International

আইসিজে কি আজ ইসরাইলের বিরুদ্ধে রায় দেবে?

আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) আজ শুক্রবার ইসরাইলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা গণহত্যার মামলার অন্তর্বর্তী রায় দেবে। এই রায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে যায় কিনা সেটা দেখার জন্য সারা দুনিয়া উৎসুক হয়ে রয়েছে।

ইসরাইল সত্যিই গণহত্যার জন্য অভিযুক্ত কিনা সে রায় আইসিজে আজ দেবে না। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা অন্তর্বর্তী রায় দেয়ার জন্য আদালতের কাছে অনুরোধ করেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা অন্তর্বর্তীকালীন যেসব বিষয়ে রায় চেয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের অভিযান অবিলম্বে বন্ধ করা এবং গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশে বাধা না দেয়া।

ইসরাইল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা উভয়েই আইসিজের সদস্য হওয়ায় তারা এই আদেশ মানতে বাধ্য। আর অন্তর্বর্তী আদেশও ইসরাইলের জন্য বড় ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে।

আইসিজে দক্ষিণ আফ্রিকার সকল অনুরোধ মানতে পারে। আবার সবই প্রত্যাখ্যান করতে পারে।

অনেক পর্যবেক্ষকই বলছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা খুবই জোরালোভাবে মামলাটি উত্থাপন করেছে। ফলে তাদের পক্ষেই রায় যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নেদারল্যান্ডসের হেগে স্থানীয় সময় শুক্রবার ১টায় প্রকাশ্য আদালতে এই রায় দেয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, আইসিজেতে এখনো মূল গণহত্যার অভিযোগের শুনানি হয়নি। এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। তবে অন্তর্বর্তী আদেশ দিতে পারে আইসিজে। ইসরাইল অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার মুখপাত্র এক্স পোস্টে জানিয়েছেন, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যালেদি প্যান্ডর আদেশের সময় হেগে উপস্থিত থাকবেন।

উল্লেখ্য, মামলার আবেদন করার সময় আবেদনপত্রের সাথে ৮৪ পৃষ্ঠার একটি নথি সংযুক্ত করে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গাজায় ইসরাইলি বাহিনী আন্তর্জাতিক অপরাধ, যেমন মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ, এর পাশাপাশি গণহত্যা বা এ সম্পর্কিত অপরাধের সীমারেখা লঙ্ঘন করেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। আবেদনে আরো বলা হয়েছিল, ইসরাইলের এই আচরণ গণহত্যামূলক। কারণ তারা ফিলিস্তিনি জাতির একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্য নিয়েই হামলা চালাচ্ছে।

গত ৩০ তারিখ আবেদনপত্র জমা দেয়ার সময় আইসিজেকে দ্রুত এ বিষয়ে শুনানির অনুরোধ করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েই ১১ জানুয়ারি শুনানি শুরুর দিন ধার্য করা হয়।

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে হামাস যোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বিমানবাহিনী। ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থলবাহিনীও। ইসরাইলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ২৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু, অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন। এ ছাড়া হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর-সহায়সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে। অন্য দিকে হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরাইলে নিহত হয়েছিলেন একে হাজার ২০০ জন ইসরাইলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক।

আইসিজের স্থায়ী বিচারপতির সংখ্যা ১৫। তবে মামলার দুই পক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইসরাইল একজন করে অস্থায়ী বিচারপতি পাঠাতে পারে।

এই আদালতের বর্তমান সভাপতি হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের জুয়ান ডোনোহুই। অন্য বিচারপতিরা হচ্ছেন ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, স্লোভাকিয়া, জ্যামাইকা, জাপান, ব্রাজিল, রাশিয়া, চীন, মরক্কো, সোমালিয়া, লেবানন ও উগান্ডার।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button