Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Science & Tech

এক্স-রের পরিচয় সংকট ও তার সমাধান

আবিষ্কারের পর পরিচয়-সংকটে পড়েছিল এক্স-রে বা এক্স রশ্মি। এক্স-রেকে কেউ কেউ কণা মনে করতেন, কেউ কেউ মনে করতেন তরঙ্গ। কিন্তু দিন যত এগোয়, গবেষণা যত বাড়ে, তরঙ্গবাদীদের ভিত তত মজবুত হয়। বিজ্ঞানীরা মেনে নিতে বাধ্য হন, এক্স-রে আসলে তরঙ্গধর্মী।

তরঙ্গধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য দরকার ডাবল স্লিট পরীক্ষার। এ পরীক্ষায় উতরে যায় এক্স-রশ্মি। বিজ্ঞানীরা স্বীকার করে নিলেন, আলো আসলে তরঙ্গ। কিন্তু এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য খুব ছোট।

তাই সমস্যা হলো, ডাবল স্লিটের পরীক্ষায় খুব ভালো ফল পাওয়া যায় না। তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত কম হবে, ডাবল স্লিটের পরীক্ষায় দুটি ছিদ্রের মধ্যে দূরত্ব তত কম হতে হবে, নইলে ব্যতিচার নকশা তত অনুজ্জ্বল হবে। সুতরাং সাধারণ ডাবল স্লিটের পরীক্ষায় এক্স-রশ্মির ইন্টারফারেন্স পরীক্ষায় ভালো ফল পাওয়া মুশকিল। তখন এক্স-রে তরঙ্গবাদীরা অন্য চিন্তা করলেন।

কাচের প্লেটের ওপর পাশাপাশি দুটো আঁচড় কেটে তৈরি করলেন অপবর্তন গ্রেটিং। এর সাহায্যে অনেক ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোরও ব্যতিচার ঘটানো যায়। আমরা আগেই দেখেছি, একেক রকম ধাতু থেকে একেক তরঙ্গদৈর্ঘ্যের এক্স-রে নির্গত হয়। যেগুলো মোটামুটি বড় তরঙ্গদৈর্ঘ্যের, তাদের নিয়ে কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু যেসব এক্স-রের তরঙ্গদৈর্ঘ্য অত্যন্ত ক্ষুদ্র, সেগুলোর ক্ষেত্রে অপবর্তন গ্রেটিংয়েও ভালো কাজ হয় না।

তখন অপবর্তন গ্রেটিংয়ের কীভাবে দুই ছিদ্রের মধ্যে ব্যবধান কমানো যায়, তা নিয়ে চলে বিস্তর গবেষণা, এমন কোনো ক্ষুদ্র ব্যবস্থা কি তৈরি করা যায়?

জার্মান পদার্থবিদ ম্যাক্স ভন লু তখন নতুন পথ বাতলে দিলেন। বললেন, কাচের প্লেটের ওপরেই অপবর্তন গ্রেটিং তৈরি করতে হবে তার কোনো মানে নেই। বরং আমরা সহজ পথ খুঁজতে পারি। আর সেই সহজ পথটা তৈরি হয়েই আছে। কী সেই পথ?

সেগুলো হলো বিভিন্ন পদার্থের স্ফটিক, যাকে বেশির ভাগ মানুষ ক্রিস্টাল বলে চেনে। একটা বস্তু কখন ক্রিস্টাল তৈরি করে? যখন বস্তুর ভেতর অণুগুলো একটা নির্দিষ্ট সজ্জায় থাকে। অর্থাৎ বস্তুর সবগুলো অণুর মধ্যে বন্ধন একই রকম। যেদিক থেকেই দেখুন, অণুগুলোর সজ্জা একই রকম দেখবেন।

তরল পানিতে একটা অণুর সঙ্গে আরেকটা অণুর বন্ধন সুষম নয়। একেক জায়গায় একেক রকম। কিন্তু বরফের ভেতর পানির অণুগুলোর মধ্যে বন্ধন একেবারে সুষম। তাই বরফখণ্ডগুলো একেকটা ক্রিস্টাল বা স্ফটিক। ক্রিস্টালের ভেতর পরমাণুগুলো সজ্জিত থাকে স্তরে স্তরে। দুটি স্তরের মধ্যে তাই খুব সূক্ষ্ম ফাঁক থাকে। এ জন্যই ক্রিস্টালগুলোর ঘনত্ব তুলনামূলক কম থাকে। ক্রিস্টালের ভেতর পরমাণুর সজ্জা এই যে দুই স্তর মধ্যে যে সূক্ষ্ম ফাঁক, এগুলোকে অপবর্তন গ্রেটিংয়ের আঁচড়ের মতো ব্যবহার করা যেতে পারে। এর ভেতর দিয়ে সহজেই বেরিয়ে যেতে পারে আলোকরশ্মি। ক্রিস্টালের ভেতর দুটি স্তরের দূরত্ব খুবই কম। তাই ম্যাক্স ভন লু বললেন, সহজেই অতিক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের এক্স-রের ব্যতিচার ঘটনা যেতে পারে। এখানে দুটি স্তরের মধ্যে দূরত্ব একটি অণু বা পরমাণুর সমান।

ক্রিস্টাল নয়, এমন স্বচ্ছ বস্তুর মধ্যে অণু বা পরমাণুর সজ্জা সুষম হয় না, এলোমেলো। তাই এদের মধ্য দিয়ে যদি এক্স-রে পাঠানো হয়, তাহলে এক্স-রেও সেগুলোর সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে এলোমেলোভাবে চলবে। ক্রিস্টাল থেকে বেরিয়ে একটা নকশাও তৈরি করবে পর্দার ওপর। সেই নকশাটা হবে গোলাকৃতির—এর মাঝখানটা হবে অন্ধকার একটা ছোট্ট বৃত্তের মতো। বৃত্তের বাইরের দিকটা ক্রমেই উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হবে। কিন্তু টমাস ইয়ং যেমন ব্যতিচার নকশা পেয়েছিলেন, তেমনটা পাওয়া যাবে না। ইয়ংয়ের নকশায় দেয়ালের ওপর যতটুকু জায়গাজুড়ে নকশা তৈরি হয়, তার সব জায়গায় একটার পর একটা অন্ধকার ও উজ্জ্বল বিন্দু বা রেখা পাওয়া যায় সুষমভাবে।

লু বললেন, সত্যিকারের ক্রিস্টালের মধ্য দিয়ে যখন এক্স-রে যাবে, তখন সেগুলো সুনির্দিষ্ট পথে যাবে। দুটি স্তরের মধ্য দিয়ে যাওয়া এক্স-রশ্মি ক্রিস্টাল থেকে বের হওয়ার পর কোনো দেয়ালের ওপর পড়ে, তাহলে এরা সত্যি সত্যি একটা ব্যতিচার নকশা তৈরি করবে। সেটা ইয়ংয়ের নকশার মতো।

সে না হয় হলো, এক্স-রে তো দৃশ্যমান আলোকরশ্মি নয়, তাহলে সে দেয়াল বা পর্দার ওপর ব্যতিচার নকশা তৈরি করবে কীভাবে? আর যদি করেও সেটা আমরা দেখতে পাব তো?

ইয়ংয়ের পরীক্ষার মতো সাধারণ দেয়াল বা পর্দা নিয়ে পরীক্ষা করলে ফল পাওয়া যাবে না। কিন্তু সাধারণ পর্দার বদলে যদি ফটোগ্রাফিক প্লেট ব্যবহার করা হয়, যেসব প্লেট হাড় ভাঙা, কিংবা বুক বা পেটের ভেতরের রোগ নির্ণয় করতে ব্যবহার করা হয়, তাহলে তাতে অবশ্যই ব্যতিচার প্যাটার্ন ফুটিয়ে তোলা যাবে।

ম্যাক্স ভন লু নিজেই একটা পরীক্ষা করেন। ১৯১২ সালে। জিঙ্ক সালফাইডের ক্রিস্টালের ভেতর দিয়ে চালনা করেন এক্স-রশ্মি। সত্যি যেমনটা অনুমান করেছিলেন লু, ফটোগ্রাফিক প্লেটে ইয়ংয়ের ডাবল স্লিট পরীক্ষার মতোই পাওয়া গেল ব্যতিচার নকশা। এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফির বিশাল এক দুনিয়া উন্মোচিত হলো বিজ্ঞানীদের সামনে, ঠিক যেন আলিবাবার গুহার মতো করে।

বিজ্ঞানীরা শতভাগ নিশ্চিত হলেন, এক্স-রশ্মি সত্যি সত্যিই একধরনের আলোকরশ্মি। অর্থাৎ এক্স-রে তরঙ্গ এবং সাধারণ আলোকরশ্মির মতো অনুপ্রস্থ তরঙ্গ। এই অবদানের জন্য নোবেল কমিটি অবশ্য স্বীকৃতি দিতে দেরি করেনি। ১৯১৪ সালেই নোবেল দেওয়া হলো লুকে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto