Bangladesh

সীতাকুণ্ডে কুমিরা ঘাটে ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার৯

জাহাজ চলাচল বন্ধ হওয়ায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরা নৌঘাটে বিআইডব্লিউটিসির ভবনের জানালার কাচ ও আসবাব ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরা নৌঘাটে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ভবন ভাঙচুর করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক নয়ন শীল বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন মো. তৌহিদ (৩৭), মো. জিন্নাত (২২), মো. ফরহাদ (৩০), কামরুল হাসান (১৯), সাজ্জাদ হোসেন (১৯), মো. রাকিব (২২), মো. আবদুল রহমান (২২), জহিরুল ইসলাম (২২) ও টিপলু চন্দ্র সাহা (২৫)। তাঁদের বাড়ি সন্দ্বীপের বিভিন্ন ইউনিয়নে। গতকাল বুধবার ভাঙচুরের ঘটনায় তাঁদের আটক করা হয়েছিল।

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর ও লুটপাট করার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে। আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গতকাল বুধবার বিআইডব্লিউটিসির যাত্রীবাহী জাহাজ এমভি আইভী রহমান ধারণক্ষমতা ৫০০। তবে ঈদ উপলক্ষে জাহাজটি এক হাজার যাত্রী নিয়ে সন্দ্বীপের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সাগর উত্তাল এবং ৩ নম্বর সংকেত থাকায় বিআইডব্লিউটিসি জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেয়। বেলা আড়াইটার দিকে টিকিট কাউন্টার থেকে ব্যবস্থাপক আবদুল বাকের জাহাজ চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন। তখন আসামিরা বেআইনিভাবে বিআইডব্লিউটিএর সরকারি কার্যালয় ভাঙচুর করে টিকিট কাউন্টারে প্রবেশ করে। সিসি ক্যামেরা, আসবাবপত্র ও জানালা ভাঙচুর করে। এতে ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। পাশাপাশি নৌঘাটের ঈদের আঁধারের ক্যাশ বাক্স থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা লুট করা হয়।

যাত্রী,  প্রত্যক্ষদর্শী ও ঘাটের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার আবহাওয়া খারাপ থাকায় নৌযান কম চলাচল করে। অনেক যাত্রী ওই দিন সন্দ্বীপ যেতে পারেননি। পরদিন বুধবার কুমিরা ঘাটে যাত্রীর চাপ বাড়ে। ভোরে ঘাটে এসে টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়ায় লোকজন। সকাল ছয়টার দিকে কাঠের কয়েকটি ট্রলারে করে অন্তত এক হাজার যাত্রী পার হন। আরও প্রায় আড়াই হাজার যাত্রী ঘাটে এসে পৌঁছান। সকাল ৯টার দিকে বিআইডব্লিউটিএর জাহাজ এসে ভেড়ে। ১ হাজার যাত্রী নিয়ে জাহাজটি ১১টার দিকে সন্দ্বীপের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে টিকিট দেওয়া বন্ধ ছিল। সকাল থেকে লাইনে থাকা যাত্রীরা সামনে টিকিট কাউন্টারের কাছে এসেও আরও সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করিছিলেন। আড়াইটার দিকে ঘোষণা দেওয়া হয়, জাহাজ আর চলাচল করবে না। আর কোনো নৌযানও ছাড়বে না। কয়েকজন যাত্রী উত্তেজিত হয়ে ঘাটের লোকজনকে গালমন্দ করেন। হঠাৎ করে ভাঙচুর শুরু করেন কয়েকজন। এ সময় সিসিটিভি ক্যামেরা, আসবাবপত্র ও ক্যাশ কাউন্টার ভাঙচুর করা হয়।

পরে নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা যাত্রীদের থামানোর চেষ্টা করেন। এ সময় ঘাটের লোকজনের সঙ্গে যাত্রীদের মারামারি শুরু হয়। উভয়পক্ষের চারজন আহত হন। পরে সীতাকুণ্ড থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। ঘাটের লোকজন নয়জনকে পুলিশে সোপর্দ করে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button