ক্যালিফোর্নিয়ায় ৭০ হাজার একর এলাকাজুড়ে ভয়াবহ দাবানল

এর আগে জানুয়ারিতে দাবানলে ৩০ জনের প্রাণহানির ঘটনার পর এই পরিস্থিতি নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে তিন দিন ধরে চলমান এক ভয়াবহ দাবানল ইতোমধ্যে ৭০ হাজার একরেরও বেশি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। শত শত দমকল কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে এএফপি জানায়, ক্যালিফোর্নিয়ার গ্রামীণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত সান লুইস অবিসপো কাউন্টিতে বুধবার ‘মাদ্রে ফায়ার’ নামে এই দাবানলটি ছড়িয়ে পড়ে।
আগুনের ঝুঁকিতে থাকা বহু ভবনের মধ্যে থেকে প্রায় ২০০ জনকে ইতোমধ্যে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাজ্যের অগ্নিনির্বাপণ সংস্থা- ক্যাল ফায়ার জানায়, দাবানলটি এখন পর্যন্ত ৭০ হাজার ৮০০ একর এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এটি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৬০০’র বেশি কর্মী ও ৪০টি ফায়ার ইঞ্জিন মোতায়েন করা হয়েছে।
এ বছর ক্যালিফোর্নিয়ায় এটিই সবচেয়ে বড় দাবানল। গত বছরের শুরুতে লস অ্যাঞ্জেলেসে অগ্নিকাণ্ডে বড় ক্ষয়ক্ষতি ঘটে।
এই দাবানল এমন এক সময় ঘটছে, যখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জলবায়ু দুর্যোগ মোকাবেলায় ফেডারেল সংস্থাগুলোতে বাজেট ও জনবল ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই ফরেস্ট সার্ভিস, এনওএএ ও ফেমা’র মতো সংস্থাগুলোর বাজেট কমানো হয়েছে।
শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের ফেডারেল এলাকায় আরো ১৫টি নতুন দাবানলের সূত্রপাত হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এক্সে এক পোস্টে নিউজম লিখেন, ট্রাম্পের এখন জাগ্রত হওয়ার সময় হয়েছে। বিলিয়নিয়ারদের কর ছাড় না দিয়ে গ্রামীণ এলাকাগুলোর ফেডারেল দমকল বাহিনী ও ভূমি ব্যবস্থাপনা দলগুলোকে অর্থায়ন করা উচিত।
ট্রাম্পের অদক্ষতায় মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে গভর্নরের দফতর থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘মাদ্রে ফায়ার’ এখনো ‘অত্যন্ত প্রত্যন্ত একটি অঞ্চলে এবং বাড়িঘর থেকে অনেকটা দূরে’ রয়েছে।
চলমান দাবানলের পাশাপাশি রাজ্যে আরো কয়েকটি ছোট-বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এর আগে জানুয়ারিতে দাবানলে ৩০ জনের প্রাণহানির ঘটনার পর এই পরিস্থিতি নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় এ বছর শীত ও বসন্ত কাল ছিল অস্বাভাবিকভাবে শুষ্ক। ফলে গাছপালা ও আগাছা এখন অনেকটাই শুকনো। ইউসিএলএ’র জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল সোয়েইন বলেন, এই শুষ্কতা ও অতিরিক্ত গরম আবহাওয়া এই মৌসুমে দাবানলের পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলবে।