Trending

উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় শিল্পোদ্যোক্তারা

ডলারের উচ্চমূল্যে বেড়েছে কাঁচামাল আমদানি ব্যয়, কমেছে উৎপাদন, আবারও গ্যাসের দাম বাড়ালে বন্ধ হতে পারে অনেক শিল্প

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে স্বৈর সরকারের বিদায়ের সাত মাস পেরোলেও উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা কাটছে না শিল্পোদ্যোক্তাদের। কয়েক বছর ধরে টাকার বিপরীতে ডলারের উচ্চমূল্যের কারণে বেড়েছে শিল্পের কাঁচামাল আমদানির খরচ। অথচ কমেছে শিল্প খাতের উৎপাদন। এ ছাড়া বেশি দামেও প্রয়োজনীয় ডলার মিলছে না ব্যাংক খাতে এমন অভিযোগও রয়েছে দীর্ঘদিন থেকেই।

এদিকে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রতি ডলার এখনো ১২২ টাকার কমে পাওয়া যায় না। ব্যাংকের বাইরে ১২৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে আসন্ন গ্রীষ্ম মৌসুমে শিল্পের সম্ভাব্য লোডশেডিং আগেভাগেই চিন্তায় ফেলেছে শিল্প মালিকদের। এ ছাড়া এর সঙ্গে বাড়তি যোগ হয়েছে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব। ফলে শিল্পোদ্যোক্তাদের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা কাটছে না কিছুতেই।

উদ্যোক্তারা বলছেন, রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল না হওয়ায় এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে শিল্প খাতে লেগে আছে নানা অনিশ্চয়তা। এবার যোগ হয়েছে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনিশ্চয়তা। অনেকেই তাকিয়ে আছেন নির্বাচিত সরকার এলে নতুন করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু সে নির্বাচন আদৌ ঘোষিত সময়ের মধ্যে হবে কিনা তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শিল্প ও সামগ্রিক অর্থনীতিতে।

বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, গ্যাসের বর্তমান দাম কমানোর উপায় নিয়ে গবেষণা করা দরকার। কমিশন খাওয়ার জন্য স্পট মার্কেট থেকে গ্যাস কিনতে অস্থির ছিল বিগত সরকারের মুষ্টিমেয় লোকজন। তাদের কেউ কেউ এখনো বিদেশে পালিয়ে থেকে কমিশন খাচ্ছে। এই মুহূর্তে গ্যাসের দাম কমানো না গেলে শিল্প খাত টিকতে পারবে না। অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এসেও বিইআরসি উল্টো গ্যাসের দাম বাড়ানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্যমতে, গত এক দশকে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎপাদনমুখী বা মেনুফ্যাকচারিং শিল্পের অবদান তার আগের ১০ বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।

২০২৪ সালের শুমারির প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে শিল্প খাতের অবদান ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। ২০১৩ সালের প্রতিবেদনে এই হার ছিল ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। যার ফলে কমে গেছে কর্মসংস্থানও।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসরুর রিয়াজ বলেন, এখনকার চ্যালেঞ্জিং সময়ে গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করা হলে উৎপাদনমুখী খাতে পণ্য উৎপাদনের ব্যয় বাড়বে। কমবে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা। নতুন বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একই সঙ্গে সিমেন্ট, ইস্পাত ও সিরামিক খাতে নতুন করে আমদানিনির্ভরতা বাড়বে। ফলে আর্থিক খাতে চাপ পড়বে। আমদানি বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রা বেশি লাগবে। আবার গ্যাসের দাম বাড়লে অনেক শিল্প বন্ধ হয়ে যাবে, তখন মন্দ ঋণ আরও বাড়বে। এ জন্য শিল্পোদ্যোক্তাদের দাবি উপেক্ষা করে এই মুহূর্তে গ্যাসের দাম না বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।

জানা গেছে, শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত বয়লারে এবং শিল্পকারখানার নিজস্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্রে (জেনারেটর) বা ক্যাপটিভে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বয়লারে প্রতি ঘনমিটারে গ্যাসের দাম ৩০ টাকা এবং ক্যাপটিভে ৩১ টাকা ৫০ পয়সা।

সরকারের পক্ষ থেকে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির যুক্তি হিসেবে দেখানো হয়, গ্যাসের দাম বাড়ালে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করতে গিয়ে চলতি বছর সরকারকে বিশাল অঙ্কের ভর্তুকি গুনতে হবে। বর্তমানে দেশে গ্যাসের চাহিদা আছে ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। দেশি গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে আসছে অর্ধেকের মতো। আর ২৫ শতাংশ এলএনজি আমদানি করে জোগান দেওয়া হচ্ছে। এতে অনেক টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। আবার জ্বালানি খাত থেকে ভর্তুকি পুরোপুরি তুলে দিতে আইএমএফেরও চাপ রয়েছে। তবে এ নিয়ে গণশুনানির সময় প্রবল আপত্তি আর হট্টগোল হওয়ায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সরকার।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports