Hot

ওয়াসার নষ্ট মিটারে আজগুবি বিল

এরশাদ আলী থাকেন খুলনা নগরীর টিবি ক্রস রোডে। মাস ফুরালে তাঁর পানির বিল আসছিল বড়জোর ৭০০ টাকা। নির্ধারিত সময়েই ওয়াসাকে মিটিয়ে দেন বিল। গত বছরের আগস্টে ৩৩ হাজার ৫০৬ টাকা পানির বিল দেখে এরশাদ আলীর চক্ষু চড়কগাছ! তিনি ওই দিনই ছোটেন ওয়াসার আঞ্চলিক কার্যালয়ে; কর্তৃপক্ষকে জানান নালিশ।

পরে ওয়াসার প্রকৌশলী, রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারা এরশাদ আলীর বাড়িতে গিয়ে পরখ করেন মিটার। তারা জানান, মিটারে সমস্যা থাকায় এতদিন দেওয়া হয়েছে ভুল বিল। জমে থাকা প্রকৃত পানির বিল একসঙ্গে করায় টাকার অঙ্ক ৩৩ হাজারের বেশি দেখাচ্ছে। আবার ভড়কে গেলেন এরশাদ আলী। তাঁর প্রশ্ন, মিটার দেখে ওয়াসা যে বিল দিয়েছে, সেটাই পরিশোধ করেছি। কখনও কম আসে, কখনও বেশি। মাসের পর মাস ভুল বিল দিল– এ দায় গ্রাহক নেবে কেন? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এরশাদ আলী ওয়াসার আঞ্চলিক ও প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের টেবিলে টেবিলে ঘুরেছেন। হয়নি ভুল বিলের কিনারা। ঘোরাঘুরির সুফল বলতে এটুকুই, এত টাকা একসঙ্গে পরিশোধ কষ্টসাধ্য হওয়ায় কিস্তিতে দেওয়ার সুযোগ দিয়েছে ওয়াসা। নষ্ট মিটারের সেই ভুলের কিস্তি এখনও টানছেন এরশাদ আলী।

ওই সময় ওয়াসার কার্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, শুধু এরশাদ আলীই নন; ভুল বিলের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন অসংখ্য গ্রাহক। গত দুই বছরে এমন চার হাজার গ্রাহকের মিটার বদল করেছে ওয়াসা।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভুল বিলের নেপথ্যে রয়েছে নিম্নমানের ঘোলা মিটার। ২০১৮ সালে ১৫ কোটি টাকা খরচা করে নিম্নমানের পানির মিটার কিনেছে খুলনা ওয়াসা। ২০১৯ সাল থেকে মিটার লাগানো শুরু হয়। তবে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি হওয়ায় অল্প দিনেই ঘোলা হয়ে যাচ্ছে এসব মিটার। রিডিং দেখতে না পারায় ভুল বিল করে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে গ্রাহক-মনে ক্ষোভের বারুদ ছড়ালে ২০২১ সাল থেকে মিটার বদল শুরু করে ওয়াসা। প্রতি মাসেই বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নষ্ট মিটার বদলে দেওয়ার চাহিদা আসছে। তাতে দেখা গেছে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও শতাধিক মিটার বদলাতে হবে। বর্তমানে ওয়াসার প্রায় ৪২ হাজার গ্রাহকের প্রত্যেকের বাড়িতেই মিটার রয়েছে।

ভুল বিলের বোঝা

২০০৮ সালের ৫ মার্চ খুলনা সিটি করপোরেশনের পানি সরবরাহ বিভাগ থেকে বেরিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ওয়াসা। পরের বছর শুরু হয় খুলনা ওয়াসার বাণিজ্যিক কার্যক্রম। ওই সময় সংস্থাটির গ্রাহক ছিল প্রায় সাত হাজার। এই অল্প গ্রাহককেই নিয়মিত পানি সরবরাহ করতে পারছিল না ওয়াসা। শুরু থেকেই ওয়াসার পানির বিল নিয়ে ভোগান্তির অভিযোগ। এর পর বছর ঘুরেছে; ওয়াসার গ্রাহক ও পানি সরবরাহ বেড়েছে; তবে ভুল বিলের ভোগান্তি কমেনি। 

২০১৪ সালের জুন থেকে মিটার সংযোজন শুরু করে ওয়াসা। গ্রাহকের বাড়িতে বিল পৌঁছে দিতে প্রতিষ্ঠান কর্মী নিয়োগ দেয়। তাতে ভোগান্তি আরও বাড়ে। নিয়মিত বিল না দেওয়া, মিটারের অতিরিক্ত বিল তৈরির অভিযোগ আসতে থাকে ওয়াসা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশ হয়।

 গ্রাহকের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালে বিল প্রস্তুতি ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান সুশীলনের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ওয়াসা। দায়িত্ব দেওয়া হয় নতুন প্রতিষ্ঠানকে। মিটার ও বিল তদারকির জন্য চালু করা হয় নতুন সফটওয়্যার। নতুন প্রতিষ্ঠান নিয়োগের পর ভোগান্তি কিছুটা কমলেও ভিন্ন অভিযোগ আসতে থাকে।

গ্রাহকের অভিযোগ যাচাই করে দেখা গেছে, অধিকাংশ মনে করছেন, তারা কম পানি ব্যবহার করলেও বিল আসছে বেশি। আবার অনেকের প্রতি মাসে নির্দিষ্ট ইউনিট, আবার অনেকের শূন্য ইউনিট বিল আসছে। মাসের পর মাস একই ধরনের বিল কেন আসছে– এর কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, এসব গ্রাহকের মিটারের ওপরের অংশ ঘোলা বা বিকল হয়ে রিডিং দেখা যাচ্ছে না। এ কারণে কর্মচারীরা প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের বিল করে যাচ্ছেন। আর ঘোলা মিটার বদলের পর একসঙ্গে বিশাল অঙ্কের টাকা বিল আসছে। সেই বিলের বোঝা গ্রাহককে টানতে হচ্ছে মাসের পর মাস।

তাদেরই একজন নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের গোবরচাকা প্রধান সড়কের বাসিন্দা কামাল শিকদার। দীর্ঘদিন ধরে অল্প বিল দিয়ে আসছেন তিনি। নিজের সন্দেহের বিষয়টি ওয়াসাকে জানান। ওয়াসার প্রকৌশলীরা এসে দেখেন, মিটার ঘোলা থাকায় ইউনিট দেখা যাচ্ছে না। পরে ওই মিটার খুলে দেখা যায়, তাঁর বকেয়া ৫০ হাজার টাকা।

কামাল শিকদার বলেন, ওয়াসার প্রকৌশলীরা বলেছেন, পানি যেহেতু ব্যবহার করেছেন, বিল দিতেই হবে। তারা পাঁচ কিস্তিতে বিল পরিশোধের নির্দেশ দেন। এত টাকা একসঙ্গে দেওয়ার সামর্থ্য নেই জানালে তারা ১০ কিস্তিতে বিল পরিশোধের সুযোগ দিয়েছেন। 

নতুন কেনা মিটারের ওপরের অংশ কেন ঘোলা বা অচল হয়ে যাচ্ছে, তা খুঁজতে গিয়ে নিম্নমানের মিটার কেনার তথ্য উঠে আসে সমকালের অনুসন্ধানে। ঠিকাদারের সঙ্গে ওয়াসার সে সময়ের কর্মকর্তারা যোগসাজশে নিম্নমানের মিটার কেনেন। কেনাকাটায় ছিলেন ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ, তৎকালীন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক এমডি কামাল উদ্দিন আহমেদ। 

চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় এমডি কামাল উদ্দিন আহমেদ এখন ওয়াসায় নেই। তিনি বলেন, দেশে এনে পরীক্ষার পর মিটারগুলো ভালো পাওয়া গেছে। পরে মিটারের রেজিস্ট্রার ঘোলা হতে থাকে। কেন ঘোলা হচ্ছে, তা খুঁজে বের করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, মিটার কেনাকাটায় কোনো অনিয়ম হয়নি। ঠিকাদারকে সুবিধা দেওয়ার সুযোগ আমার নেই। 

যেভাবে মিটার কিনল ওয়াসা

ওয়াসা থেকে জানা গেছে, ২০১৩ সালে ‘খুলনা শহরের পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় প্রথমবার কেনা হয় তিন হাজার মিটার। ২০১৪ সালে পাঁচ হাজার, ২০১৬ সালে ছয় হাজার এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালে একসঙ্গে ৪৫ হাজার মিটার কেনে ওয়াসা। এ পর্যন্ত চার ধাপে ৫৮ হাজার ৯৪৫টি মিটার কিনতে ওয়াসার খরচ হয়েছে ১৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। 

প্রতিটি ধাপে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে মিটার কেনা হয়েছে। এসব মিটার চীন ও তুরস্ক থেকে আমদানি করা হয়। পরে সংশ্লিষ্ট দেশীয় প্রতিষ্ঠান তা ওয়াসায় সরবরাহ করে। প্রথম ধাপে কেনা প্রতিটি মিটারের দাম পড়েছে ২ হাজার ৫৫৪ টাকা; দ্বিতীয় ধাপে ৩ হাজার ১৩৫ টাকা, তৃতীয় ধাপে ৩ হাজার ৪৭৩ টাকা এবং শেষ ধাপে ৩ হাজার ৩৯০ টাকা। 

ঘুরেফিরে একই ঠিকাদার, কারসাজি

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চার ধাপে ওয়াসার কেনা ৫৮ হাজার ৯৪৫টি মিটারের মধ্যে তিনটি ধাপে ৫৫ হাজার ৯৪৫টি মিটার সরবরাহ করেছে পেপকো বাংলাদেশ। প্রথমবার চীন থেকে কেনার পর পরবর্তী তিনটি ধাপে তুরস্ক থেকে মিটার আমদানি করে একই প্রতিষ্ঠান পেপকো। এর মধ্যে ২০১৪ সালে ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় পাঁচ হাজার, ২০১৬ সালে ২ কোটি ৮ লাখ টাকা দিয়ে ছয় হাজার, সর্বশেষ ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা দিয়ে ৪৫ হাজার মিটার সরবরাহ করে প্রতিষ্ঠানটি। 

দরপত্রের নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রতিবারই দরপত্রে তিনটি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। অন্য দুটি প্রতিষ্ঠান পেপকো বাংলাদেশের দরের চেয়ে কিছুটা বেশি দর দেয়। এ কারণে সহজে কাজ পেয়ে যায় পেপকো। অর্থাৎ সমঝোতার ভিত্তিতেই প্রতিষ্ঠানটি মিটার সরবরাহের কাজ পায়। আর মিটার সরবরাহের জন্য প্রতিবারই ওয়াসার কর্মকর্তাদের তুরস্ক ঘুরিয়ে এনেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

দরপত্রের পদে পদে গাফিলতি

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রথম দফায় চীন থেকে কেনা মিটারের রেজিস্ট্রার ছিল কাচের তৈরি। প্রায় ১০ বছর আগে কেনা মিটারগুলো এখনও ভালো আছে। তবে চার বছর আগে কেনা মিটার দ্রুত অচল হওয়ার মূল কারণই হচ্ছে ওপরে প্লাস্টিকের আবরণ। পানির কাছাকাছি রাখা এবং আর্দ্রতা পাওয়ায় প্লাস্টিক দ্রুত ঘোলা হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হচ্ছে।

দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী মিটারের রেজিস্ট্রার কাচের তৈরি হওয়া জরুরি ছিল। তবে ওয়াসার দরপত্রের শর্তে এটি উল্লেখ ছিল না। এ কারণে ঠিকাদার দাম কমাতে কাচের বদলে প্লাস্টিক দিয়ে আবরণ তৈরি করেছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে মিটার পরিবর্তন করে।

সাধারণত পানির মিটার ভালো থাকে পাঁচ বছর। তবে ওয়াসার দরপত্রের কোথাও মিটারের জীবনকাল উল্লেখ নেই। ফলে মাত্র দুই বছরে মিটার বিকল হলেও এর ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাচ্ছে না। নিম্নমানের মিটার গছিয়ে দিয়েও দায়মুক্তি পাচ্ছে ঠিকাদার। 

খুলনার প্রকল্প শেষে একই ঠিকাদার ঢাকা ও চট্টগ্রামে মিটার সরবরাহ করে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানেও অনেক মিটার ঘোলা হয়ে যাচ্ছে।

দুই বছরেই অচল ৪ হাজার মিটার

ওয়াসার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান, বিল ভোগান্তি দূর করতে সফটওয়্যার চালু করা হয়েছে। এতে মাঠকর্মীরা প্রতিটি মিটারের ছবি তুলে সেখানে আপলোড করেন। ছবিতে মিটার রিডিং দেখে বিল তৈরি করা হয়। তবে ঘোলা মিটারের সংখ্যা বাড়তে থাকায় বিল নিয়ে ওয়াসার রাজস্ব বিভাগের কর্মীরাও বেকায়দায় পড়েন। এক পর্যায়ে ওয়াসার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘোলা হওয়া সব মিটার বদলের সিদ্ধান্ত নেন। 

তথ্য অধিকার আইনে করা আবেদনে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মিটারের ওপরের অংশ অকেজো বা ঘোলা হয়ে যাওয়ায় ২০২১ সালে ১ হাজার ৪৯টি এবং ২০২২ সালে ২ হাজার ৯৪৮টি মিটার পরিবর্তন করেছে। এ বছরের তথ্য তারা দেয়নি। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এ পর্যন্ত আরও প্রায় এক হাজার মিটার পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে জুলাই মাসেই পরিবর্তন করা হয়েছে ১৭১টি মিটার। প্রতি মাসেই বিভিন্ন এলাকা থেকে মিটার ঘোলা হয়ে যাওয়ার তথ্য আসছে। অচল হওয়া বেশির ভাগ মিটারই শেষ দুই ধাপে কেনা, যার গড় দাম ৩ হাজার ৪০০ টাকা। অর্থাৎ অচল মিটারের পেছনে ওয়াসার গচ্চা ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যা বলছে

শেষ তিন ধাপে মিটার সরবরাহ করেছে পেপকো বাংলাদেশ। সংস্থাটি তুরস্কের বেলান নামে একটি কোম্পানিতে মিটার তৈরির পর আমদানি করে। মিটার ঘোলা হওয়ার কারণ জানতে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বেলানকে ই-মেইল করা হয়। উত্তরে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, গত বছর বিষয়টি নিয়ে তারা অনুসন্ধান করেছে। এতে দেখা গেছে, আর্দ্রতা এবং পিসি গ্লাস (পলিকার্বনেট) দিয়ে তৈরি রেজিস্ট্রার ঘোলা বা কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে যাওয়ার কারণ।

মিটার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পেপকো বাংলাদেশের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, মিটার সংযোজনের পর ঘোলা হওয়ার অভিযোগ পেয়ে অনেক মিটার আমরা পাল্টে দিয়েছি। এক বছর পর আর মিটার ঘোলা হওয়ার অভিযোগ আমাদের জানানো হয়নি। জানালে সেগুলোও পাল্টানোর ব্যবস্থা করতাম। তিনি বলেন, তুরস্কের ফ্যাক্টরি ঘুরে দেখে-বুঝেই মিটার নেওয়া হয়েছে। এখন প্রাকৃতিক কারণে মিটারের ওপরের অংশ অচল হয়ে যাচ্ছে। ওই অংশ পরিবর্তন করলে ফের মিটার ব্যবহার করা যাবে। 

ওয়াসা কর্তৃপক্ষের ভাষ্য

ওয়াসার প্রথম ধাপে কেনা প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন তৎকালীন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক জগলুল হায়দার চৌধুরী। প্রায় ১০ বছর আগে ওয়াসা থেকে বিদায় নিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের মিটার কেনা প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল ইসলাম। এ ধাপের মিটার ঘোলা হওয়ার হার তুলনামূলক কম। রেজাউল ইসলাম বলেন, প্রাকৃতিক কারণে মিটারের কভার বা রেজিস্ট্রারের মধ্যে ময়েশ্চার জমে ঘোলা হয়ে যাচ্ছে। 

শেষ ধাপে কেনা ৪৫ হাজার মিটারই ঘোলা হয়ে যাচ্ছে বেশি। খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় এই মিটার কেনা হয়। তিনজন প্রকৌশলী প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ প্রকল্প পরিচালক ছিলেন খুলনা ওয়াসার সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল আহমেদ। তবে প্রকল্প বিষয়ে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। যে কোনো বিষয়ে বক্তব্য ও তথ্য নিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকল্পের পরিচালক আলাদা হলেও ওয়াসায় দরপত্র, কেনাকাটাসহ সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন এমডি। তাঁর সিদ্ধান্তই ওয়াসায় শেষ কথা।

ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ বলেন, মিটার সব সময় শুকনো জায়গায় স্থাপন করতে হয়। তবে গ্রাহকের বাড়িতে নিরাপদ ও শুষ্ক স্থান পাওয়া না যাওয়ায় বাড়ির বাইরে আর্দ্র ও ভেজা জায়গায় অনেক সময় মিটার স্থাপনে বাধ্য হতে হয়। এ কারণে মিটারের রেজিস্ট্রার সহজেই ঘোলা হয়ে যায়। তিনি বলেন, ৪৫ হাজার মিটারের মধ্যে ১০ শতাংশের কম ঘোলা হয়েছে। এটা ওয়াসার কারণে নয়, গ্রাহকের কারণেই হয়েছে। এই দায় ওয়াসা নেবে কেন? তা ছাড়া মিটার ঘোলা হলে ওয়াসা বিনা পয়সায় মিটার বদলে দিচ্ছে। বিল যেটুকু বেশি আসছে, সেই পানি তো ওই গ্রাহক ব্যবহার করেছেন। আগে বিল কম দিয়েছেন, এখন সমন্বয় করা হচ্ছে। এখানে অনিয়মের কিছু নেই। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button