Bangladesh

চোখ আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকার দিকে: কৌতূহল, নানা আলোচনা

টানা অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে আজ সন্ধ্যায়। দেশের তিনশ’ আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে। টানা চারদিন মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক শেষে ৩শ’ প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে দলটি। বিশৃঙ্খলা ও দলীয় ঐক্যের স্বার্থে প্রথমবারের মতো একসঙ্গে সবগুলো আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হচ্ছে। এজন্য দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। বিশেষ করে একাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রী ও এমপিরা রয়েছেন বেশি টেনশনে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের কয়েকজন সদস্য মানবজমিনকে জানান, প্রতীক তুলে দেয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। 

দলীয় সূত্র জানায়, তিনশ’ আসনের মধ্যে শতাধিক আসনে এবার হয়তো নতুন মুখ দেখা যাবে। পুরনো সংসদ সদস্য কেউ কেউ বাদ পড়ছেন। আসছেন নতুন মুখ। মনোনয়নে কারা থাকছেন, কারা বাদ পড়ছেন এ নিয়ে দলীয় অঙ্গনে ব্যাপক কৌতূহল, আলোচনা। 

এবার মনোনয়ন দেয়া বা না দেয়ার জন্য ৭টি বিষয় গভীরভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে।

নৌকা প্রতীক না দেয়ার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- এলাকাবিচ্ছিন্ন, মন্ত্রী-এমপি থাকার পরও জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে না পারা, শারীরিকভাবে অসুস্থ ও নানা কারণে বিতর্কিত কাউকে এবার নৌকা দিয়ে জনগণের কাছে পাঠানো হবে না। অন্যদিকে ক্লিন ইমেজ, জনগণের কাছে জনপ্রিয় এবং এলাকায় পরিচিত নতুন প্রার্থীর ওপর জোর দেয়া হয়েছে। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দুই বছর ধরেই বিভিন্ন বৈঠকে বলে আসছেন- এলাকায় কে কী করছেন সবকিছু তার জানা আছে। বিভিন্ন মাধ্যমে জরিপ করা হচ্ছে। মুখ দেখে নয়, জরিপের ফলাফল দেখে এবার মনোনয়ন দেয়া হবে। প্রকৃতপক্ষে হচ্ছেও তাই। বিভিন্ন পর্যায়ে জরিপ করার কারণে মনোনয়নের ক্ষেত্রে এবার সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়েছে। এলাকায় কার কী অবস্থা তা জরিপেই উঠে এসেছে। দলীয় নেতারা জানান, এবার এমন অনেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন যাদেরকে এলাকার কেউ কোনোদিন আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচিতে দেখেননি। আবার অনেকে তাদের নামও শোনেননি। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, সর্বশেষ জরিপেও অনেক মন্ত্রী-এমপি’র ব্যাপারে নেতিবাচক তথ্য উঠে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় ভিন্নমতাবলম্বীদের পৃষ্ঠপোষকতা, ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখা এবং দলীয় নেতাদের উপেক্ষা করে নিজের গ্রুপের পক্ষে অবস্থান নেয়া- তাদের বিতর্কিত হওয়ার মূল কারণ। আট বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম, বরিশাল ও উত্তরাঞ্চলের সংসদ সদস্যরা অন্য যেকোনো এলাকার চেয়ে দলীয় আনুকূল্য বেশি হারিয়েছেন। এসব বিতর্কিতদের পরিবর্তে তরুণ, জনপ্রিয় ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাদের দলীয় টিকিট দেয়া হচ্ছে। এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে বড় অংশ রয়েছে তরুণ। বিশেষ করে সাবেক ছাত্রনেতাদের অনেকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। প্রতিটি নির্বাচনেই সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্য থেকে অনেককেই মনোনয়ন দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, নতুন অনেকে এসেছেন, কিছু বাদও পড়েছেন। উইন্যাবল (জয়ী হওয়ার মতো) প্রার্থী আমরা বাদ দিইনি। যারা উইন্যাবল-ইলেকট্যাবল না, জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন, নারী-পুরুষ সব প্রার্থীর ক্ষেত্রেই মনোনয়নে এটা প্রযোজ্য। 

জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩৩৬২টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে আওয়ামী লীগ। এতে দলটির আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা। গত মঙ্গলবার এই প্রক্রিয়া শেষ হয়। সেখানে দেখা গেছে, ৩০০ আসন হিসেবে প্রতিটিতে গড়ে ১১ জনের বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। দলীয় নেতা-মন্ত্রী ছাড়াও সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনের অন্তত ১৭ জন তারকা মনোনয়ন পেতে চান। এ ছাড়া ১৩ সাবেক আমলা ও ১৪ জন সাবেক সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের অন্তত অর্ধশত শীর্ষ নেতা আওয়ামী লীগের ফরম কিনেছেন। এ ছাড়া জেলা পরিষদ ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ক্ষমতাসীন দলের শতাধিক স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি নৌকার প্রার্থী হতে চান। এর বাইরে জোটের (১৪ দল) দুই শরিক দলের চার নেতাও আওয়ামী লীগের দলীয় ফরম কিনেছেন। এদিকে মনোনয়নের পর দল যেন ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকা প্রতীকের জন্য কাজ করে সেজন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। 

আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, তিন হাজারের বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের একসঙ্গে ডাকা হয়েছে বিশেষ বার্তা দেয়ার জন্য। প্রতিটি আসনে গড়ে ১১ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী। কিন্তু এদের মধ্য থেকে বেছে নিতে হবে একজনকে। বাকি ১০ জনকে বাদ দিতে হবে। তাই নির্বাচনে সাংগঠনিকভাবে যেন কোনো বিরূপ প্রভাব না পড়ে সেজন্য দলীয় সভাপতি মতবিনিময়ের জন্য তাদের ডেকেছেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নির্বাচন উপলক্ষে গঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সব সদস্য এবং আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সব প্রার্থীকে (জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, মনোনয়নপত্রের রিসিভ কপি, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অনলাইন ফরমের ফটোকপিসহ যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

Show More

5 Comments

  1. What i do not understood is in fact how you’re no longer really much
    more well-preferred than you may be right now. You’re so intelligent.
    You recognize therefore considerably relating to this subject, produced me in my view believe it from numerous numerous angles.
    Its like women and men aren’t fascinated until it’s something to accomplish with Woman gaga!
    Your personal stuffs excellent. At all times handle it up!

    my webpage: vpn special coupon code

  2. Wow that was unusual. I just wrote an really
    long comment but after I clicked submit my comment didn’t show up.
    Grrrr… well I’m not writing all that over again. Regardless, just wanted to say wonderful blog!

    my page … vpn coupon ucecf

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button