কেমিক্যাল থেকেই ফতুল্লায় কারখানায় বিস্ফোরণ, হাসপাতালে কাতরাচ্ছে দগ্ধরা
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা (ইজিবাইক) শোরুমে শনিবার সকালের ভয়াবহ বিস্ফোরণের নেপথ্যে ক্যামিকেলের গোডাউন। ইজিবাইক শোরুমে ভেতরে কেমিক্যাল রাখতেন মুসকানি মটরসের মালিক স্বপন। কেমিক্যাল থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে এমন অভিযোগ শোরুমটির পাশের ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মালিক সিরাজুল হকের। একই অভিযোগ স্থানীয়দেরও।
সিরাজুল হক বলেন, ‘হঠাৎ করে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। সাথে সাথে আমাদের বিল্ডিংয়ের দেয়াল ধসে পড়ে। দেয়ালে চাপা পড়ে আমাদের পরিবারের লোকজন আহত হয়।’
সিরাজুলের অভিযোগ, অটোরিকশার শোরুমের ভেতর অবৈধ কেমিক্যাল রাখতেন মালিক স্বপন। ওই ক্যামিকেল থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন জানান, সকালে বিকট শব্দে মুসকান মটরস নামে অটোরিকশার শোরুমে বিস্ফোরণ হয়। এ সময় পাশের একটি একতলা সেমিপাকা রফ রফ অটো রিকশার কারখানা ও আরেকটি দোতলা পাকা ভবনের দেয়াল ধসে পড়ে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দ কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূর থেকেও শুনতে পান অনেকে। এ শব্দে আশেপাশের কয়েকটি ভবনের জানালার কাচও ভেঙে গেছে।
এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন শোরুমটির পাশের ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মালিক সিরাজুল হক (৭০), তার স্ত্রী রোকসানা বেগম (৫০), তাদের তিন ছেলে সুমন হক (৪০), মাসুদ (৩৩) ও রাসেল (৩৫), মাসুদের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার, রাসেলের স্ত্রী দোলা আক্তার, সুমনের স্ত্রী বিথি আক্তার, ছেলে আবু সুফিয়ান (১২), মেয়ে আরফা মনি, মাসুদের ছেলে আবু বকর সিদ্দিক (৩), রাসেলের ছেলে আরফান (৪) ও নির্মাণ শ্রমিক পল্টু (৪০)।
স্বজনরা জানিয়েছে, হাসপাতালে দগ্ধরা কাতরাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদশী সূত্র জানায়, শোরুমের দুই পাশের দেয়াল ধসে পড়ে গেছে দেখা যায়। উপরের সিলিং ফ্যানগুলো পুড়ে গেছে। ভেতরে বেশকিছু অটোরিকশা, ব্যাটারি ও প্ল্যাস্টিকের গ্যালন ভর্তি ক্যামিকেল দেখা যায়।
এদিকে শোরুম ও নির্মাণাধীন ভবনটির মালিক স্বপন হোসেন বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা অ্যাসেম্বল করে বিক্রি করেন তিনি। কিভাবে বিস্ফোরণ হয়েছে সে বিষয়ে তার ধারণা নেই৷
এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনার পর মালিকপক্ষের লোকজনের ওপর আহত পরিবার ও স্থানীয় লোকজনকে চড়াও হতে দেখা যায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) ফখর উদ্দিন আহম্মাদ বলেন, ‘ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের পাশে চারতলা ভবনের নিচতলায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা অ্যাসেম্বল করা হয় এবং বিক্রি করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে অসংখ্য ব্যাটারি রয়েছে। এসব ব্যাটারি থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্ত করে সঠিক কারণ বলা যাবে।