আসছে নতুন স্পেসস্যুট, মূত্র থেকে তৈরি হবে পানি
কয়েক বছর ধরেই মানুষকে চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহে নিয়ে যাওয়ার অনেক কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু ঘোষণা করলেই তো চলবে না, মহাকাশে দূরের পথ পাড়ি দিতে প্রয়োজন বিশেষ ধরনের পোশাক বা স্পেসস্যুট। ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে মানুষ মহাকাশে পা রেখেছেন, সেই সময় চাঁদের বুকেও হেঁটেছেন মানুষ। এরপর মহাকাশচারীদের স্পেসস্যুট নিয়ে তেমন অগ্রগতি হয়নি।
সম্প্রতি নতুন করে চন্দ্র জয় ও মঙ্গল জয়ের লক্ষ্যে নতুন স্পেসস্যুট নকশার কাজ চলছে। নতুন স্পেসস্যুট নাসার আর্টেমিস কর্মসূচিতে মহাকাশচারীরা পরতে পারেন। আর্টেমিস কর্মসূচিতে নাসা চন্দ্রের দক্ষিণ মেরুতে নভোচারী অবতরণ করতে চায়। একই অভিযানের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে মানুষকে মঙ্গল গ্রহে পাঠানোর কাজ চলছে।
চন্দ্রবুকে যেতে মানুষের তিন দিনের মতো সময় লাগে। কিন্তু মঙ্গল গ্রহে যেতে মানুষের ২৭০ দিনের মতো সময় লাগবে। দীর্ঘ সময়ের জন্য মহাকাশ ভ্রমণের জন্য বিশেষ ধরনের স্পেসস্যুটের প্রয়োজন পড়বে। মঙ্গল গ্রহে যাওয়াটাই মহাকাশচারীদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। দীর্ঘ সময়ের জন্য মহাকাশে চলার সময় পানির সরবরাহ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
বিজ্ঞান কল্পকাহিনির সিনেমা ডিউনের স্টিলসুটসের মতো যুগান্তকারী স্পেসস্যুট নির্মাণ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে চন্দ্রাভিযানে মহাকাশে নভোচারীর হাঁটার ক্ষমতায় নতুন এই স্পেসস্যুট বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। এটি মানব মূত্র সংগ্রহ করে পরিশুদ্ধের পর পানিতে পরিবর্তন করতে পারে। আর্টেমিস অভিযানে এই স্পেসস্যুট ব্যবহার করা হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েইল কর্নেল মেডিসিন ও কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা স্যুটটি তৈরি করছেন। স্যুটে একটি বায়ুশূন্য বাহ্যিক ক্যাথেটার আছে। এ ছাড়া একটি সম্মিলিত ফরোয়ার্ড-রিভার্স অসমোসিস ইউনিট রয়েছে, যা মূত্র সংগ্রহ করে পাঁচ মিনিটের মধ্যে পানিতে রূপান্তর করতে পারে। এটলিন বলেন, মহাকাশচারীদের বর্তমানে ইন-স্যুট ড্রিংক ব্যাগে মাত্র এক লিটার পানি পাওয়া যায়। চাঁদে দীর্ঘক্ষণ হাঁটার জন্য এই পানি অপর্যাপ্ত। মহাকাশে হাঁটা ১০ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত চলতে পারে।
বর্তমানে ম্যাক্সিমাম অ্যাবজর্ভেন্সি গার্মেন্টস হিসেবে যেসব পোশাক ব্যবহার করা হচ্ছে, তা মহাকাশচারীদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করছে। নতুন স্পেসস্যুটের ওজন প্রায় আট কেজি হবে। এই স্পেসস্যুট নভোচারীদের জন্য আরামের হবে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা। এখন সিমুলেটেড মাইক্রোগ্র্যাভিটি (প্রায়শূন্য মাধ্যাকর্ষণে) পরিবেশে নতুন এই স্পেসস্যুটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করবেন গবেষকেরা।