Bangladesh

আ.লীগ নেতাকে সোয়া লাখ ডলার ঘুষ দিয়ে সিঙ্গাপুর পালান বেনজীর

গণমাধ্যমে দুর্নীতির তথ্য প্রকাশের পর পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ সপরিবারে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান। ত ৪ মে তাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী এক মন্ত্রী ও দলটির নেতা। এর জন্য বেনজীরকে খরচ করতে হয়েছে সোয়া লাখ ডলার। এ ছাড়া পুলিশে উচ্চপদস্থ অন্তত ১০ কর্মকর্তাও বেনজীরকে সহায়তা করেছেন। পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ যা করেছেন, তা ছিল কল্পনাতীত। তার নানা অপকর্মে পুলিশের অন্তত ১০ শীর্ষ কর্তা সহায়তা করেছেন। তারা অতিরিক্ত আইজিপি, উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি), অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ সুপার (এসপি), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার কর্মকর্তা। আইজিপি

থাকাকালে তারা নানাভাবে বেনজীর আহমেদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছিলেন। দেশ ছেড়ে পালানোর সময় তিনি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অবহিত করেন। ডিএমপি কমিশনার, র‌্যাব মহাপরিচালক ও আইজপি থাকাকালে সরকারকে ক্ষমতায় বসাতে নানাভাবে সহায়তা করায় শীর্ষমহল তার ওপর খুশি ছিল। যার কারণে তাকে দেশের বাইরে চলে যাওযার অনুমতি দেওয়া হয়। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বেনজীর আহমেদকে পালাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বুঝিয়ে রাজি করান প্রভাবশালী সাবেক এক মন্ত্রী। এর জন্য ওই মন্ত্রীকে অন্তত সোয়া লাখ ডলার দিতে হয়েছে। সাবেক ওই মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা এখন পলাতক।

সিঙ্গাপুর যাওয়ার পর সেখানে বসেই বাংলাদেশের দূতাবাস থেকেই তুরস্কের ভিসা করে ফেলেন। বর্তমানে তিনি তুরস্কেই অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। তুরস্কের ভিসা পেতেও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা। এ জন্য তাঁকে সহযোগিতা করেছে ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগের দুজন অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তা। 

বেনজীর সিঙ্গাপুরে যাওয়ার আগে তার স্ত্রী জীসান মির্জা ও তিন মেয়েকে পাঠিয়ে দেন সেখানে। যেদিন তিনি দেশ ছাড়েন, ওইদিন শাহজালালের ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা সঙ্গে ছিলেন। বিমানে ওঠার আগমুহূর্ত পর্যন্ত তারা বেনজীরের সঙ্গেই ছিলেন।

গত মার্চে একটি জাতীয় দৈনিকে বেনজীরের দুর্নীতির নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ২৩ মে আদালত তার ও পরিবারের সদস্যদের সম্পদ জব্দের নির্দেশ দেয়। এরপর দুর্নীতি দমন কমিশন বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের তলব করলেও তারা হাজির হননি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের তালিকার বাইরেও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের আরও সম্পদ ও ব্যাংক হিসাবের সন্ধান মিলেছে। তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরও দুর্নীতির তথ্য মিলছে। সাবেক পুলিশপ্রধানের পাহাড়েও সম্পদের সন্ধান মিলছে। অথচ দায়িত্বে থাকাকালে বেনজীর আহমেদ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।

সূত্র জানায়, গোপালগঞ্জ ও তার শ্বশুরবাড়ির দুই ব্যক্তি তুরস্কে আছেন। তারা একসময় পুলিশ ও র‌্যাব সদর দপ্তরে ঠিকাদারি কাজ করতেন। তারা বেনজীর আহমেদকে দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ কামিয়েছেন।

২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন বেনজীর আহমেদ। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র‌্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বেনজীরসহ র‌্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়। ওই সময় আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor