আসছে মার্কিন ঝড় এই ঝড় কাকে কোথায় নিয়ে ফেলবে কেউ জানে না
মার্কিন ঝড় আসছে। এই ঝড় কাকে কোথায় নিয়ে ফেলে দেবে কেউ জানে না। এ মন্তব্য করেছেন জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ) চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।
গতকাল শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সেমিনারের আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘পলিটিসাইজেশন অব জুডিশিয়ারি : সাইলেন্সিং ডিসেন্ট ভয়েজেস’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে সুপ্রিম কোর্ট সংবিধান সংরক্ষণ কমিটি। সংগঠনের আহ্বায়ক শাহ আহমেদ বাদলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। অতিথি হিসেবে সরকার বিরোধী আইনজীবী সংগঠনের মোর্চা ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্ট’র আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক,রাষ্ট্রবিজ্ঞানীয় অধ্যাপক ড. নূরুল আমীন বেপারী, গণ অধিকার পরিষদ’র (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক নূর, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি-অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, বিএনপি’র আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রূহুল কুদ্দুস কাজল প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
পঠিত প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, আজকে যে মার্কিন বাই পার্টিজান প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন টিম ঢাকায় এসে পৌঁছেন। তারা ১২ তারিখ পর্যন্ত এসেছেন তারা মূল্যায়ন অধ্যায়ন পরিচালনা করবেন। ফিরে গিয়ে তারা তাদের মতামত ব্যক্ত করবেন। আপনাদের নিশ্চয় রিচার্ড নেফিউ মহোদয়ের কথা মনে আছে। গ্লোবাল কো-অর্ডিনেটর মার্কিন প্রশাসনের নার্ভ সেন্টার এন্টিকরাপশনের ড্রাইভেন মুভ আছে।
তিনি আমাদের পররাষ্ট্র সচিবকে সঙ্গে নিয়ে যে জানান দিয়েছেন সেটি হচ্ছে স্যাংশন হতে পারে দুর্নীতি নিবারনের বড় হাতিয়ার। তার মডেল বা টেস্ট কেস হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে নিউইয়র্ক থেকে তার একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। শিরোনাম হচ্ছে ‘দ্য আর্ট অব স্যাংশন্স’। তার যে ফিল্ড এক্সপেরিয়েন্স আছে তার ওপর ভিত্তি করে এটি রচনা করেছেন। এর নিরিখে প্রচুর কাজ হচ্ছে। মজার বিষয় হচ্ছে, পৃথিবীর সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্র হচ্ছে বাংলাদেশ। আমরা পছন্দ করি আর না করি।
এর যে মোদ্দা ম্যাসেজ তাহলো, উদ্দেশ্য দু’টি। এক, এটি যাতে ব্যথা অনুভব করেন। সেরকম একটি বিষয়। আরেকটি হচ্ছে রিজলভ। অর্থাৎ মার্কিনীদের যে রিজলভটা আছে সেটি যেন আমরা অনুভব করতে পারি। এই দ্বিবিধ চিন্তা নিয়ে তারা কিন্তু এই স্যাংশন, ভিসা ডিক্টম থেকে শুরু করে ভিসার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এ মাসে আরও বেশ কিছু এ ধরণের মেজরের আমরা সম্মুখিন হতে যাচ্ছি বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করেন। এই নিরিখে আমাদের প্রবীণ সম্পাদক দৈনিক কালবেলার আবেদন খান মহোদয় একটি সম্পাদকীয় হাজির করেছেন, ‘মার্কিন ঝড় আসছে’। তিনি তার দায়িত্ব পালন করেছেন। এই ঝড় কতদূর প্রভাব বিস্তার করেছে। কাকে কোথায় নিয়ে ফেলে- কে জানে না ! তার সম্পাদকীয়র নিরিখে যেটি বলতে চাই, যে ভিসা ডিক্টম অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন মহোদয় ঘোষণা করেছেন। পরবর্তীতে ম্যাথিও মিলার মহোদয় তা কার্যকর করার প্রক্রিয়ার জানান দিয়েছেন। তার ওপর ব্রায়ান মহোদয় বলেছেন, ‘অ্যানি ওয়ান ক্যান বি ইনক্লুডেড’। এই যে ১৭ কোটি দেশের ভেতর রেসিডেন্ট কিংবা নন- রেসিডেন্ট (এনআরবি) বাংলাদেশী সবাই কিন্তু তাত্ত্বিকভাবে রয়েছেন সবাই কিন্তু এর মধ্যে রয়েছে। মূল বিষয়টি হচ্ছে, অবাধ,সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণ মূলক, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন। আল্টান্টিকের এই পাড়ে বৃটেন যে কয়েনিস্টদের নিয়ে কাজ করছে সেটি হলো অংশগ্রহণমূলক বা পার্টিসিপেটরি নির্বাচন। আর ওই পারে মার্কিনীরা বলতে চেষ্টা করছেন অন্তর্ভুক্তিমুলক বা ইনক্লুসিভ নির্বাচন। এই যে প্রত্যয় ও বিশেষণগুলো তারা হাজির করছেন সেগুলো যদি পরিপূরণ না ঘটে বা না করা যায় তাহলে কিন্তু নির্বাচনটি হবে অতিঅবশ্যই ফ্রড, ত্রুটিপূর্ণ এবং লেজিটেমিসি সঙ্কট কিন্তু কাটবে না। ২০১৪ এবং ২০১৮ তে যেভাবে বৈতরণী পার হওয়া গেছে কোনো অবস্থায় অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন তেমনটি হবে না। এটি নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ আছে বলে মনে হয় না। এমনকি শাসক দলের নেতৃবৃন্দ তাদের মাথায় কেউ সচেতন ভাবে কেউ অচেতনভাবে এটি কগনিজেন্সে নিয়েছে। ৩২টি দেশ। ইউরোপের-২৭, বৃটেন ২৮, কানাডা-ইউএসএ ৩০, নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া-৩২। আনজুসভুক্ত দেশ, ন্যাটোভুক্ত দেশ। এরা সম্মিলিতভাবে এক রায়ে কথা বলা শুরু করবে। সে অনুযায়ী কাজ করা শুরু করবে। সমগ্র বিশ্বের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমরা দেখেছিলাম, সকল ফ্রন্ট ওপেন করে ফেলেছিলেন হিটলার। তার যে তনুবপু ছিলো এটি কি আমাদের কি আছে ? সুতরাং সাধু সাবধান।