তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
তাইওয়ানের কাছে ২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এই সংক্রান্ত একটি প্যাকেজের অনুমোদন দিয়েছে।
শনিবার ব্রিটিশ সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এই প্যাকেজের আওতায় ইউক্রেনে পরীক্ষিত একটি উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাও রয়েছে।
তাইওয়ানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকা সত্ত্বেও দেশটিকে আত্মরক্ষার উপায় সরবরাহ করতে একটি আইনের মাধ্যমে প্রতিশ্র“তিবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র।
পেন্টাগনের ডিফেন্স সিকিউরিটি কো-অপারেশন এজেন্সি বলেছে, অস্ত্র বিক্রির নতুন এই প্যাকেজে ১.১৬ বিলিয়ন ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র ও রাডার সিস্টেম রয়েছে। যার মূল্য আনুমানিক ৮২৮ মিলিয়ন ডলার। ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার প্রধান ঠিকাদার হবে আরটিএক্স কর্প (আরটিএক্সডটএন)।
এক বিবৃতিতে পেন্টাগন বলেছে, ‘প্রস্তাবিত এই বিক্রয় যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয়, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার স্বার্থে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণ ও একটি বিশ্বাসযোগ্য প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বজায় রাখতে প্রাপকের অব্যাহত প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘প্রস্তাবিত বিক্রয় প্রাপকের নিরাপত্তা উন্নত করতে এবং এই অঞ্চলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সামরিক ভারসাম্য ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি বজায় রাখতে সহায়তা করবে।’
ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার মধ্যে তিনটি ন্যাশনাল অ্যাডভান্সড সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম (এনএএসএএমএস) রয়েছে, যেটি মাঝারি-পাল্লার আকাশপ্রতিরক্ষা সমাধানের জন্য ব্যবহার করা যাবে। এনএএসএএমএস সিস্টেমটি ইউক্রেন যুদ্ধে পরীক্ষা করা হয়েছে। আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতার একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির প্রতিনিধিত্ব করে এটি। এর চাহিদা থাকায় তাইওয়ানে এটি রফতানি করছে যুক্তরাষ্ট্র।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন সরকারের একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, এনএএসএএমএস তাইওয়ানের জন্য একটি নতুন অস্ত্র। এই অঞ্চলে শুধু অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়াই বর্তমানে এটি পরিচালনা করছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। ইউক্রেনে এনএএসএএমএসের ব্যবহারের উল্লেখ করে দেশটি বলেছে, এটি চীনের ঘন ঘন সামরিক কৌশলের মুখে তাইওয়ানের বিমান প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে সহায়তা করবে। দক্ষিণ চীন সাগরে সামুদ্রিক সরবরাহ লাইন রক্ষার জন্য নিজস্ব সাবমেরিন নির্মাণসহ চীনের যে কোনো আক্রমণকে আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষমতা অর্জনের জন্য তাইওয়ানের সামরিক বাহিনী তার অস্ত্র ভান্ডারকে আরও জোরদার করছে।
তাইওয়ানকে নিজ ভূখণ্ডের অংশ বলে মনে করে চীন। দেশটি তাইওয়ানের বিরুদ্ধে সামরিক চাপ বাড়াচ্ছে। গত সপ্তাহে দ্বীপরাষ্ট্রটির চারপাশে নতুন দফায় একটি যুদ্ধ মহড়া করেছে চীন। লাই চিং-তে মে মাসে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এ ধরনের দ্বিতীয় মহড়া ছিল এটি।