জয় করে তবু ভয়
জানুয়ারির ৭ তারিখ বাংলাদেশের নির্বাচন অবশ্যই শান্তিপূর্ণ ছিল, কিন্তু সেই শান্তি কি সর্বতোভাবে আনন্দের সংবাদ? ভোট কি এবার সেখানে সুষ্ঠু বা স্বাভাবিক হয়েছে? প্রশ্নগুলি এড়ানো যায় না- পরিস্থিতি দেখে। মুখ্য প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি) নির্বাচন বয়কট করল। আর এক ‘বিরোধী’ দল জাতীয় পার্টিই মুখ্য বিরোধী হয়ে উঠল, যদিও তাদের সংখ্যা সংসদে মাত্র ১১। এ দিকে বিএনপি প্রধান এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া অসুস্থ ও গত ছয় বছর নানা অজুহাতে গৃহবন্দি। তাঁর দলের কুড়ি হাজারেরও বেশি নেতা-কর্মী কারারুদ্ধ। আরও অনেকে আতঙ্কে ঘরছাড়া। নির্বাচন বয়কট করার সিদ্ধান্তের প্রধান দায় নিশ্চিত ভাবেই বিরোধী দল বিএনপি-র, এই ভাবে বয়কট করে গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিতেই তারা চাইছিল। কিন্তু শেষ অবধি নির্বাচন যে ভাবে সংঘটিত হল, তার দায়িত্ব তো ক্ষমতাসীন শাসককেই নিতে হবে, নয় কি?
বিএনপি-সহ মোট ষোলোটি দল এই নির্বাচন বয়কট করায় সংসদের ৩০০ আসনের ২২২টিতে গত পনেরো বছর যাবৎ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগই আবার জয়ী। সংখ্যায় সুদূরবর্তী দ্বিতীয় স্থানাধিকারী কোনও বিশেষ দল নয়- তাঁরা একগুচ্ছ ‘নির্দল’, মোট ৬৩ জন, যাঁদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রত্যাখ্যাত; কেউ আবার লীগের হুকুমেই দলবিহীন ডামি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে যোগদান করেছেন। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকা বলেছে, এর উদ্দেশ্য এটি জাহির করা যে, নির্বাচন সত্যিই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়েছিল।
অভিযোগ সত্য কি না জানা নেই, তবে এটা লক্ষণীয় যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রধান যখন বলেছেন, ভোটে যোগদানের হার ৪০ শতাংশ, একাধিক বিদেশি সংবাদমাধ্যম কিন্তু এই পরিসংখ্যান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে।
এই সমস্যা নতুন নয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ সালের নির্বাচন বিএনপি বয়কট করে। ২০১৮ সালের নির্বাচনকে বাংলাদেশে সকলে চেনে ‘রাতের ভোট’ নামে, কারণ অসংখ্য বুথে নির্বাচনের আগের রাতেই ভোটবাক্স ভরে গিয়েছিল অবৈধ ব্যালটে। সেই কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সে জন্য এ বার রব উঠেছিল যে, নির্বাচনের আগে নিয়োজিত হোক এক অন্তর্বর্তী প্রশাসন। এই দাবি উঠেছিল বিএনপি-র পক্ষ থেকেই, এবং তা জোরালো সমর্থন পেয়েছিল আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে। শেষ অবধি তা হয়নি। আমেরিকা থেকে ভেসে এসেছিল সরকারি ক্ষোভ। স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বললেন, তাঁরা রাজনৈতিক বিরোধীদের স্বাধীনতা হরণ এবং নির্বাচনের দিনে সংগঠিত বেআইনি কার্যকলাপ নিয়ে চিন্তিত।
শেখ হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন অবশ্যই ভারতের পক্ষে সুসংবাদ। এ দেশের সঙ্গে তাঁর নাড়ির যোগ। বাবা শেখ মুজিবুর রহমান পড়তেন কলকাতায়, রাজনীতির পাঠ নিয়েছিলেন অবিভক্ত বাংলার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দির কাছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন, বেঁচে যান শুধু বিদেশে থাকা দুই কন্যা হাসিনা ও রেহানা। বহু বছর ভারতের সরকারি নিরাপত্তা বলয়ে কাটিয়েছেন হাসিনা। তার পর গড়িয়ে গেছে দশকের পর দশক। কিন্তু, শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের বিশেষ সম্পর্ক অটুট।
তারই সুবাদে, যখন বিএনপি-র লবির জোরে আমেরিকার কংগ্রেস সদস্যদের একাংশ ও সরকারের বিদেশ দফতর নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী প্রশাসন নিযুক্ত করতে বিশেষ চাপ দিচ্ছিল- জনধারণা ছিল যে, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে লীগ পরাজিত হবে- শোনা যায়, জো বাইডেনের প্রশাসনকে বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত রাখতে ভারত তার কূটনৈতিক ওজন ব্যবহার করেছিল। সুতরাং এ মোটেই আশ্চর্য নয় যে, নির্বাচনের ফলপ্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই ভারত শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানায়। কিন্তু চীনও যখন তড়িঘড়ি তার শুভকামনা পাঠাল, তখন নিশ্চয়ই হকচকিয়ে গিয়েছিল আমেরিকা।
আন্তর্জাতিক স্তরে যা-ই ঘটুক না কেন, এ কথা অনস্বীকার্য যে, গণতন্ত্রের দিক থেকে এমন একদলীয় শাসন কাম্য নয়। কারণ বিরোধী আসন ফাঁকা হয়ে গেলে শাসক দল আর ‘দল’ থাকে না, তা পরিণত হয় যন্ত্রে। তাতে না থাকে কোনও মতাদর্শের পার্থক্য, না দৃষ্টিভঙ্গির বৈচিত্র। নেতার কথাই হয় শেষ কথা।
বাংলাদেশও সেই পরিণতির অভিমুখেই চলছে কি না, সে প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। এমনিতে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াতেই এখন গণতন্ত্রের পশ্চাৎগতি দৃশ্যমান। এবং তা কেবল রাজনীতিকে পিছিয়ে দিচ্ছে না, অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলছে। প্রশ্ন উঠতে পারে, বাংলাদেশ অর্থনীতির যে ‘ঘুরে দাঁড়ানো’র কাহিনি বিশ্বখ্যাত হয়ে উঠেছিল, গণতন্ত্রের পরিবেশের অভাবে তার কোনও ক্ষতি হবে না তো? বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে না তো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গচ্ছিত ডলার সম্পদ? এই মুহূর্তে এমন নানা অভিযোগে বাংলাদেশ সরকার ব্যতিব্যস্ত। একদলীয় সরকারের আর এক লক্ষণ হল সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে অক্ষমতা, যার জন্য দায়ী দলে অভ্যন্তরীণ পরামর্শের স্বল্পতা। ঠিক তেমনই ঘটছে বাংলাদেশে। তৈরি পোশাক রফতানি হল সে দেশের বিদেশি মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস। তার জন্য আমদানি হয় কাপড়। অভিযোগ, রফতানিকারীরা প্রভাবশালী বলে তাঁদের চাপে কমানো রয়েছে বাংলাদেশি টাকার ডলার-মূল্য, যে কারণে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি।
অর্থনীতির পিছনে যে রাজনীতির ব্যাঘাত, সে সংবাদ এখন আর কানাঘুষো নয়। দলীয় সংগঠন হয়ে পড়েছে মূল্যহীন, দলে ক্ষমতা বৃদ্ধি হচ্ছে শুধু অর্থবান মানুষের, যার ফল ভবিষ্যতে বিষময় হতে পারে। শোনা যাচ্ছে, এ বারের নতুন লীগ সাংসদেরা অনেকেই যুক্ত ছিলেন নানাবিধ কট্টর ইসলামপন্থি ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে। পাশেই রয়েছে ভারত, যেখানে কট্টর হিন্দুত্ববাদীর অভাব নেই। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের ৩৫-৪০ জন নতুন সাংসদ চীনের সঙ্গে নানা ব্যবসায় যুক্ত- টেলিকম, পরিকাঠামো ইত্যাদি। প্রশাসনের সঙ্গে ব্যবসায়িক বহিঃশক্তির মিশ্রণ এক বিপজ্জনক তন্ত্রের পূর্বলক্ষণ।
ভারতের সমস্যা হল, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সহায়ক হয়েও সে প্রতিবেশী দেশটিকে কোনও পথ দেখাতে সাহায্য করতে পারছে না- কারণ সে নিজেও এখন হাঁটা দিয়েছে গণতন্ত্র-বর্জনের পথে। ভীমরাও রামজি আম্বেডকর সংবিধানসভায় তাঁর অন্তিম ভাষণে গণতন্ত্রের অবক্ষয় সম্পর্কে ঊনবিংশ শতকের দার্শনিক জন স্টুয়ার্ট মিলের একটি উক্তি উদ্ধৃত করেছিলেন- গণতন্ত্রের ধারকরা (অর্থাৎ, নাগরিক) যদি তাঁদের স্বাধীনতা সমর্পণ করেন কোনও ‘মহান ব্যক্তির’ চরণে, তবে গণতন্ত্রের কোনও ভবিষ্যৎ নেই। না, আজকের ভারতে সেই ‘মহান ব্যক্তি’-কে চিনে নিতে অসুবিধা হয় না।
আম্বেডকর বলেছিলেন, এক দলের সম্পূর্ণ গরিষ্ঠতা প্রতিষ্ঠিত হলে জন্ম হবেই ‘মহান নেতা’র, এবং মৃত্যু ঘটবে গণতন্ত্রের। দক্ষিণ এশিয়ায় এখন এই সতর্কবাণীটি বিশেষ ভাবে প্রযোজ্য।
I know this web site gives quality dependent content and extra stuff,
is there any other web site which gives these things in quality?
Feel free to surf to my site – vpn special coupon code 2024
This piece of writing will assist the internet visitors for building up new blog or even a weblog
from start to end.
my website; vpn special coupon code (vpnspecialcouponcode.wordpress.com)
Have you ever considered writing an e-book or guest authoring
on other sites? I have a blog centered on the same information you discuss and would love to have you share some stories/information. I
know my viewers would appreciate your work. If you’re even remotely interested,
feel free to shoot me an e mail.
Also visit my web-site … vpn meaning
I am curious to find out what blog platform
you have been working with? I’m having some minor security problems with my latest website and I’d like to find something
more safeguarded. Do you have any suggestions?
Visit my web blog: vpn special coupon code
Keep on working, great job!
My blog: best vpn deal
Inspiring quest there. What occurred after? Good luck!
Feel free to surf to my blog post: facebook vs eharmony to find love online
Hello, i feel that i saw you visited my weblog thus i came to
go back the choose?.I’m attempting to find things to improve my website!I assume its ok to use
a few of your concepts!!
Here is my website: eharmony special coupon code 2024
Good day! This is my first visit to your blog! We are a
collection of volunteers and starting a new initiative in a
community in the same niche. Your blog provided us
valuable information to work on. You have done a marvellous job!
Feel free to visit my page nordvpn special coupon code 2024