Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Uncategorized

বাজারে উত্তাপ, মানুষ দিশাহারা: সবজি, মাছ অথবা নিত্যপণ্যের বাজারে দামের উত্তাপ, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতারা বেশি সংকটে।

বাজারে গেলেই ‘বুকের ব্যথা বেড়ে যায়’ রাজশাহীর আবদুর রহমানের। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে শহরের সাহেববাজার মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজারে সবজির দাম করছিলেন তিনি। বেসরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন ৬০ বছরের কিছু বেশি বয়সী এই মানুষ। এখন পরিবারের সবার জন্য বাজারের কাজটি তিনিই করেন। সিঅ্যান্ডবি মোড় এলাকা থেকে বাজারে এসে দেখলেন, প্রায় সব সবজির দামই চড়া। গেল সপ্তাহের তুলনায় গোল বেগুনের দামই ২০ টাকা বেড়ে হয়ে গেছে ৭০ টাকা। দাম শুনে আবদুর রহমান দোকানদারকে বললেন, সবকিছুর দাম শুনলে বুক ধড়ফড় করে, বুকের ব্যথা বেড়ে যায়।

কিংবা ধরা যাক পাবনার বেড়া উপজেলার পৌর এলাকার শেখপাড়া মহল্লার রেখা খাতুনের কথা। তাঁর স্বামী সেলুনে কাজ করে প্রতিদিন আয় করেন ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। নিজে অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে সামান্য আয় করেন। ছেলের বিধবা বউ, নাতি-নাতনিসহ পাঁচ সদস্যের সংসার এই আয়েই চালাতে হয়। প্রথম আলোর প্রতিবেদককে তিনি জানালেন, সপ্তাহখানেক আগে বাড়িতে ডিমের ঝোল রান্না হয়েছিল, খেয়েছিলেন অর্ধেক ডিম। এর পর থেকে ডাল বা একটা সবজি দিয়ে কোনোমতে সবাইকে ভাত খেতে হচ্ছে।

অথবা শোনা যাক শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌর শহরের কাছারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা বিধবা ফিরোজা বেগমের (৫৫) কথা। স্বামী মারা গেছেন চার বছর আগে। এক ছেলে ও এক মেয়ের বিয়ের পর ফিরোজার খোঁজও রাখেনি কেউ। একার সংসার চালাতে ধানের আড়তে পড়ে থাকা ধান জমিয়ে বিক্রি করেন তিনি। ‘শুঁটকি ছাড়া আর কোনো মাছ শেষ কবে খাইছিলাম, মনে নাই।’ প্রথম আলোকে জানালেন তিনি।

দেশের পাঁচটি জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন বাজারে খবর নিয়ে, আর ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে মোটামুটি একই চিত্র দেখেছেন প্রথম আলোর প্রতিনিধিরা। এই চিত্রই জানাচ্ছে নিম্ন আয় ও সীমিত আয়ের বেশির ভাগ মানুষকে সংসার চালাতে এখন প্রতিটি খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হচ্ছে।

এমন গল্প একটি-দুটি নয়, অনেক। একই গল্প দিনাজপুরের দপ্তরীপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহজাদার, টাঙ্গাইলের সখীপুরে বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করা ফরিদা আক্তারের, কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বাসিন্দা করিম উল্লাহর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রিকশাচালক রমজান মিয়ার, নেত্রকোনা পৌরসভার বলাইনগুয়া এলাকার কাঠমিস্ত্রি রতন চন্দ্র তালুকদারের কিংবা সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার অটোভ্যানচালক ইব্রাহিম হোসেনের। সবজি, মাছ অথবা নিত্যপণ্যের বাজারে দামের যে উত্তাপ তৈরি হয়েছে, তাতে সংকটে রয়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতারা।

ঢাকার মহাখালী কাঁচাবাজারে গতকাল সকালে বাজার করতে আসেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা তানজীলুল ইসলাম। তিনি বলছিলেন, ‘বাজার করে এখন আর শান্তি নেই। পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে যে হারে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ছে, সে হারে কমছে না। এ রকম অস্বস্তি নিয়ে আর কত দিন চলতে হবে, জানি না।’

গতকাল বেলা ১১টা নাগাদ শেওড়াপাড়া কাঁচাবাজারে মাছ কিনতে এসেছিলেন গৃহিণী মানতাশা আহমেদ। তাঁর কথায়, ‘আমি মাসে দুবার রুই-কাতলা ধরনের চাষের কোনো মাছ কিনি। কিন্তু গত কয়েক মাস আগে যে দাম বেড়েছে, তা আর কমছে না। বিক্রেতাদের জিজ্ঞেস করলে তারা জানায়, মাছের খাদ্যের দাম বেশি। এ জন্য মাছের দামও কমছে না।’

বিপাকে আছেন দোকানিরাও। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের বিক্রেতা মো. আব্বাস বলেন, ‘কিছুদিন পরপর একেকটা জিনিসের দাম বাড়ে, আর আমাদের হয় বিপদ। বেশি দামে পণ্য কেনতে হলে তা তো বেশি দামেই বিক্রি করতে হবে। কিন্তু ভোক্তার (ভোক্তা অধিদপ্তর) কর্মকর্তারা এসে আমাদের জরিমানা করে। কিছুদিন আগে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজের বেলায় এমন হয়েছে। আর এখন আলুর দাম বাড়তে শুরু করেছে।’

মো. আব্বাসের কথার প্রতিধ্বনি শোনা গেল বেড়া বাজারের মাছবিক্রেতা শামসুল হকের কণ্ঠে। বললেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধইর‌া বিদেশি পাঙাশ বেচি। গত বছর ১২০ টাকা কেজি দরে যে পাঙাশ বেচছি, এবার তা ১৮০ টাকায় বেচতেছি। গরিব লোকজনই এখন আমার মূল খরিদ্দার। তাঁরা মাছ কিনবার আইস্যা দাম শুইন্যা আফসোস কইর‌্যা চইল্যা যাইতেছে।’

আমরার মতো গরিব যে কত কষ্টে আছি, তা আপনারে বোঝাইতে পারতাম না। বাসাভাড়া, মেয়েদের স্কুলের বেতনসহ লেখাপড়ার খরচ দিয়া হাতে আর কিছু থাকে না। মাংস দূরের কথা, সপ্তাহে এখন এক দিন মাছও মেলে না।

রতন তালুকদার , নেত্রকোনা পৌরসভার বলাইনগুয়া এলাকার বাসিন্দা

মূল্য বৃদ্ধির চিত্র

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব সরবরাহব্যবস্থা সমস্যায় পড়েছিল। এরপর বাড়ে ডলারের দাম। ফলে বাড়ে আমদানি করা পণ্যের মূল্য। কিন্তু মূল্যস্ফীতি কমাতে সরকারের লক্ষণীয় কোনো উদ্যোগের অভাবে এক বছরের বেশি সময় ধরে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত সব ধরনের জিনিসপত্র কিনতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, মাছ-মাংস—শুধু এসব খাবার নয়, দাম বাড়ছে তেল, সাবান, প্রসাধনসামগ্রী, পোশাক-আশাক, শিক্ষাসামগ্রী, যাতায়াত—সবকিছুর।

সবজিবাজার

সবজিবাজার

নিত্যপণ্যের দাম কতটা বেড়েছে, তার একটা খণ্ডচিত্র পাওয়া যেতে পারে পাবনার বেড়া উপজেলা থেকে। বেড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, বছর দুয়েক আগে যে মোটা চালের দাম ৪০ টাকা ছিল, তা একপর্যায়ে ৬৫ টাকা পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল। এখন অবশ্য এই চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকায় মিলছে। তবে গরিবের আমিষ বলে পরিচিত ডিম গত বছর এ সময় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা হালি দরে বিক্রি হলেও এখন এর দাম হয়েছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা। গত বছর যে চাষের পাঙাশ ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হতো, এর দাম এখন ১৮০ টাকা। একইভাবে তেলাপিয়া বা সিলভার কার্পের দামও গত বছরের তুলনায় কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেড়ায় ব্রয়লার মুরগির দাম সপ্তাহ কয়েক আগের তুলনায় সম্প্রতি খানিকটা কমে ১৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দেড় থেকে দুই বছর আগে অবশ্য এর দাম ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি।

মাছের বাজার

মাছের বাজার

বেড়ার সবজির দামের কথাই জানা যাক। সেখানে আলু, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচসহ প্রতিটি সবজির দামই এখন বেশি। গত বছরের এ সময়ে ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আলুর দাম এখন ৫০ টাকা, ১০ টাকা কেজি দরের পটোল ৪০ টাকা, ২০ টাকা কেজি দরের বেগুন এখন ৮০ টাকা, আর ১০ টাকা কেজি দরের মুলা এখন ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নেত্রকোনা পৌরসভার বলাইনগুয়া এলাকার বাসিন্দা রতন চন্দ্র তালুকদার (৫০) প্রায় ৩৫ বছর ধরে কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন। স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়েই তাঁর সংসার। দিনে তাঁর আয় সাকল্যে ৫০০ টাকা। রতন তালুকদারের সঙ্গে প্রথম আলোর প্রতিনিধি গতকাল বেলা ১১টায় যখন কথা বলেন, তখন তিনি পকেটে ৭৫০ টাকা নিয়ে বাজার করছিলেন। এক কেজি পেঁয়াজ কিনেছেন ৬৮ টাকায়, রসুন ২৪৫ টাকায়, গোল আলু ৬২ টাকায়, আর মসুর ডাল কিনেছেন ১৪০ টাকায়। বাকি আর মাত্র ১৮৫ টাকায় আদৌ মাছ কিনতে পারবেন কি না, সেটাই ভাবছিলেন। বাজারে এখন কোনো মাছ আর ২৫০ টাকার কমে পাওয়া যায় না।

রতন তালুকদার বলেন, ‘আমরার মতো গরিব যে কত কষ্টে আছি, তা আপনারে বোঝাইতে পারতাম না। বাসাভাড়া, মেয়েদের স্কুলের বেতনসহ লেখাপড়ার খরচ দিয়া হাতে আর কিছু থাকে না। মাংস দূরের কথা, সপ্তাহে এখন এক দিন মাছও মেলে না। হাঁসের ডিমের হালি ৬৫ টেহা আর মুরগির ৫০ টেহা। ব্রয়লার মুরগির দামও ২০০ টেহা কেজি।’

রাজশাহী শহরের বিনোদপুর এলাকার মাছের বাজারের ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন, সিলভার কার্পকে বলা হতো গরিবের ইলিশ মাছ। এখন আর বাজারে গরিবের মাছ বলে কিছু নেই। দুই কেজি ওজনের পাঙাশও ২০০ টাকা কেজি। আর একই ওজনের রুই ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

দেশের পাঁচটি জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন বাজারে খবর নিয়ে, আর ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে মোটামুটি একই চিত্র দেখেছেন প্রথম আলোর প্রতিনিধিরা। এই চিত্রই জানাচ্ছে নিম্ন আয় ও সীমিত আয়ের বেশির ভাগ মানুষকে সংসার চালাতে এখন প্রতিটি খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হচ্ছে। এর জন্য হাত দিতে হচ্ছে সঞ্চয়ে কিংবা প্রয়োজনের সময় ধার করতে হচ্ছে। কিংবা কাঁচি চালাতে হচ্ছে বাজারের দরকারি পণ্যের তালিকায়।

সিলভার কার্পকে বলা হতো গরিবের ইলিশ মাছ। এখন আর বাজারে গরিবের মাছ বলে কিছু নেই। দুই কেজি ওজনের পাঙাশও ২০০ টাকা কেজি। আর একই ওজনের রুই ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজশাহী শহরের বিনোদপুর এলাকার মাছের বাজারের ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন

কাটছাঁট হচ্ছে খাবারে

একসময় এমন একটা সাধারণ ধারণা ছিল যে ঢাকা কিংবা বড় শহরের বাইরে জীবনযাত্রার খরচ কম। কিন্তু এমনকি প্রান্তিক এলাকাতেও যে বাস্তবতা কঠিন, তার ধারণা পাওয়া যায় শেরপুরের নালিতাবাড়ীর দিকে তাকালে। সেখানকার বাজার এলাকার বাসিন্দা নিতাই দত্ত (৪৫) শহরের একটি বেসরকারি ব্যাংকে নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি করেন। মাসে বেতন পান ১০ হাজার টাকা। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তাঁর পরিবার।

নিতাই দত্ত মাসে চালের পেছনে খরচ করেন ২ হাজার ৮০০ টাকা। ছেলের গৃহশিক্ষকের বেতন ১ হাজার টাকা। ওষুধ বাবদ মাসে খরচ হয় ৬০০ টাকা। প্রতিদিনের বাজারে তাঁর বাজেট মাত্র ১৫০ টাকা। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘শাকসবজিসহ তরকারি সবকিছুরই তো দাম বেশি। কী আর করমু! এই টাকার মধ্যে সারা মাস চলতে হয়। এতে সব সময় মানসিক চাপে থাকি। অল্প টাকায় চলতে কষ্ট অয়, কিন্তু কাউকে তো কিছু বলা যায় না।’

তাঁর চেয়েও হয়তো খারাপ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন দিনাজপুর দপ্তরীপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহজাদা (৩৯)। শহরে একটি সেলুনে কাজ করেন তিনি। তিন বছর ধরে কিডনি রোগে ভুগছেন স্ত্রী। সপ্তাহে অন্তত দুবার ডায়ালাইসিস করতে হয়। মাসে ৮-১০ হাজার টাকা স্ত্রীর পেছনেই খরচ। জানালেন, ‘গতকাল দুপুরে বাড়িতে শুধু ভাত রান্না হয়েছে। কোনো তরকারি নেই। হোটেল থেকে ছয়টা ডালের বড়া কিনেছি। তাই দিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ চারজন দুপুরের খাবার খেয়েছি। দিন শেষে যা আয় করি, স্ত্রীর চিকিৎসা করে ডাল-ভাত জোগাড় করতেই হিমশিম অবস্থা। মাছ-মাংস খাওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারি না।’

আমাদের অর্থনীতিতে শ্রমশক্তি উদ্বৃত্ত রয়েছে। সরকারি তথ্যে বেকারত্বের হার কম দেখা গেলেও আমরা দেখছি, তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি। তারা আয় করতে পারছে না। আবার অর্থনীতিতেও যথেষ্ট বিনিয়োগ হচ্ছে না।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন

মূল্যস্ফীতি বাড়ে, আয় বাড়ে না

আয় বেশি হলে জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও তেমন সমস্যা হয় না। সহজ করে বললে, মূল্যস্ফীতি যদি ৯ শতাংশ হয়, আর মজুরি বৃদ্ধির হার এর চেয়ে বেশি হয়; তাহলে বাড়তি দাম দিয়েও পণ্য কিনতে পারেন ক্রেতারা। কিন্তু দেশে মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার এক বছর ধরেই কম। এ হিসাব বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)। দীর্ঘ সময় ধরে মূল্যস্ফীতির হার ৯ শতাংশের ওপরে। অন্যদিকে গত এপ্রিলে মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ।

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার অটোভ্যানচালক ইব্রাহিম হোসেন জানালেন, সারা দিন যে টাকা তিনি রোজগার করেন, চাল, ডাল আর তরকারি কিনতেই তা শেষ হয়ে যায়। ‘মাছ-মাংস কেনা এখন খুবই কঠিন। ডিমের হালিও নাগালের বাইরে।’ বললেন তিনি।

সেখানকারই একটি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘এখন তো কষ্টের কথা বলাও মুশকিল। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে, তাতে আমাদের সামনে আরও কষ্ট অপেক্ষা করছে।’

কষ্ট লাঘবের একটা উপায় হিসেবে এখন সরকার ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে এক কোটি পরিবারের কাছে কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য বিক্রি করছে। চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার টিসিবির সরবরাহকারীরা প্রথম আলোর প্রতিনিধিকে জানান, উপজেলার ১১ ইউনিয়নে ১৩ হাজার ৮৮৮ জন কার্ডধারী মাসে একবার ন্যায্যমূল্যের পণ্য পান। আগে অনেকে কার্ড ফেলে দিলেও এখন এ কার্ডের চাহিদা বেড়ে গেছে।

বিপুলসংখ্যক মানুষকে যদি স্বস্তি দিতে হয়, তাহলে মানুষের আয় বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, মূল সমস্যা হলো অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য চাপে আছে। ফলে যতটা প্রয়োজন, ততটা মজুরি বাড়ছে না। অন্যদিকে অর্থনীতিতে যথেষ্ট কর্মসংস্থানও হচ্ছে না।

ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিতে শ্রমশক্তি উদ্বৃত্ত রয়েছে। সরকারি তথ্যে বেকারত্বের হার কম দেখা গেলেও আমরা দেখছি, তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি। তারা আয় করতে পারছে না। আবার অর্থনীতিতেও যথেষ্ট বিনিয়োগ হচ্ছে না। যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্য আমদানির দিকে তাকালেই সেটা দেখতে পাওয়া যায়। বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থানও বাড়বে না।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
slot demo
bacan4d
bacan4d
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot toto