ট্রাম্পের নতুন শুল্ক হুমকিকে উপেক্ষা করে পুঁজিবাজারে উত্থান অব্যাহত

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রথম দফায় ২ এপ্রিল ঘোষিত শুল্কে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হলেও, এখন বিনিয়োগকারীরা এই আশায় অপেক্ষা করছেন, হয় সমঝোতা হবে কিংবা সময় বাড়বে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক হুমকিকে উপেক্ষা করে বিনিয়োগকারীরা বাজারে আস্থা রাখায় শুক্রবার (১১ জুলাই) এশিয়ার অধিকাংশ শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।
এর ফলে নিউইয়র্ক ও লন্ডনের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা অনুসরণ করার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী, বেশিভাগ দেশই কোনো না কোনো সমঝোতায় পৌঁছে ট্রাম্পের এই কঠোর শুল্কনীতি এড়াতে পারবে।
হংকং থেকে এএফপি জানায়, গত সপ্তাহে ট্রাম্প ২০টিরও বেশি দেশের সরকার প্রধানদের কাছে চিঠি পাঠান। চিঠিতে জানানো হয়েছে, আগামী ১ আগস্টের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি না হলে নতুন শুল্ক কার্যকর করা হবে। এছাড়াও ট্রাম্প তামা আমদানিতে ৫০ শতাংশ, ওষুধে ২০০ শতাংশ এবং ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথাও উল্লেখ করেন।
বৃহস্পতিবার তিনি কানাডার ওপর ৩৫ শতাংশ এবং অন্যান্য অধিকাংশ দেশের ওপর ২০ শতাংশ পর্যন্ত সার্বজনীন শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। এই শুল্প বর্তমানে ১০ শতাংশ। এই পদক্ষেপগুলো যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের ‘বাণিজ্য ক্ষতির অবসান’ ঘটাতে নেয়া হয়েছে বলে হোয়াইট হাউস দাবি করেছে।
ট্রাম্প এনবিসি নিউজকে বলেন, ‘বাকি সব দেশকেই শুল্ক দিতে হবে। সেটা ২০ শতাংশ হোক বা ১৫ শতাংশ। এখনই সেটা আমরা চূড়ান্ত করব।’
তিনি আরো দাবি করেন, ‘আমি মনে করি শুল্ক খুব ভালোভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। আজ শেয়ারবাজার নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।’
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রথম দফায় ২ এপ্রিল ঘোষিত শুল্কে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হলেও, এখন বিনিয়োগকারীরা এই আশায় অপেক্ষা করছেন, হয় সমঝোতা হবে কিংবা সময় বাড়বে।
বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের তিনটি প্রধান সূচকই বেড়েছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এবং নাসডাক নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে। এর আগে লন্ডনের এফটিএসই ১০০ সূচকও সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছিল।
এশিয়ার বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। হংকং এক দশমিক ছয় শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া সাংহাই, সিঙ্গাপুর, সিউল, তাইপে, ম্যানিলা ও জাকার্তা সবই ইতিবাচক ধারায় ছিল। তবে টোকিও, সিডনি ও ওয়েলিংটন কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এসপিআই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের বাজার বিশ্লেষক স্টিফেন ইনেস বলেন, ‘যখন বাজার একটু স্থির হচ্ছিল, ঠিক তখনই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবার ঝাঁকুনি দিলেন। এখন তার শুল্ক কৌশল শুধু বাণিজ্য ভারসাম্য নয়, আধিপত্য প্রতিষ্ঠার অস্ত্রও হয়ে উঠেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিটি চিঠিই বাণিজ্য অংশীদারদের উদ্দেশে পাঠানো একটি দাবার চাল, যা বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় যেন একটি চড়।’