পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে এমন গ্রহাণুর পরীক্ষায় ব্যস্ত নাসা

পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে এমন গ্রহাণুর পরীক্ষায় বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ ব্যবহার করবে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
গত বছরের ডিসেম্বরে ‘২০২৪ ওয়াইআর৪’ নামের গ্রহাণুটির সন্ধান পাওয়া গেলেও সম্প্রতি সৌরজগতের আশপাশে এটির যাত্রাপথ সম্পর্কে আরও তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গ্রহাণুটির পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার শঙ্কা এখনও খুব কম। কারণ কোনো ক্ষতি ছাড়াই পৃথিবীর পাশ দিয়ে চলে যাওয়ার প্রায় ৯৮ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে এর।
পৃথিবীকে নিরাপদ রাখতে কোনও সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন হয় কি না তার জন্য গ্রহাণুটির ছোট ছোট ঝুঁকির দিকটিও ভালভাবে খতিয়ে দেখছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তবে এ কাজটিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সময়। কারণ কয়েক মাসের মধ্যে গ্রহাণুটি বিজ্ঞানীদের চোখের আড়ালে চলে যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৮ সালের আগে এটিকে আর দেখা যাবে না। গ্রহাণুটি যদি সত্যিই পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসে তাহলে বিশ্বের বিভিন্ন মহাকাশ সংস্থাকে আগে থেকেই এটিকে ঠেকানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
গ্রহাণুটির পরীক্ষা করে এর কক্ষপথ আরও ভালভাবে বুঝতে এখন জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করবেন বিজ্ঞানীরা, যেটি নাসা, ইউরোপীয় ও কানাডিয়ান মহাকাশ সংস্থার যৌথভাবে পরিচালনা করে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জেমস ওয়েব ব্যবহারের ফলে গ্রহাণুটি কোথায় যাবে সে সম্পর্কেই কেবল জানা যাবে না বরং এর গতিপ্রকৃতি সম্পর্কেও ধারণা মিলবে। এটি কতটা বড় তার ওপর নির্ভর করে পৃথিবীতে এর আছড়ে পড়ার ঝুঁকি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। এ মুহুর্তে বিজ্ঞানীদের অনুমান বলছে, ১০০ মিটার প্রস্থ ও ৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের ‘২০২৪ ওয়াইআর৪’ নামের গ্রহাণুটি বর্তমানে পৃথিবী থেকে প্রায় চার কোটি ৩৫ লাখ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। প্রথমবারের মতো এর খোঁজ মেলে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে।
এ অনুমান মূলত সূর্য থেকে এটি কতটা আলো প্রতিফলিত করে তার উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করেন বিজ্ঞানীরা। তবে গ্রহাণুটি আলোর কতটা প্রতিফলন ঘটায় তার মাধ্যমে নতুন হিসাবে এর আকারের যথেষ্ট পরিবর্তন হতে পারে। গ্রহাণু থেকে বেরিয়ে আসা ইনফ্রারেড আলো বা তাপ দেখতে পারে ওয়েব টেলিস্কোপটি, যা এর আকার সম্পর্কে আরও ভাল অনুমান দেবে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের।
মার্চ মাসের প্রথম দিকে গ্রহাণুটি পর্যবেক্ষণ করবে জেমস ওয়েব। এ সময় টেলিস্কোপটির কাছাকাছি থাকবে এটি। এর থেকে পাওয়া তথ্য ২০২৮ সালে গ্রহাণুটি আবার অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার আগে এ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়ার জন্য ব্যবহার করবেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তবে ২০২৮ সালে এটি দৃষ্টিসীমার আড়ালে চলে যাওয়ার আগে গ্রহাণুটি পর্যবেক্ষণ করার জন্য কেবল ‘কয়েক মাস’ সময় পাবেন তারা।