Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Trending

পাচার কমায় ডলারের জোগান বেড়েছে, কিছুটা স্বস্তি বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায়

সাম্প্রতিক সময়ে দেশ থেকে আমদানি-রপ্তানির নামে ও অনলাইনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার পাচার বহুলাংশে কমেছে। একই সঙ্গে রপ্তানি আয়, রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে, কমেছে আমদানি ব্যয়। বৈদেশিক অনুদান আসার পরিমাণও বাড়তে শুরু করেছে। এসব মিলে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের চেয়ে খরচ কিছুটা কমেছে। এছাড়াও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পাওয়ার প্রবণতাও কমেছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ফলে আংশিক স্বস্তি ফিরেছে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায়। 

দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি হালনাগাদ প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এর আগে গত আড়াই বছর ধরে দেশে ডলারের প্রচণ্ড সংকট চলছে। এতে ডলারের দাম ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা হয়েছে। ওই দামেও এখন ডলার মিলছে কম। আরও বেশি দামে আমদানির ডলার কিনতে হচ্ছে।

সূত্র জানায়, জুলাইয়ের মধ্য ভাগ থেকে ছাত্রদের আন্দোলনের কারণে ব্যাংক খাতে লেনদেনে স্থবিরতা বিরাজ করছিল। ওই সময়ে ব্যাংকগুলোতে এলসি খোলার হার যেমন কমেছে, তেমনি বৈদেশিক লেনদেনও কমেছে। এতে টাকা পাচারও কম হয়েছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নতুন সরকার দায়িত্বভার নিয়েছে ৮ আগস্ট। ওই সময় থেকে ব্যাংক খাতে লেনদেনে কড়াকড়ি আরোপ করে। এতেও এখন পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রা পাচার কম হয়েছে। তবে নগদ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্থানীয় মুদ্রায় কিছু পাচার হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকের মাধ্যমে বড় অঙ্কের কোনো বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হয়নি। উলটো ওই সময়ে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বেড়েছে। রপ্তানি আয় দেশে আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফলে এ খাতে আয় বাড়ছে। জুনের রপ্তানির আয়ের বৈদেশিক মুদ্রা এখন দেশে আসছে। এর আগের ও পরে রপ্তানি করা পণ্যের মূল্যও আসছে। এতে রপ্তানি আয় রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে। জুনে দেশে রপ্তানি আয় এসেছে রেকর্ড পরিমাণে ৭১৩ কোটি ডলার। যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। আগে জানুয়ারিতে রপ্তানি আয় এসেছে সর্বোচ্চ ৫৭২ কোটি ডলার। এরপর মার্চ পর্যন্ত ৫০০ কোটি ডলারের বেশি করে প্রতি মাসে আয় এসেছে। এপ্রিল থেকে এ আয় ৫০০ কোটি ডলারের নিচে নেমে যায়। মে মাসে রপ্তানি আয় এসেছে ৩৬৭ কোটি ডলার। জুনে তা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১৩ কোটি ডলারে।

রপ্তানিকারকদের মধ্যে এমন একটি বার্তা গেছে, নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়বে। এতে ডলারের  দাম আগামীতে না বেড়ে বরং কমে যেতে পারে। এমন বার্তায় রপ্তানিকারকরা ডলার দেশে আনা শুরু করেছেন। জুনে যেসব ডলার এসেছে তার সিংহভাগই বকেয়া রপ্তানি আয়।

প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, গত অর্থবছরে আমদানি-রপ্তানি আয় হয়েছিল ৪ হাজার ৪৪৭ কোটি ডলার। তার আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে হয়েছিল ৪ হাজার ৩৩৬ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১১১ কোটি ডলার। শতকরা হিসাবে ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

রপ্তানি আয়ের যে বাড়তি হিসাব দেখানো হয়েছিল এখন বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে জুলাই-মে সময়ে রপ্তানি আয় ৬ শতাংশ কমে গিয়েছিল। জুনে আয় বাড়ায় আড়াই শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রেমিট্যান্সের প্রবাহও এখন বাড়তে শুরু করেছে। জুলাইয়ে অস্থিরতার মধ্যেও রেমিট্যান্স এসেছে ১৯১ কোটি ডলার। চলতি আগস্টে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। চলতি মাসে ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

বৈদেশিক অনুদানের প্রবাহও বাড়তে শুরু করেছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে অনুদান কমেছিল ২৩ শতাংশ। গত অর্থবছরে কমেছে ৪ শতাংশ। সাম্প্রতিক সময়ে অনুদান বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে বন্যা ও নতুন সরকারের প্রতি সহায়তার কারণে বিভিন্ন প্রকল্পে সহায়তা দিতে বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীরা আগ্রহ প্রকাশ করছে।
এদিকে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত অর্থবছরে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ১৭০ কোটি ডলার। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৫ কোটি ডলার বেশি।

বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ডলার সংকট মোকাবিলায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও জাইকা থেকে অতিরিক্ত ১০০ কোটি ডলার, বিশ্বব্যাংক থেকে ১৫০ কোটি ডলার ও আইএমএফ থেকে চলতি প্যাকেজের পাশাপাশি আরও ৩০০ কোটি ডলার সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, এসব খাত থেকে ডলারের জোগান এলে বাজারে এর প্রবাহ বাড়বে। ফলে সার্বিকভাবে ডলার সংকট কেটে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা বাজার স্থিতিশীল হবে। এতে একদিকে টাকার মানের ওপর চাপ কমবে। অন্যদিকে উৎপাদন খাত চাঙা করা সম্ভব হবে। তারল্যের সংকটও কমবে। এর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির চাপও কিছুটা কমে আসবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি ব্যয় হয়েছিল ৭ হাজার ৭৫ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে তা কমে ৬ হাজার ৩২৪ কোটি ডলার হয়েছে। ওই সময়ে আমদানি ব্যয় কমেছে ৭৫১ কোটি ডলার। শতকরা হিসাবে ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ। তবে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে। আগের বকেয়া দেনা শোধ করতে এখন ডলারের জোগান ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্স সংগ্রহ করে দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সাধারণত ডলার দেওয়া হচ্ছে না। রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় উলটো কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন বাজার থেকে ডলার কিনে নিচ্ছে। ফলে রিজার্ভে স্থিতিশীলতা এসেছে। আগস্টে রিজার্ভ কমেনি। বাড়েওনি। স্থিতিশীল রয়েছে। এর মধ্যে থেকেই বৈদেশিক ঋণ ও আমদানির দায় পরিশোধ করা হচ্ছে। বর্তমানে রিজার্ভ রয়েছে ২০৪৮ কোটি ডলার। যা দিয়ে ৪ দশমিক ৪ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, রিজার্ভে বড় চাপ আসে আমদানির এলসি খুলে দেনা শোধ করার পরও পণ্য দেশে না এলে। অর্থাৎ ডলার পাচার হয়ে গেলে। এভাবে প্রতি মাসে হাজার হাজার ডলার পাচার হয়েছে ব্যাংকের মাধ্যমে। এ পাচার বন্ধ হলে রিজার্ভে চাপ কমে যাবে। এছাড়া অন্য চাপগুলো সহজেই মোকাবিলা করা যায়। কিন্তু পাচারের চাপ মোকাবিলা করা সম্ভব হয় না।

প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়ায় এবং খরচের চেয়ে আয় বেশি হওয়ায় বিভিন্ন খাতে ঘাটতিও কমে এসেছে। আমদানি কমায় ও রপ্তানি বাড়ায় বাণিজ্য ঘাটতি কমছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছিল ২ হাজার ৭৩৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৪৩ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে ঘাটতি কমেছে ৪৯৫ কোটি ডলার। শতকরা হিসাবে ১৮ দশমিক ০৮ শতাংশ। রপ্তানি বাড়ায় আগামীতে এ ঘাটতি আরও কমতে পারে।

চলতি হিসাবে ঘাটতি কমেছে সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের জোগান বাড়ার কারণে। বিশেষ করে আগের বকেয়া আয়সহ অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা এখন দেশে আসছে। এতে ব্যাংকগুলোতে ডলারের জোগান বেড়েছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রায় চলতি হিসাবে ঘাটতি ছিল ১ হাজার ১৬৩ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৫১ কোটি ডলারে। ঘাটতি কমেছে ৫১২ কোটি ডলার। শতকরা হিসাবে কমেছে ৪৪ দশমিক ০৩ শতাংশ। আগামীতে এ ঘাটতি আরও কমে যাবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে। কারণ এখন বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়তে শুরু করেছে। আগামীতে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে আরও ডলার পাওয়া যাবে। তখন এ ঘাটতি আরও কমবে।

বৈদেশিক মুদ্রার পুরো দায়দেনা সমন্বয় করে বৈদেশিক মুদ্রার সার্বিক হিসাব করা হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে  সার্বিক বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতিতে ঘাটতি ছিল ৮২২ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৩০ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে ঘাটতি কমেছে ৩৯২ কোটি ডলার। শতকরা হিসাবে ৪৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto