Science & Tech

চাঁদেই যাননি আর্মস্ট্রংরা, পুরোটাই ভাঁওতা! 

চাঁদে নিল আর্মস্ট্রং।

চন্দ্রযান-৩ এখনও চন্দ্রপৃষ্ঠে। রোভার প্রজ্ঞান ও ল্যান্ডার বিক্রমের দিকে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দূর থেকে নজর রেখে চলেছেন সারা বিশ্বের মহাকাশপ্রেমীরা। সেই সঙ্গে ফিরে আসছে ইতিহাসও। 

১৯৬৯ সালে নিল আর্মস্ট্রং ও বাজ অলড্রিনের চাঁদের মাটিতে পা রাখার ইতিহাসই সবচেয়ে বেশি জায়গা করে নিচ্ছে আলোচনায়। আর অবধারিতভাবেই উঠে আসছে চাঁদে মানুষ নামা নিয়ে সেই বহু আলোচিত ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’। যে তত্ত্বকে মানলে ধরে নিতে হয়, আজ পর্যন্ত মানুষের পা পড়েনি পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহে চাঁদে! সত্যিই কি তাই?

সারা পৃথিবীতেই বহু বিখ্যাত ও আলোচিত ঘটনা তথা ইতিহাসকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন কন্সপিরেসি থিয়োরির প্রবক্তারা। যার মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলা তত্ত্ব হলো চাঁদে নামা নিয়ে আমেরিকার ‘ডাহা মিথ্যা’র দাবি। তাদের বক্তব্য, এটা পুরোপুরি হলিউডের সিনেমার মতো ক্যামেরার কারসাজি বই কিচ্ছু নয়। পৃথিবীর মাটিকেই চাঁদ বলে দেখানো হয়েছে। বেশ কিছু যুক্তিও দিয়েছেন তারা।

চাঁদে হাওয়া বাতাস নেই, তাহলে পতাকায় ঢেউ খেলছে কী করে?

চাঁদের মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকা আমেরিকান পতাকার ছবি ঘাঁটলে সত্যি বিস্মিত হতে হয়। বাজ অলড্রিন চন্দ্রপৃষ্ঠে দাঁড়িয়ে স্যালুট করছেন মার্কিন পতাকাকে। এই ছবি অ্যাপলো-১১ মিশনের অন্যতম আইকনিক ছবি। সেই সময়ে ওই ছবিটিকে অনেকেই রাশিয়ার সঙ্গে স্পেস রেসে এগিয়ে যাওয়ার প্রচ্ছন্ন মার্কিন বার্তা বলেই ধরেন। কিন্তু প্রশ্ন এটাই, যেখানে হাওয়া-বাতাসই নেই চাঁদে, সেখানে আমেরিকার পতাকায় হাওয়া খেলছে কী করে?

কেনো আকাশে কোনো তারা দেখা যাচ্ছে না?

অ্যাপলো-১১ মিশনের যত ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তার কোনোটাতেই আকাশে তারা ঝলমল করতে দেখা যাচ্ছে না। চাঁদে যেহেতু কোনো আবহাওয়ামণ্ডল নেই, তাই আকাশে মেঘের দেখা পাওয়ার কোনো সম্ভাবনাও নেই। কিন্তু তাই যদি হবে তাহলে অন্ধকার আকাশে কেন অদৃশ্য নক্ষত্রেরা?

চাঁদের মাটিতে যেভাবে ছায়া পড়তে দেখা যাচ্ছে সেটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে এটা ‘ফেক’

যেহেতু চাঁদে আলোর একমাত্র উৎস সূর্য, তাই তার মাটিতে পড়া ছায়ার প্রকৃতি একই রকম হওয়ার কথা। কিন্তু চন্দ্রাভিযানের ছবিগুলোতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, বিভিন্নভাবে ছায়া পড়েছে। যা একমাত্র তখনই সম্ভব যখন আলোর উৎস একাধিক হয়। অর্থাৎ কোনো স্টুডিওয় শুটিং করলে যেমন একাধিক আলোর উৎসের কারণে ছায়ার বিভিন্নতা দেখা যায় এখানে সেটাই দৃশ্যমান। যা বুঝিয়ে দেয় চাঁদে আর্মস্ট্রংদের পা রাখার ব্যাপারটাই ‘ফেক’।

আর্মস্ট্রংয়ের চাঁদে নামার ভিডিও করল কে?

চাঁদের মাটিতে প্রথম পা রাখেন নিল আর্মস্ট্রং। সেই সময় বাজ অলড্রিন ছিলেন মডিউল ইগলের মধ্যেই। অভিযানের তৃতীয় নভশ্চর মাইকেল কলিন্স ছিলেন কমান্ড মডিউল কলম্বিয়ার ভেতরে। তাহলে আর্মস্ট্রং ইগলের দরজা খুলে সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসছেন চাঁদের মাটিতে সেই দৃশ্য শুট করল কে? চাঁদের মাটিতে নিশ্চয়ই আগে থেকে ক্যামেরাম্যান পাঠিয়ে দেওয়া হয়নি।

এই ধরনের ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ আরও রয়েছে। তবে এই চারটি বোধহয় সবচেয়ে আলোচিত। কিন্তু সত্যিই কি এসব দাবির কোনো সারবত্তা রয়েছে? 

চাঁদে মানুষের পা রাখা কেবল আমেরিকানদের সাফল্য নয়। একে দেখা হয় গোটা মানবজাতির সাফল্যের এক অনন্য মাইলফলক হিসেবে। সেই ইন্টারনেটবিহীন পৃথিবীতেও সর্বত্র আলোচনা ছড়িয়ে পড়েছিল আর্মস্ট্রংদের নিয়ে। সেই ঘটনার অভিঘাত আজও রয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত এটাই মহাকাশে মানুষের শ্রেষ্ঠ সাফল্য বলেই ধরা হয়। আদপে তা ‘ফেক’?

শুনতে যতই মুখরোচক মনে হোক, এই ধরনের তত্ত্ব নেহাতই আজগুবি। এর কোনো মজবুত ভিত্তি নেই। কী রকম? একে একে বলা যাক। প্রথমেই আসা যাক পতাকা প্রসঙ্গে। ভালো করে দেখলেই বোঝা যাবে ওই পতাকায় উল্লম্ব ও অনুভূমিক দুই অবস্থানে দু’টি দণ্ড ব্যবহার করা হয়েছিল। কেননা, চাঁদে যেহেতু বাতাস নেই, তাই পতাকা পুঁতলেও তা একেবারেই দণ্ডের গায়ে গায়ে ঝুলে থাকবে। সেই পরিস্থিতি এড়াতেই ওইভাবে পতাকাটি তৈরি করা হয়েছিল। আর সেই কারণেই দেখে মনে হয় যেন পতাকাটা হাওয়া দুলছে।

আকাশ তারাবিহীন থাকার কারণ হলো, চাঁদে যখন নেমেছিলেন আর্মস্ট্রংরা তখন সেখানে ছিল দিন। আর নভশ্চরদের পোশাকও সাদা ঝলমলে। তাই যত ছবি তোলা হয়েছিল, তাতে সূর্যের আলোর ঔজ্জ্বল্যের ধাক্কায় আকাশ তারাবিহীন দেখাচ্ছিল। মনে রাখতে হবে, ১৯৬৯ সালে ক্যামেরার গুণগত মানও কিন্তু আজকের মতো এত আধুনিক হয়নি।

এদিকে, চাঁদের মাটিতে ছায়ার কথা বলতে বসলে মাথায় রাখতে হবে, প্রকৃতপক্ষে চাঁদের মাটিতে সূর্যই একমাত্র আলোর উৎস নয়। সেখানকার এবড়ো খেবড়ো মাটিও উৎসের কাজ করে। তারা এত বেশি আলো প্রতিফলন করে, যার ফলে ছায়াগুলো ওইভাবে ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি আর্মস্ট্রংয়ের চাঁদের মাটিতে নেমে আসার ভিডিও নিয়েও স্পষ্ট উত্তর রয়েছে।

ইগলের গায়ে বসিয়ে রাখা ক্যামেরাই ওই ভিডিও তুলেছিল। এ ছাড়াও যে দু-একটা খটকার সৃষ্টি হয়, সেই সবেরই কিন্তু পালটা ব্যাখ্যা রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, ‘ঠান্ডা যুদ্ধে’ আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বী কিন্তু এমন দাবি করেনি। বরং বার বার তারা আর্মস্ট্রংদের গড়া ইতিহাসকে স্বীকৃতিই দিয়েছে। কাজেই, সব দিক বিচার করলে পরিষ্কার হয়ে যায় এই সব ষড়যন্ত্র তত্ত্বের কোনো ভিত্তি নেই।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d