ইতালির মেলোনির ‘নতুন পদ্ধতি’র প্রথম শিকার ১০ বাংলাদেশি
আলবেনিয়ার বন্দিশিবিরে নেওয়া হচ্ছে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের
সমুদ্রপথে ইতালিতে যাওয়ার চেষ্টাকালে আটক ১০ বাংলাদেশির ঠাঁই হচ্ছে আলবেনিয়ার বন্দিশিবিরে। সোমবার ইতালি কর্তৃপক্ষ তাদের প্রথমবারের মতো আলবেনিয়ার হাতে তুলে দেয়। আটক অভিবাসনপ্রত্যাশীর মধ্যে বাংলাদেশি ছাড়া আরও ছয় মিসরীয় রয়েছেন। সম্প্রতি ইতালির ডানপন্থি সরকারের প্রধান জর্জিয়া মেলোনি আলবেনিয়ার সঙ্গে বিতর্কিত এক চুক্তি করেন। ওই চুক্তির ভিত্তিতে ইতালিগামী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ভূমধ্যসাগর থেকেই আলবেনিয়ার বন্দিশিবিরে নেওয়া হচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার এএফপির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। এতে বলা হয়, নানা সমালোচনার তোয়াক্কা না করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন মেলোনি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এই ১৬ বন্দিকে আলবেনিয়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আজ বুধবার সেখানে তাদের পৌঁছার কথা। মেলোনি তাঁর এ অভিবাসনবিরোধী নীতির সমর্থনে বলেন, এটি নতুন, সাহসী ও অভূতপূর্ব একটি পদ্ধতি। কিন্তু এটি ইউরোপীয় মনোভাবকে প্রকাশ করে। ইউরোপীয় যারা নন, তাদেরও উচিত এ পদ্ধতি অনুসরণ করা।
চলতি সপ্তাহে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্মেলনে অভিবাসনের মতো বিষয় নিয়ে জোরালো আলোচনা হয়। সদস্য দেশগুলোকে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডের লেয়েন বলেন, ইউরোপের উচিত আলবেনিয়ার কাছ থেকে শেখা।
সূত্র জানায়, আলবেনিয়ায় অন্তত দুটি বন্দিশিবির ইতালির আইনে পরিচালিত হচ্ছে। সেখানে কাজ করছেন ইতালির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও স্টাফরা। রোম থেকে বিচারকরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নিচ্ছেন। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রশ্ন, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সুরক্ষায় কি এসব বন্দিশিবিরে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে?
মানবাধিকার সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির ইতালি শাখার পরিচালক সুসানা জ্যানফ্রিনি বলেন, আলবেনিয়ায় নতুন বন্দিশিবিরে যাওয়া প্রথম অভিবাসনপ্রত্যাশীরা ভয়ংকর রাজনৈতিক নিরীক্ষার চেয়ে ভালো কিছু প্রত্যাশা করে।
দীর্ঘদিন ধরে ভূমধ্যসাগর পার হয়ে ইতালির মধ্য দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করে আসছেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। ২০২৩ সালে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী আদি রামার সঙ্গে বন্দিশিবির প্রতিষ্ঠা করতে চুক্তি সই করেন। এ নিয়ে রোমে ইতালির সিনেটে মেলোনি বলেন, তাঁর সরকার অন্য দেশগুলোর জন্য ‘ভালো নজির’ স্থাপন করতে যাচ্ছে। তবে আদি রামা মঙ্গলবার লুক্সেমবার্গে বলেছেন, অন্য দেশগুলো সহজে এমনটা করবে বলে তাঁর মনে হয় না। পাঁচ বছরের এ চুক্তিতে বন্দিশিবির চালাতে প্রতিবছর ইতালির খরচ হতে পারে ১৬ কোটি ইউরো।