International

গাজায় নিহত ২১ হাজার ছাড়াল, শিক্ষার্থী ৪০০০

আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে নির্বিচার হামলায় মৃত্যু ফিলিস্তিনির সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়েছে। নিহতের তালিকায় রয়েছে চার হাজারের বেশি শিক্ষার্থী।

এদিকে হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার কোনো পদক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না বলে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে মিসর ও জর্ডান।

গতকাল বুধবার ছিল গাজায় ইসরায়েলি হামলার ৮২তম দিন। গাজার হামাস সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এদিন হতাহতের নতুন পরিসংখ্যান প্রকাশ করে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা এক বিবৃতিতে বলেন, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১ হাজার ১১০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৫৫ হাজার ২৪৩ জন।

যুদ্ধবিরতি ও বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও গাজায় হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশের যুদ্ধবিরতির আহ্বানে সাড়া না দিয়ে মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় হামলার তীব্রতা বাড়ানো হয়েছ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গতকালের বিবৃতি অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১৯৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩২৫ জন।

এদিকে গাজার শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় ৪ হাজার ৩৭ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০৯ জন কর্মীও নিহত হন। আহত হয়েছেন ৭ হাজার ২৫৯ শিক্ষার্থী ও ৬১৯ শিক্ষক।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্ট কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৫২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মিসর ও জর্ডানের হুঁশিয়ারি

গাজার ফিলিস্তিনিদের মিসরের সিনাই অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন ইসরায়েলের কয়েকজন রাজনীতিক। এরই অংশ হিসেবে ইসরায়েলি বাহিনী মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েল হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে এই দুই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন গাজার উত্তারাঞ্চল থেকে পালিয়ে আসা বাসিন্দারা।

গাজার বাসিন্দাদের তাড়িয়ে দেওয়ার আশঙ্কার বিষয়ে নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের (এনআরসি) মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক উপদেষ্টা আহমেদ বায়রাম বলেন, ইসরায়েল ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যদি এমনটা হয়, সেটি হবে যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধ।

ফিলিস্তিনিদের তাড়িয়ে দেওয়ার কোনো পদক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ। মিসরের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এসব কথা বলা হয়েছে। গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল মিসরে যান বাদশাহ আবদুল্লাহ। রাজধানী কায়রোয় দুই নেতার বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে বলা হয়, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দুই নেতা।

এরদোয়ান–নেতানিয়াহু বাগ্‌যুদ্ধ

ফিলিস্তিন ইস্যুতে আরও একবার বাগ্‌যুদ্ধে জড়িয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এরদোয়ান বলেছেন, জার্মানির নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলার ইউরোপে যা করেছেন, আর নেতানিয়াহু গাজায় এখন যা করছেন, এই দুইয়ের মধ্যে ‘কোনো পার্থক্য নেই’।

জবাবে এক্সে (সাবেক টুইটার) এক বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, ‘এরদোয়ান কুর্দিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালান। সরকারের বিরোধিতাকারী সাংবাদিকদের কারারুদ্ধ করার বিশ্ব রেকর্ডও তাঁর। সেই তিনিই আমাদের নৈতিকতার সবক দিচ্ছেন।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button