Science & Tech

ফাইজারের ব্লাড ক্যানসার থেরাপির অনুমোদন দিল আমেরিকা

বিশেষ এক প্রকার ব্লাড ক্যানসার নিরাময়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওষুধ ও টিকা প্রস্তুতকারী কোম্পানি ফাইজার উদ্ভাবিত চিকিৎসাপদ্ধতি এলরানাটামাবের অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)।’ সোমবার এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে এলরেক্সফিও নামে পাওয়া যাবে এই থেরাপি। ৪৪ মিলিগ্রাম এলরেক্সফিও’র একটি শিশির (ভায়াল) ন্যূনতম দাম ৮ লাখ ২৯ হাজার ৮৯৬ টাকা (৭ হাজার ৫৫৬ ডলার) এবং ৭৬ মিলিগ্রামের একটি শিশির ন্যূনতম মূল্য ১৪ লাখ ৩৩ হাজার ৪২৬ টাকা (১৩ হাজার ৫১ ডলার) ধার্য করা হয়েছে।
যে ব্লাড ক্যানসারের চিকিৎসায় থেরাপিটি ব্যবহার করা যাবে, সেটির নাম মাল্টিপল মায়েলোমা। বিশ্বজুড়ে ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত অধিকাংশ রোগী এই ক্যানসারটির শিকার। এ ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের অস্থিমজ্জায় ক্যানসার কোষ জন্মায় এবং ঘন ঘন বিভাজনের মাধ্যমে এক সময় তা সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে রক্তের লোহিত কণিকা ধ্বংস করতে থাকে।

প্রচলিত চিকিৎসাপদ্ধতিতে মাল্টিপল মায়োলোমার প্রাথমিক স্তরের রোগীদের সুস্থতার নিশ্চয়তা বেশি থাকলেও মধ্যম স্তরের রোগীদের নিরাময়ের ব্যাপারটি অনিশ্চিত। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মধ্যম স্তরের রোগীরা চিকিৎসা বন্ধ করার অল্প সময়ের মধ্যেই ফের তাদের দেহে বাড়তে থাকে ক্যানসার কোষের সংখ্যা। অনেক সময় প্রাথমিক স্তরের রোগীদের বেলাতেও এমন ঘটে।

এ কারণে এই ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল দেহে ক্যানসার কোষের বিস্তার বা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা। এলরেক্সফিও বা এলরানাটামাব ঠিক সেই কাজটিই করে।
এটি আসলে একপ্রকার ঔষধি তরল, যা সিরিঞ্জের মাধ্যমে রোগীদের দেহে প্রবেশ করানো হয়। রোগীদের দেহে প্রবেশের পর এই তরলটির প্রভাবে একটি ক্যানসার কোষ এবং একটি রোগ প্রতিরোধী কোষের সমন্বয়ে একপ্রকার বিশেষ অ্যান্টিবডি গড়ে উঠবে, যা প্রতিনিয়ত ধ্বংস করতে থাকবে ক্যানসার কোষগুলোকে।

অ্যান্টিবডিটির প্রভাবে ক্যানসার কোষের ধ্বংস প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে এবং চুড়ান্ত পর্যায়ে রোগীর অস্থিমজ্জা থেকে এই ক্যানসার কোষের উৎসস্থল নির্মূল হয়ে যাবে।

ফাইজার কোম্পানির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই থেরাপি বা চিকিৎসাপদ্ধতিটির ব্যাপ্তিকাল আটমাস। মাল্টিপল মায়োলোমায় আক্রান্ত রোগীদেরকে প্রতি মাসে একবার করে মোট আটবার ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে তরলটি শরীরে গ্রহণ করতে হবে এবং এক্ষেত্রে একজন রোগীর ন্যূনতম ব্যয় হবে ৪৫ লাখ ৫৮ হাজার ৫৭ টাকা (৪১ হাজার ৫০০ ডলার)।
তবে শিগগরিই এই ব্যয় ২৮ লাখ ৫৫ হাজার (২৬ হাজার ডলার) টাকায় নেমে আসবে বলে আশা করছে ফাইজার।

কোম্পানির পক্ষ থেকে সোমবার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে মিলবে এই থেরাপি এবং এটি গ্রহণের আগে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button