৫৮মিটার সড়কের জন্য প্রতিদিন দুর্ভোগে শতশত রোগী
* ১৯৮৫ সালের পর আরসংস্কার হয়নি * সড়ক যেন ভরাট করা কোনো খাল * পানি জমে থাকে প্রায়ই * রোগী নিয়ে গাড়ি, অ্যাম্বুল্যান্স এসে বিপদে পড়ে
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের সড়ক কাঁচা। প্রায় সময় জমে থাকে পানি।
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা সদরে প্রেস ক্লাব মোড় থেকে স্বাস্থ্য প্রকল্পের হাসপাতালে প্রবেশের সড়কটির দৈর্ঘ্য মাত্র ৫৮ মিটার। এই সড়কটির দুরবস্থার কারণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসা ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী, তাদের স্বজন ও স্থানীয় জনসাধারণ।
জানা যায়, স্বাস্থ্য প্রকল্পে প্রবেশের গেট পর্যন্ত ৫৮ মিটার সড়কটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিজস্ব জায়গায়। ১৯৮৪-৮৫ খ্রিস্টাব্দে বারহাট্টায় ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার সময় সড়কটিতে ইটের সলিং ও দুই পাশে আরসিসি খুঁটি পুঁতে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়।
এরপর সড়কটির আর কোনো উন্নয়ন বা সংস্কারকাজ হয়নি।
বর্তমানে কাঁটাতারের বেড়ার কোনো চিহ্নই চোখে পড়ে না। সড়কের একটি অংশে বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে।
নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় জমে থাকা পানিতে মশা বংশবিস্তার করে। সলিংয়ের উঁচু-নিচু ইটের খোয়াও দুর্ভোগের কারণে পরিণত হয়েছে। প্রচণ্ড ঝাঁকুনির কারণে যেকোনো যানবাহনে চড়ে আসা রোগীদের কষ্ট আরো বেড়ে যায়। হাসপাতালকে কেন্দ্র করে সড়কের দুই পাশে অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
প্রতিষ্ঠান মালিকরা তাঁদের নিজ নিজ জায়গা উঁচু করে ভবনাদি নির্মাণ করেছেন। ওই সব ভবনের ভিটির উচ্চতার তুলনায় সড়ক অনেকটা নিচু। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, এই সড়ক যেন ভরাট করা কোনো খাল।
স্থানীয় মো. লুত্ফুর রহমান খান বলেন, ‘হাসপাতালে প্রবেশের সড়কটি বেহাল দীর্ঘদন ধরে। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কটির বিভিন্ন অংশে পানি জমে।
জমে থাকা পানিতে মশা উড়তে দেখা যায়। মাঝেমধ্যে আমরা স্থানীয়রা বালু দিয়ে সড়কের গর্ত ভরাটের ব্যবস্থা করি। এতে তেমন কোনো কাজ হয় না।’
সড়কের পাশের একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী সাবেক ডিএডি মুক্তিযোদ্ধা মো. নূর উদ্দিন বলেন, ‘হাসপাতালে প্রবেশের সড়কে আসা-যাওয়ার পর জটিল রোগীদের অবস্থা আরো খারাপ হয়। গেটের সামনের অংশটুকু খুবই বিপজ্জনক। রোগী নিয়ে আসা গাড়ি, অ্যাম্বুল্যান্স, রিকশা প্রভৃতি এই জায়গাটায় এসে বিপদে পড়ে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘গড়ে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। সড়কের দুরবস্থার কারণে তাদের খুবই কষ্ট হয়। জটিল রোগীদের বেশি সমস্যা পোহাতে হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) অমিত চন্দ্র দে বলেন, ‘রাস্তাটির কোড নম্বর না থাকায় উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ব্যাহত হয়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের দুর্ভোগ দেখে সড়কটির ব্যাপারে কথা বলার জন্য আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এলজিইডির সদর দপ্তরে বহুবার গিয়েছি। বর্তমানে এই সড়কের ফাইলটি এলজিইডি সদর দপ্তরে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। আশা করি ঈদের পরপরই অনুমোদন হয়ে যাবে।’