Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

বদলে যাচ্ছে ঢাকার অপরাধ জগৎ

আচমকা বদলে যাচ্ছে ঢাকার অপরাধ জগৎ। খুনখারাবি থেকে শুরু করে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, দখল, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত সবই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। রাজধানীর অলিগলি থেকে শুরু করে রাজপথ, সরকারি অফিস, পোশাক খাত সর্বত্রই চলছে আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতা। পেশিশক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে সন্ত্রাসীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। পুরাতন চক্রের পাশাপাশি নতুন নতুন গ্যাং তৈরি হচ্ছে। এলাকায় এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের প্রভাব বেড়েছে।  ছোটখাটো ঘটনায়ও এখন প্রকাশ্য অস্ত্রের প্রদর্শন করা হচ্ছে। ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা নগরবাসী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের বিভিন্ন থানা, গোয়েন্দা পুলিশের বিভিন্ন টিম, র‌্যাব প্রায়ই ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করছে। কিন্তু ছিনতাইকারীরা কিছুদিন জেল খেটে জামিনে বের হয়ে ফের একই অপরাধে জড়াচ্ছে। এ ছাড়া চিহ্নিত ছিনতাইকারীদের নাগাল পাচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নজরদারির বাইরে আছে পটপরিবর্তনের পর জামিনে মুক্তি পাওয়া ১১ শীর্ষ সন্ত্রাসী। প্রতিটি এলাকার সরকারি অফিসে অফিসে গিয়ে টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণ করছে সন্ত্রাসীরা। বেপরোয়া হয়েছে চিহ্নিত ও নয়া চাঁদাবাজরা। সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ছোট বড় ব্যবসায়ী, বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফুটপাথসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে দেদারছে চাঁদাবাজি হচ্ছে। 

অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার অপরাধ জগত হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়েছে। ৫ই আগস্টের আগের চেয়ে পরের চিত্র পুরো উল্টো। এর পেছনে দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত সরকার পতনের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ করে পুলিশ, র‌্যাব বড় ধাক্কা খায়। থানায় হামলা, পুলিশ সদস্যদের মারধর, হত্যাসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনায় মনোবল হারায় পুলিশ। পুলিশশূন্য হয়ে পড়ে থানাগুলো। পুলিশের কনস্টেবল থেকে শুরু করে বড় বড় কর্মকর্তারা পালিয়ে যায়। তবে পরে পুলিশ কর্মস্থলে ফিরলেও কাজে মনোযোগ ছিল কম। দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার অপরাধ জগত নিয়ে বিশেষজ্ঞ পুলিশ কর্মকর্তাদের ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়। তাদের স্থলে নতুন নতুন কর্মকর্তা এসেছেন। তাদের অনেকেরই ঢাকার অপরাধী, অপরাধ জগত নিয়ে ধারণা নাই। এ ছাড়া জামিনে মুক্তি পায় ঢাকার নামকরা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। মূলত পুলিশের অনুপস্থিতি ও শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিন এবং দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে দাগী, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও জঙ্গি আসামিদের পালিয়ে যাওয়ার কারণে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। 

কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন কিছুদিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে ২ হাজার ২০০ আসামি পালিয়ে যায়। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৫০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এখনো ৭০০ আসামি পলাতক।  পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে জঙ্গি, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত, শীর্ষ সন্ত্রাসীর মতো অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৭০ জন আসামি রয়েছেন। এ ছাড়া কারাগার থেকে এখন পর্যন্ত আলোচিত ১৭৪ আসামিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীও মুক্তি পেয়েছেন। সূত্রগুলো জানিয়েছে, কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া প্রায় ৭০ জন ঝুঁকিপূর্ণ বন্দির হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে কিনা সেটিও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ছাড়া দেশে তাদের অবস্থান কোথায় সেটিও জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এদের মধ্যে অনেকেই সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে। আর যারা আছে তাদের কেউ নীরব ভূমিকা পালন করছে আর কেউ কেউ আবার  অপরাধে জড়িয়েছে। এর বাইরে ১১ জন শীর্ষ সন্ত্রাসী নজরদারির বাইরে থাকায় তারা বেপরোয়া। জামিনে মুক্তি পাওয়ায় তারা প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে।

ঢাকার সামগ্রিক অপরাধ পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক মানবজমিনকে বলেন, ঢাকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডিবির প্রত্যেকটি টিম কাজ করছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী যেখান থেকে যে খবরই পাওয়া যাচ্ছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। অনেক অপরাধীদের ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া জামিনে মুক্তি পাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গতিবিধি আমরা নজরদারিতে রেখেছি। 

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) মুনীরুজ্জামান মানবজমিনকে বলেন, এরকম পরিস্থিতিতে মানুষের জীবনের ওপর ঝুঁকি তৈরি করছে। পুলিশ এখনো আগের কার্যক্রমে ফিরেনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যে ধরনের গতি থাকা দরকার তাদের কার্যক্রমের ভেতরে সেটি দেখা যাচ্ছে না। এসব কারণেই আইনশৃঙ্খলার মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে। কার্যত দুর্বলতার কারণে যারা জেল থেকে বেরিয়ে আসছে তারা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠছে। তিনি বলেন, এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সরকার এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের। এ ছাড়া পুলিশ, র‌্যাবসহ যেসব বাহিনী আছে তারা তাদের দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করতে হবে। যদি দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করে তবে এ ধরনের পরিস্থিতি কখনো হবে না। নতুন যেসব কর্মকর্তা ঢাকায় এসেছেন তাদের কাজ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এসব কর্মকর্তাদের সময় লাগার কথা না। কারণ কাজের মধ্যে একটা ধারাবাহিকতা থাকে। এটা মুখে মুখে হয় না। কারণ এটি একটি ইনস্টিটিউশন অব ক্যাপাসিটি থাকে। যেখানে রেকর্ড মেইনটেইন করা হয়। সোর্স ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া সরকারি পলিসি অনুযায়ী কর্মকর্তাদের রদবদল হবে। কোনো কর্মকর্তাই স্থায়ী নন। আর রদবদল হলেই যে কার্যক্রম বন্ধ থাকবে এমনো না। যারা নতুন এসেছেন তারা দ্রুত কাজের পরিধি বুঝে কাজে লেগে যেতে হবে।

অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তৌহিদুল হক মানবজমিনকে বলেন, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেসব শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তাদের গতিবিধি ও কর্মকাণ্ড নজরদারিতে রাখার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। কিন্তু তাদের নজরদারিতে যে একেবারেই রাখা হচ্ছে না সেটি আমরা গত চার মাসের অপরাধ চিত্র দেখলেই বুঝতে পারি। অপরাধের ধরনে পরিবর্তন এসেছে এবং মাত্রাও বেড়েছে। যারা কারাগারে ছিল তারা সেখানে বসেই নিজ এলাকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করেছে। এখন জামিনে বের হয়ে একই কাজ করছে আবার নতুন করে গ্যাং তৈরি করে অপরাধ করছে। কে কোন এলাকা নিয়ন্ত্রণ করবে সেটি নিয়ে সংঘাত সহিংসতা আছে। চুরি ছিনতাইয়ের জন্য ছোট ছোট চক্র তৈরি হচ্ছে আবার পেছনে শেল্টারদাতা রয়েছে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণে নিতে তাদের মধ্যে সংঘাতে সাধারণ মানুষের প্রাণ গেছে এমন ঘটনাও আছে। তিনি বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তাদেরকে সংশোধন ও নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রক্রিয়া আমাদের যথেষ্ট দুর্বল। দুর্বল বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো পদক্ষেপকেই তারা তোয়াক্কা করছে না। তারা মনে করছে মামলা করে গ্রেপ্তার করে তাদেরকে কারাগারে নিয়ে যাবে। সেখানে গিয়ে আবার অপরাধ করা যাবে। তাই অপরাধীরা কারাগারে থাকুক আর বাইরে থাকুক অপরাধ সমানতালে করবে। সমস্যাটা হলো প্রচলিত আইনের মাধ্যমে আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারছি না। শাস্তি নিশ্চিত হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের মামলা তদন্ত, পুলিশের জোড়ালো ভূমিকা, অপরাধীদের ক্ষেত্রে সরকারের সুস্পষ্ট নির্দেশ ও অপরাধীদের আইনের মুখোমুখি করার ক্ষেত্রে তাদের যে অঙ্গীকারের মতো জায়গাগুলোতে যথেষ্ট ঘাটতি আছে। এ ধরনের ঘাটতি থাকলে কোনো অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
toto slot
bacansport
slot gacor
slot toto