শেষ হল না ‘স্বর্গের সিঁড়ি’, ৩০০ ফুট গভীর খাদে পড়ে মৃত্যু পর্যটকের
‘স্বর্গের সিঁড়ি’ বেয়ে উঠতে চেয়েছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত উঠতে পারলেই মিলত পুরস্কার। ৪০ মিটার উঁচু সরু সিঁড়ি বেয়ে ওঠার গা শিরশিরানি তো আছেই, শেষ পর্যন্ত উঠতে পারলে দেখা মেলে এমন এক নৈস্বর্গিক দৃশ্যের, যা ভুলিয়ে দেয় পথশ্রম, বিপদের ঝুঁকি। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি। মাঝপথে পা হড়কে প্রায় ৩০০ ফুট গভীর খাদে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হল এক ব্রিটিশ পর্যটকের।
অস্ট্রিয়ার সালজবার্গ শহরের ঠিক বাইরের ডাচস্টেইন পর্বতমালার জুয়েসেলমে এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে গত ১২ সেপ্টেম্বর। ৪২ বছর বয়সী ব্রিটিশ পর্যটকের নাম জানানো হয়নি। জানা গিয়েছে তিনি একা-একাই ওই দুর্গম পথে যাত্রা করছিলেন তিনি। তবে মাঝপথে এক জায়গায় বাতাসে ঝুলন্ত ওই মই থেকে তিনি পা পিছলে নীচের উপত্যকায় পড়ে যান।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ এবং এক জোড়া উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিল। কিন্তু, তাকে বাঁচানো যায়নি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। পরে, উদ্ধারকারীরা ওই এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, মই থেকে পড়ে গিয়েই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এর পিছনে কোনও তৃতীয় ব্যক্তির হাত নেই। বা কারও অবহেলা বা গাফিলতি নেই। দুর্ঘটনার সময় ওই পর্বতারোহী পুরোপুরি একা ছিলেন।
ডাচস্টেইন পর্বতমালার জুয়েসেলমে এলাকার নয়া আকর্ষণ হল এই স্বর্গের সিঁড়ি। পাহাড়ের গা বরাবর খাঁড়া উঠে গিয়েছে এই মই। মইটি পর্যন্ত পৌঁছতে গেলে পাহাড়ের চারটি দুর্গম ধাপ পেরিয়ে আসতে হয়। তারপর পর্বতারোহীদের জন্য অপেক্ষা করে ওই ৪০ মিটারের সিঁড়িটি। এটিই এই এলাকার প্রধান আকর্ষণ।
এই সিঁড়িটি উঠেছে ডাচস্টেইন হিমবাহের পাশ দিয়ে। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় সেই হিমবাহের পাশাপাশি, অস্ট্রিয়ার সর্বোচ্চ পর্বত, গ্রবগ্লোকনারের অপরূপ দৃশ্যও দেখা যায়। তাই সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের কাছে এই এলাকা বিশেষ আকর্ষণীয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার জন্য ছবি তোলার বিষয়ের অভাব নেই এখানে। সেই সঙ্গে, এই সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় যে অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ হয়, তার আকর্ষণও পর্বতারোহীদের কাছে কম নয়।
তবে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বারবার জানিয়েছে, এই পথে পাহাড়ে চড়তে গেলে পর্বতারোহণে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা থাকা দরকার। উচ্চতার কারণে ওই এলাকায় আবহাওয়া অত্যন্ত হালকা। তাই অক্সিজেনের মাত্রা অত্যন্ত কম। এই পরিস্থিতিতে কী করা উটিত, তা একমাত্র অভিজ্ঞ পর্বতারোহীরাই জানেন। তাই, শুধুমাত্র ইনস্টাগ্রামে ছবি পোস্ট করার লোভে আনকোরা কেউ চলে এই সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গেলে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। কারণ নীচে অপেক্ষা করে গভীর খাদ।