নিত্যপণ্যে বাড়তি দাম, ছোট হচ্ছে শাকের আঁটিও
দীর্ঘদিন ধরেই নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি নেই। অস্বস্তি বেড়েছে মাছ-মাংসের বাজার, কাঁচাবাজার, এমনকি মসলাজাত পণ্যের বাজারেও। বিভিন্ন সময় নানা পণ্যের দাম কিছুটা ওঠানামা করলেও বাজার ছুটছে ঊর্ধ্বমুখী। নতুন করে বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে দেশি রসুন।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সপ্তাহজুড়ে পেঁয়াজের বাজারে বেড়েছে ঝাঁজ। ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা কেজিতে, যা গত সপ্তাহেও ছিল ৭০ থেকে ৮৫ টাকা। মাঝারি মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। বিদেশি নিম্নমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।
বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, মাস দেড়েক আগেও যেখানে রসুনের কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে ছিল, এখন তা কেজিতে ২০ টাকার উপরে বেড়েছে। ভালো মানের রসুন বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা। আমদানি করা রসুনের দামও ২৩০ থেকে ২৫০ টাকায়।
পেঁয়াজ-রসুনের মতো আদা ও জিরাসহ অন্যান্য মসলার দামও ঊর্ধ্বমুখী। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আদা। কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে ইন্দোনেশিয়ার আদা ২৫০ থেকে ২৬০ এবং মিয়ানমারের আদা ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেশ কয়েক মাস স্থির থাকলেও মসুর ডাল পাইকারি পর্যায়ে বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। খুচরা বাজারেও কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকার মতো।
বাজারে বিভিন্ন শাকের দামও চড়া। ক্রেতারা বলছেন, বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শাকের আঁটির আকার ছোট হয়েছে। সেই সঙ্গে দামও কিছুটা বেড়েছে। প্রতি আঁটি লাল শাক, মূলা ও কলমি শাক স্থানভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে পুঁই, মিষ্টি কুমড়া, লাউ শাকের আঁটি ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
বাজারে ন্যূনতম ৫০-৬০ টাকার কমে কোনো সবজি মিলছে না। পটল-ঢেঁড়সের মতো সবজিও বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৫০ টাকার উপরে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পটল, চিচিঙা, ছোট শসা, জালি কুমড়া, কাঁকরোল স্থানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা কেজি। ঝিঙা, বরবটি, শসা, কচুর মুখী ও করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়।
টমেটো কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, আলু ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বড় আকারের কালো বেগুন ৭০ থেকে ৯০ টাকা, মূলা ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৫০-৬০ টাকা, ফুলকপি ৫০-৬০ টাকা, পটল ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সম্প্রতি হঠাত দাম বেড়ে যায়। ডজনে দাম হয়ে গিয়েছিল ১৮৫ টাকা। তবে বর্তমানে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিমে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কমেছে। এখন ডজনে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়।
মাছের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, স্থানভেদে পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি। বড় ও মাঝারি তেলাপিয়া ২৫০ টাকা থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজির রুই-কাতলার ফাম হাঁকানো হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি, যা সম্প্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা বেশিতে কিনতে হচ্ছে। দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের রুই-কাতলার মাছের দাম প্রতি কেজি ৩৭৫ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শোল মাছ প্রতি কেজি ৬০০-৬৫০ টাকা। শিং মাছ, বাইলা মাছ প্রতি কেজি প্রকারভেদে ৬০০-৬৭০ টাকা।
এছাড়া মৌসুম চললেও ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ১ হাজার টাকারও বেশি। ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকায়। প্রতিকেজি রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়।
এদিকে মাংসের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। সোনালী মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। দেশি মুরগি কিনতে কেজিতে খরচ ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা। গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্থানভেদে কম-বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।