Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Trending

বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি কমছে পরিশোধের চাপে সরকার

সদ্যসমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রকল্পের তহবিল ও বাজেট সহায়তার জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ৯.৮৮ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ। এটি আগের অর্থবছরগুলোর তুলনায় কম। আগের কয়েক অর্থবছরে বাংলাদেশে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল। তবে সেই ধারা এখন আর নেই। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ দিন দিন বাড়ছে। ঋণের সুদ-আসল মেটাতে গিয়ে অর্থ সংকটে পড়ছে সরকার। ডলারের বিপরীতে টাকার দর পতনে চাপের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না সরকার। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

ইআরডি সূত্র জানায়, বিদেশি ঋণদাতাদের কাছ থেকে আরও বেশি ঋণ প্রতিশ্রুতি আদায়ের সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু ঋণের সুদহার বেশি হওয়ার কারণে এর বেশি ঋণ না চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফলে বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি কমছে।

ইআরডি তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি ছিল ৯.০৭ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল ১০.১৭ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ একক অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১৭.৯৬ বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল ২০১৬-১৭ অর্থবছরে। ওই সময় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে সরকারের সঙ্গে রাশিয়ার ১১.৩৮ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি সই হয়েছিল; তারই অংশ এ প্রতিশ্রুতি ছিল।

ইআরডি কর্মকর্তারা বলেন, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি), নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি) ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) মতো উন্নয়ন সহায়তা সংস্থাগুলো সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেটকে (সোফর) রেফারেন্স রেট হিসেবে ব্যবহার করে ঋণ দিয়ে থাকে। অর্থাৎ এসব সংস্থার সব ঋণই বাজারভিত্তিক ঋণ। আর বাজারভিত্তিক ঋণের সুদহারও বেড়ে গেছে। এমন ঋণে সরকারের আগ্রহ ছিল না। এ কারণে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদেশি সহায়তার প্রতিশ্রুতি ১০ বিলিয়ন ডলারের নিচে রয়ে গেছে। যেমন; ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সোফর রেট উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বর্তমানে সোফর ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে এ হার ১ শতাংশের কম ছিল। গত দুই অর্থবছরে সরকার এআইআইবি থেকে কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের ঋণ নেয়নি। চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণাঞ্চলে ট্রান্সমিশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ও কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটির মতো প্রকল্পগুলোতে ১৬০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার কথা ছিল এআইআইবি’র। কিন্তু মে মাসে চুক্তির তালিকা থেকে প্রকল্পটিকে বাদ দেয়া হয়। এআইআইবি’র কাছ সদ্যবিদায়ী অর্থবছরে কোনো প্রকল্প ঋণ না নিয়ে শুধু ৪০০ মিলিয়ন ডলারের একটি বাজেট সহায়তা চুক্তি সই করেছে সরকার।

ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, এআইআইবি’র অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য পাইপলাইনে ১৪টি প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ প্রকল্প ঋণের জন্যই উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটির সঙ্গে আলোচনা শেষ করে এখন চুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। মূলত সুদ পরিশোধের চাপের কারণে এআইআইবি’র কাছ থেকে ঋণ নেয়া থেকে বিরত ছিল সরকার। 

এ ছাড়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো এনডিবি’র সঙ্গে ঋণচুক্তি করার কথা ছিল সরকারের। কিন্তু বাজারভিত্তিক চড়া সুদের ঋণের কারণে ঋণ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে খুবই ধীরগতিতে এগোচ্ছে সরকার। এনডিবি’র অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য ইতিমধ্যে এক্সপ্যান্ডেড ঢাকা সিটি ওয়াটার সাপ্লাই রেজিলিয়েন্ট প্রজেক্ট একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এ প্রকল্পের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এপ্রিলে ৩২০ মিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি করার পরিকল্পনা ছিল সরকারের। কিন্তু পরে আর চুক্তি সই হয়নি। আগামী অর্থবছরে এনডিবি’র সঙ্গে প্রথম ঋণচুক্তি সই হবে বলে আশা করছে ইআরডি।

এদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চীনের সঙ্গে সরকারের কোনো ঋণচুক্তি সই হয়নি। চীনের সঙ্গে সর্বশেষ ২৭৬.২৬ মিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি সই হয় ২০২২-২৩ অর্থবছরে। ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরকালে  ‘স্ট্রেংদেনিং অ্যান্ড প্রোডাকশন ক্যাপাসিটি কো-অপারেশন’ শীর্ষক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। এতে মোট ২০ বিলিয়ন ডলারের ২৭টি প্রকল্প বাস্তবায়নের আশ্বাস রয়েছে। এখনো পর্যন্ত ৮.০৭৬ বিলিয়ন ডলারের ৯টি প্রকল্পের ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চীনের অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য ইআরডি’র ঋণগ্রহণ কর্মসূচিতে নয়টি প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন পেয়েছে। 

২০২৩-২৪ অর্থবছরে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কাছ থেকে ২.৯৪১ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ। সংস্থাটি ইতিমধ্যে ৬৫ মিলিয়ন ডলারের দুটি বাজেট সহায়তা দিয়েছে সদ্যবিদায়ী অর্থবছরে। বাজেট সহায়তা ছাড়াও ১১টি প্রকল্পে জন্য এডিবি’র সঙ্গে ঋণচুক্তি সই হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সরকারের ২.৬১৮ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি সই হয়েছে। এর মধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের একটি বাজেট সহায়তা রয়েছে। জাপানের কাছ থেকেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২.৩০৯ বিলিয়ন ডলার ঋণের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে।

বিদেশি ঋণ পরিশোধে চাপের বৃত্তে সরকার: বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ দিন দিন বাড়ছে। ঋণের সুদ-আসল মেটাতে গিয়ে অর্থ সংকটে পড়ছে সরকার। ফলে বিদেশি ঋণ পরিশোধে চাপের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না সরকার। এমন বাস্তবতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হবে ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। গেল অর্থবছরের চেয়ে তা ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বেশি। গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট অনুসারে বিদেশি ঋণের সুদ বাবদ সরকারের মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ১৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ বাবদ ৯ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়। অর্থাৎ চার বছরের মধ্যে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হচ্ছে। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ প্রকাশিত ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি’র বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে বিদেশি ঋণের আসল বাবদ ২৬২ কোটি ৯০ লাখ ডলার বা ৩০ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করতে হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছর এ বাবদ ২৪৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার পরিশোধ করার কথা রয়েছে, যা টাকায় দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৯৮১ কোটি। অর্থাৎ এক বছরে বিদেশি ঋণের আসল বাবদ পরিশোধ বাড়ছে ১৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় এটি প্রায় ১০০ কোটি ডলার বেশি। ওই অর্থবছর ১৭৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার মূল ঋণ পরিশোধ করা হয়, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২১০ কোটি ডলার। সবমিলিয়ে বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল বাবদ সরকারকে চলতি অর্থবছরে ৫১ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। 

চলতি অর্থবছরের বাজেটে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বা ১৭৫ কোটি ডলার উল্লেখ রয়েছে। সুদ বাবদ এই ১৭৫ কোটি ডলার এবং আসল প্রায় ২৬৩ কোটি ডলার মিলে চলতি অর্থবছরে ৪৩৮ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ১০২ কোটি ডলার বেশি। 

বিশ্লেষকরা বলেন, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সরকার একটা দ্বিমুখী সমস্যায় রয়েছে। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নিলে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে অর্থ সংকট দেখা দেবে। আবার বিদেশি ঋণ নিলে পরিশোধের চাপ আরও বাড়বে। তাই বিদেশি ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে পরিশোধের চাপ অসহনীয় না হয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto