নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দেওয়া কেন কাজ করে না?
সরকার কোনো পণ্যের সর্বোচ্চ দাম বা সিলিং বেঁধে দিলে ভোক্তারা বেশি কিনতে চাইবেন। তখন বিক্রেতারা আগের চেয়ে কম বেচতে চাইবেন। এতে উদ্বৃত্ত চাহিদা সৃষ্টি হয়ে দামকে ঠেলে ওপরে তুলে দেবে। তাই সিলিং দেওয়া কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নয়।
অনেকটা উটপাখির মতো দেখতে ইমু পাখি পেছনে হাঁটতে পারে না। বাজার অর্থনীতির চাকাও ইমু পাখির মতো পেছনে ঘোরে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নতুন তত্ত্ব দিয়ে বাজারব্যবস্থাকে পেছনে হাঁটতে বাধ্য করলে ইমু পাখির সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর পার্থক্য থাকে কোথায়? আশা করব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অর্থনীতি শাস্ত্রের প্রতি সুবিচার করে বাজারে জোগানের দিকে নজর দেবে। তারা সিন্ডিকেট চক্র ভেঙে ভোক্তাদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করবে।
হার্ভার্ডে ছাত্রদের বিক্ষোভ
২০০৮-০৯ সালে বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের পর যুক্তরাষ্ট্রে বাজার অর্থনীতি নিয়ে নতুন ভাবনা শুরু হয়। ২০১১ সালে একদল মানুষ শেয়ারবাজারের শীর্ষ কেন্দ্র নিউইয়র্কের ওয়াল স্ট্রিটের কাছে অবস্থান নেয়। এর নাম বিখ্যাত ‘অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট’ আন্দোলন। বাজার অর্থনীতির দুর্দমনীয় বিকাশে আয়বৈষম্য বৃদ্ধি ও রাজনীতিতে পুঁজির দাপটের বিরুদ্ধে মূলত বামঘেঁষা ও শোষণবিরোধী মানুষেরা এই সমাবেশ করে নিউইয়র্কের আর্থিক খাতের জন্য সুপরিচিত ওই এলাকায়। এই আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ওই বছরের নভেম্বরে হার্ভার্ডের একদল ছাত্র অধ্যাপক গ্রেগরি ম্যাংকিউয়ের অর্থনীতির ক্লাস বর্জন করেন।
অধ্যাপক ম্যাংকিউ তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। ছাত্রদের অভিযোগ, বুশ প্রশাসন ম্যাংকিউয়ের উপদেশ মেনে অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। তাঁর উপদেশ লাগামহীন বাজার অর্থনীতির বিকাশ ঘটিয়ে ধনিক শ্রেণির দ্রুত সম্পদ বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে, যা শেষতক জাতিকে সংকটাপন্ন করেছে। ছাত্রদের অভিযোগ, তাঁর অণুমাত্রিক বা মাইক্রো অর্থনীতির বইয়ে এই দর্শন দেওয়া হচ্ছে, যা তাদের ভাষায় বর্জনীয়। এককালে পল স্যামুয়েলসনের বই যেমন বিশ্বে বাজার করেছে, আজকাল ম্যাংকিউয়ের বইও অর্থনীতির পাঠ্য হিসেবে সম্ভবত বিশ্বে এক নম্বরে রয়েছে। আমিও বইটি আমার মাইক্রো ক্লাসে পাঠ্য করেছি।
দাম নির্ধারণ কেন ব্যর্থ
ম্যাংকিউ দেখিয়েছেন, যেকোনো দেশে সরকারের জিনিসপত্রের দাম বেঁধে দেওয়ার কাজটি কখনো অপ্রয়োজনীয়, কখনো অকার্যকর। সে জন্য দাম বেঁধে দেওয়ার কাজ থেকে সরকারের সরে আসা উচিত। এ জাতীয় কাজ কখনো ঘাটতি, কখনো উদ্বৃত্ত সৃষ্টি করে অর্থনীতিতে বিভ্রাট বৃদ্ধি করে। এ কথা অন্য পাঠ্যবইয়েও রয়েছে। বিষয়টি ম্যাংকিউয়ের কোনো নতুন তত্ত্ব নয়।
মূল দর্শন এসেছে অর্থশাস্ত্রের অন্যতম গুরু অ্যাডাম স্মিথের কাছ থেকে, যিনি বাজারকে সরকারের হস্তক্ষেপমুক্ত রাখতে বলেছেন। তাঁর মতে, মুক্ত চাহিদা ও মুক্ত জোগান বাজারে দ্রব্যসামগ্রীর ন্যায্য দাম ঠিক করে দেবে। সরকার শুধু নৈতিকতার বিষয়টি দেখবে। স্মিথ গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে নৈতিকতা পড়াতেন।
এখানে ম্যাংকিউয়ের কোনো দোষ দেখা যাচ্ছে না। তাহলে শিক্ষার্থীরা খেপল কেন? এই ক্ষোভের কারণ মূলত রাজনৈতিক। রক্ষণশীল রিপাবলিকান পার্টি অতি মুক্তবাজারে বিশ্বাস করে।
ডেমোক্র্যাটরাও বাজারে ও প্রতিযোগিতায় বিশ্বাস করেন। তবে এঁদের নীতিতে সরকারের কিছু ভূমিকা থাকে, যা আয়বৈষম্য কমায়। মুক্তবাজারের দৌড়ে মধ্যবিত্ত ও গরিবদের তুলনায় ধনীরা অনেক বেশি সম্পদ বানাতে পারে। রিপাবলিকানরা ধনীদের কর কমানোর পক্ষে। রোনাল্ড রিগ্যান ও জর্জ বুশ এই কাজটি করেছেন সুকৌশলে। ম্যাংকিউ ওই দর্শনের উপদেষ্টা বলেই ছাত্রদের ক্ষোভ তাঁর ওপর। কিন্তু দাম নির্ধারণে সরকারের ব্যর্থতার বার্তা তাঁর বইয়ে অকাট্যভাবেই উল্লেখ করা হয়েছে।
দামের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারণ
ধরা যাক, পেঁয়াজের বাজারদর প্রতি কেজি ১০০ টাকা। সরকার যদি এর সর্বোচ্চ দাম বা সিলিং ৮০ টাকায় বেঁধে দেয়, তাহলে ভোক্তারা বেশি কিনতে চাইবে। আবার বিক্রেতারা আগের চেয়ে কম বেচতে চাইবে। ভোক্তাদের মোট চাহিদা বিক্রেতার মোট জোগানকে ছাড়িয়ে বাজারে উদ্বৃত্ত চাহিদা সৃষ্টি করবে, যা আবার দামকে ঠেলে ওপরে তুলতে থাকবে। যতক্ষণ না দাম ১০০ টাকা স্পর্শ করছে, ততক্ষণ এ অবস্থা চলতে থাকবে। তাই সিলিং দেওয়া কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নয়।
অন্যদিকে ধরা যাক, ২০ কেজি ধানের বস্তার বাজারদর ৬০০ টাকা। সরকার এর সর্বনিম্ন দাম বা ফ্লোর ঠিক করে দিল ৭০০ টাকা। এতে কৃষকেরা বেশি ধান বেচতে ছুটবে বাজারে। কিন্তু আড়তদার বেশ অসন্তুষ্ট। সে কিনবে কম। কৃষকের জোগান পাইকারের চাহিদাকে ছাড়িয়ে গেল বলে বাজার উদ্বৃত্ত জোগানের কবলে আক্রান্ত হবে। এই উদ্বৃত্ত জোগানই আবার দামকে টেনে ওই ৬০০ টাকাতেই নামাবে। সরকার নিজে কিনে নিলে সেটি অন্য কথা।
সিলিং দিলে চাহিদা-জোগানের মিথস্ক্রিয়া ওই সিলিংকে ছাড়িয়ে দামকে ওপরে তুলে দেয়। ফ্লোর দিলে ওই একই মিথস্ক্রিয়া দামকে নিচে টেনে নামায়। বাজারের এই অপ্রতিরোধ্য শক্তিকে মোকাবিলা করা যায় না বলেই সরকারকে ‘হ্যান্ডস অফ’ বা দামের ওঠানামায় নাক না গলাতে বলছেন বাজারবাদী অর্থনীতিবিদেরা। ফেডারেল রিজার্ভ অব সেন্ট লুইসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস নিলি রসিকতা করে বলেছেন, দাম নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারটি ইতিহাসের পাতায়ই ভালো মানায়।
পেঁয়াজ, ডিম ও আলুর অপমান
সম্প্রতি দেখলাম সরকার পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের দাম বেঁধে দিয়েছে—যাকে বলে ‘সিলিং’। প্রথমে ভাবলাম, উত্তর কোরিয়ার কোনো খবর ভুলে বাংলাদেশের নামে ছাপা হয়ে গেল কি না। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে বাংলাদেশ বাজার অর্থনীতিতে প্রবেশ করেছে। আজ ‘তেত্রিশ বছর কাটল/ কেউ কথা রাখেনি।’
বাজার অর্থনীতিতে আজকাল উল্টো গমন চোখে পড়ছে। এতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হচ্ছে। সুদের হারের সিলিং আর বিনিময় হারের ফ্লোর—দুটিই অর্থনীতির সমূহ ক্ষতি করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও এই অবাজারীয় উল্টো গমনে যে শরিক হবে, তা আগে ধারণা করা যায়নি।
লোকে বলে ‘বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী’। হঠাৎ এই লক্ষ্মীছাড়া পদক্ষেপ পেঁয়াজ, আলু আর ডিমকে আরও অপমানিত করল। কৃত্রিমভাবে এদের দাম আরও বেড়ে গেল। এই দাম নির্ধারণ মজুতদারদের জন্য এক সংকেত, যা তাঁদের বুঝিয়ে দিচ্ছে কোন কোন জিনিসের মজুত বাড়াতে হবে।
এঁদের মধ্যে আলু ও পেঁয়াজ ঈর্ষণীয় যৌবনের অধিকারী, দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রাখা যায়। তাই সরকারের এই দাম বেঁধে দেওয়ার সংকেত সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের ভবিষ্যৎ মুনাফা বৃদ্ধির নতুন প্রেরণা দেবে। সরকার সিলিং তখনই দিতে পারে, যখন এসব পণ্যের জোগানের চাবি সরকারের হাতে থাকে। এত কাজ থাকতে সরকার নিজেই আলু, পেঁয়াজ আর ডিমের উৎপাদনে নামবে বলে তো মনে হয় না। নামলে অব্যবস্থা আরও বাড়বে। বাড়বে ভোক্তা অত্যাচার।
কৃষিপণ্যের দাম ও ‘মাকড়সার জাল’
অর্থনীতিবিদ নিকোলাস ক্যালডর ১৯৩৪ সালে কৃষিপণ্যের দামের অতিরিক্ত উত্থান-পতন নিয়ে মাকড়সার জাল বা ‘কবওয়েব মডেল’ দেন। মাকড়সা যখন জাল বুনে, তখন সে একবার অনেক ওপরে ওঠে।
আবার অনেক নিচে নেমে যায়। কৃষিপণ্যের দামের ক্ষেত্রেও একেক কালপর্বের ব্যবধানে এমন ঘটে থাকে। ধরা যাক, গত বছর আলুর বাজারদর ভালো ছিল না বলে আলুচাষিরা চাষাবাদ কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ কারণে চলতি বছর বাজারে অনেক কম আলু এসেছে। ফলে দাম অনেক বেড়ে গেছে। এই বর্ধিত দাম কৃষককে আগামী বছর অনেক বেশি আলু উৎপাদনে উৎসাহিত করবে। ভবিষ্যতে আবার আলুর জোগান বেড়ে গেলে দাম আবার পড়ে যাবে।
যেহেতু কৃষিপণ্যের উৎপাদন একটি ‘গর্ভধারণ পর্ব’ বা ‘জেস্টেশন পিরিয়ড’ পার করে, তাই এসব পণ্যের দাম সব সময় চাহিদা ও জোগানের বিলম্বিত খেলার শিকার হয়ে অতিরিক্ত মাত্রায় ওঠানামা করে। অন্যান্য শিল্পদ্রব্যের ক্ষেত্রে এমনটা খুব বেশি হয় না। প্লাস্টিকের ব্যাগের দাম ‘কবওয়েব মডেল’–এর শিকার নয়। চাহিদা থাকামাত্রই ব্যাগের উৎপাদন বাড়ানো যায়। কিন্তু ডিমের বেলায় এটা সম্ভব নয়। ধান–চাল বা আদা–রসুনের বেলায় আরও সম্ভব নয়।
প্রতিকারের উপায় কী
প্রতিকারের উপায় বের করার আগে দুটি বিষয় মেনে নিতে হবে—১. কৃষিপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ কোনো সমাধান নয়। দাম নিয়ন্ত্রণ বরং পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করে এবং মজুতদার ও সিন্ডিকেট গোষ্ঠীর মুনাফাকে বাড়িয়ে দেয়। শেষে ভোক্তার অর্থশোষণ আরও বাড়ে। ২. কৃষিপণ্যের জোগান স্বল্প মেয়াদে অস্থিতিস্থাপক বা অনড় বলে এদের দামের অস্থিরতা অন্যান্য দ্রব্যের দামের ওঠানামার চেয়ে বেশিই হয়ে থাকে।
এই দুটি বিষয় মেনে নিলে আপাতদৃষ্টে মনে হবে কৃষিপণ্যের দাম নিয়ে ভাবনা অর্থহীন। কিন্তু অনেক দেশের উদাহরণ থেকে বোঝা যায়, এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিকারের পথ ঠিকই রয়েছে।
প্রথম কাজ হচ্ছে আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়। ডিম, আলু আর পেঁয়াজের মূল্যবিদ্রোহ খুব স্পষ্ট করেই বুঝিয়ে দিয়েছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো মধ্যে বনিবনা নেই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অর্থ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অদক্ষতার চিপায় পড়ে দোষী বনে গেছে। অর্থ মন্ত্রণালয় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কোনো অর্থনৈতিক রীতিনীতি অনুসরণ করেনি। বরং কাজ করেছে উল্টো। রাজস্ব আদায়ের অক্ষমতা ঢাকতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দিয়ে টাকা ছাপিয়েছে, ব্যাংকঋণ বাড়িয়েছে দেদার, সুদহারের টুপি ধরে রেখেছে ধনিক ব্যবসায়ীদের স্বার্থে। আগাগোড়াই অর্থ মন্ত্রণালয় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আন্তরিক ছিল না, এখনো আন্তরিক নয়।
মন্ত্রণালয়ের আন্তরিকতার অভাবেই মূল্যস্ফীতি নিত্যপণ্যের জন্য দীর্ঘ সময় ধরেই ১২ ভাগের ওপরে রয়েছে, যা নিরন্তর গরিবকে শাস্তি দিয়ে যাচ্ছে। সরকারের অনেক সাফল্য ম্লান করে দিচ্ছে। মূল্যস্ফীতির পাগলা ঘোড়া লাগামহীন বলেই আজ নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ নিয়ে কথা উঠছে। বাণিজ্যমন্ত্রীকে এটি স্পষ্ট করতে হবে যে তাঁর সাফল্যের নোঙর অর্থ মন্ত্রণালয়ের বালুচড়ায় আটকে আছে।
দ্বিতীয়ত, কৃষি মন্ত্রণালয়কে বুঝতে হবে, কোন কৌশল ‘কবওয়েব মডেল’-কে ব্যর্থ করে দিয়েছে। এর নাম গবেষণাভিত্তিক পূর্বানুধাবন বা ‘ফোরকাস্টিং রিসার্চ’। বঙ্গবন্ধু কৃষি গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও গবেষণার ওপর বৃত্তি ও পদক চালু করেছেন।
কিন্তু যাঁদের গবেষণা করার কথা, তাঁরা কই। অর্থ মন্ত্রণালয় আদৌ কোনো ফোরকাস্টিংয়ে বিশ্বাস করে বলে মনে হয় না। বিন্দুমাত্র গবেষণার স্পর্শ থাকলে গত দুটি বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্ভট সংখ্যার সান্ত্বনা থাকত না। বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণা বিভাগ বেশ বড়। কিন্তু কিছু উচ্চমার্গীয় কেরানির দাপটে কোনো গবেষণা গণমাধ্যমের মুখ দেখে না। পাছে কোনটি সরকারকে বিব্রত করে, এই চিন্তায় মগ্ন থাকেন কিছু পদজীবী কর্তা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার চেয়ে রাজনীতি অনেক লাভজনক। সঠিক গবেষণা থাকলে আগেই হিসাব–নিকাশ করে বলে দেওয়া যায়, আলুর উৎপাদন কত হবে, বার্ষিক চাহিদা কত এবং কত টন আমদানি করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী কিনতে ‘আলডি’ বা ‘ওয়ালমার্ট’-এ গিয়ে লক্ষ করেছি, কোভিডের পণ্যের দাম কিছু কিছু বাড়ছে, যাকে বলে ‘ক্রিপিং ইনফ্লেশন’, যা আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
কিন্তু দামের চরম উত্থান-পতন কখনোই দেখিনি। কারণ, আগেভাগেই গবেষণা ও পূর্বাভাস দিয়ে জোগান নিশ্চিত করা হয়। জোগান বেড়ে গেলে আগেই রপ্তানির বাজার ঠিক করা যায়।
গবেষণাজাত পূর্বাভাস ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কাজ আগেভাগে করলে সরকারকে দাম বেঁধে দেওয়া, সিন্ডিকেট দাবড়ানো, ভোক্তার পকেট খালি করা—ইত্যাদি নাটকের মধ্য দিয়ে যেতে হয় না।