ভারতের সঙ্গে টানাপোড়েনের মধ্যেই মালদ্বীপের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে আমেরিকা!
মালদ্বীপের সঙ্গে টানাপোড়েন চলছে ভারতের। চীনপন্থী মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কঠোর অবস্থানের প্রেক্ষিতে দেশটিতে অবস্থান করা সেনা সদস্যদের আগামী ১০ মের মধ্যে ফিরিয়ে নেবে ভারত।
এদিকে, ভারতের সঙ্গে টানাপোড়েনের মধ্যে মালদ্বীপের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সীমান্ত অঞ্চলগুলো পর্যবেক্ষণে সহায়তা করতে চারটি টহল জাহাজ এবং দেশটির সামরিক বাহিনীকে একটি বিমান সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে আমেরিকা। মালদ্বীপের সংবাদমাধ্যম প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এ ঘোষণা দিয়েছেন। দুই সপ্তাহ আগে তিনি মালদ্বীপে সরকারি সফর করেন।
গত শুক্রবার ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট ফর পিসে (ইউএসআইপি) ‘ইন্দো–প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিক ইন অ্যাকশন: মেমোরেটিং দ্য সেকেন্ড অ্যানিভার্সারি’র প্যানেল আলোচনার সময় লু এ ঘোষণা দেন।
প্যানেল আলোচনার সময় লু জোর দিয়ে বলেন, মালদ্বীপকে একটি ছোট দেশ বলে মনে হতে পারে, কিন্তু প্রতিরক্ষা চাহিদার দিক থেকে এটি একটি বড় দেশ।
তিনি বলেন, “মালদ্বীপ ১ হাজার ২০০টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত একটি দ্বীপরাষ্ট্র। আঞ্চলিক সমুদ্রসীমা ৫৩ হাজার বর্গ কিলোমিটারজুড়ে। এটি ফ্রান্সের আয়তনের প্রায় সমান। এটি একটি বিশাল দেশ। আমরা মালদ্বীপকে একটি ছোট দেশ বলে মনে করি, কিন্তু যখন প্রতিরক্ষার প্রয়োজনের বিষয় আসে, তখন এটি আসলেই বড় দেশ।”
এত বড় অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা সহজ নয়। তবে প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ এবং সরঞ্জামের মাধ্যমে এটি করা যেতে পারে,যোগ করেন ডোনাল্ড লু।
লু বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে মালদ্বীপের সঙ্গে রিয়েল–টাইম বাণিজ্যিক উপগ্রহ ডেটা সরবরাহের উপায় নিয়ে কাজ শুরু করেছে।”
এ সময় তিনি টহল জাহাজ ও উড়োজাহাজ সরবরাহ করার কথা উল্লেখ করেন।
মার্কিন সরকারের এ কূটনীতিক আরও বলেন, “মালদ্বীপের নৌবাহিনীকে চারটি টহল বোট দেওয়ার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একটি উড়োজাহাজ দেওয়ার বিষয়েও আলোচনা চলছে। এই সমস্ত এবং আরও অনেক কিছু এই অঞ্চলকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন।”
যদিও প্যানেল আলোচনার সময় লু ঘোষণাটি করেছিলেন, তবে মালদ্বীপ সরকার এখনও স্পষ্ট করেনি, যুক্তরাষ্ট্র সরকার মালদ্বীপকে টহল জাহাজ সরবরাহ করতে রাজি হয়েছে কি না। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেনি।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ডোনাল্ড লু প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ মুইজ্জুর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বৈঠকে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মালদ্বীপের সঙ্গে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পর্যটন সহযোগিতা এবং ভারত মহাসাগরের নিরাপত্তাসহ সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।”
যুক্তরাষ্ট্র সরকার এরই মধ্যে প্রতিরক্ষা খাতে বিশেষ করে মালদ্বীপ ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের (এমএনডিএফ) সদস্যদের প্রশিক্ষণে অনেক সহায়তা দিচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো–প্যাসিফিক কমান্ডের কমান্ডার অ্যাডমিরাল জন অ্যাকুইলিনোর সঙ্গে দেখা করেছিলেন।