধরে বাড়তি থাকায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজ নীতির পক্ষে ভোটারদের সমর্থন আদায় করতে পারছেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পেট্রলের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ আর বিমানের ভাড়া বেড়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে এই সময় মুদিপণ্যের দামে তেমন একটা পরিবর্তন আসেনি। ডিম, রুটি ও শস্যজাতীয় খাবারের দাম বাড়লেও মাংস ও তাজা ফলমূলের দাম কমে আসায় বাজারে কিছু পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে তেমন একটা প্রভাব পড়েনি। সামগ্রিকভাবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় মুদিপণ্যের দাম ১ শতাংশ কমেছে।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আরএসএমের প্রধান অর্থনীতিবিদ জো ব্রুসুয়েলাস বলেন, বাইরে থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে দেখলে মনে হবে, দেশটি দ্রুতই সে পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে, যে পরিস্থিতিতে সবাই বলতে পারে, পণ্যমূল্যে স্থিতিশীলতা এসেছে। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসের পরিসংখ্যানে বোঝা যাচ্ছে, সমস্যা এখনো আছে।
জো ব্রুসুয়েলাস আরও বলেন, ‘আমরা এখনো এমন পর্যায়ে যাইনি যে ফেডারেল রিজার্ভ ঘোষণা করতে পারে, পথ পরিষ্কার; অর্থাৎ নীতি সুদহার কমানোর সময় হয়েছে।’