ভারতে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির তোড়ে ভাঙলো ঘরবাড়ি, ৪ জনের মৃত্যু

তাদের কোনো রকম সতর্কবার্তা দেয়া হয়নি। মঙ্গলবার কাজের দিন, বাচ্চাদের স্কুলও ছুটি ছিল না। কারো কোনো ধারণাই ছিল না যে এত বড় ঘটনা হতে চলেছে।
ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন স্থানীয়রা। উত্তরকাশীর প্রশাসন দাবি করেছে, এখন পর্যন্ত অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে এবং বেশকিছু ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিবিসি জানিয়েছে, এই ঘটনায় এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন। উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা তাদের সন্ধান করছেন।
বিবিসি আরো জানায়, মেঘ ভাঙার ফলে ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে সেখানে। সেনাবাহিনী, আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। এই ঘটনা মঙ্গলবার দুপুরের।
ভারতের গণমাধ্যম স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্ধৃত করে জানাচ্ছে যে বিকেলে কাছাকাছি আরো একটি জায়গায় মেঘ ভেঙেছে, যার ফলে নতুন করে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
দুপুরের মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ফলে রাজ্যের উত্তরকাশী জেলার একটি ভিডিও এখন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে পাহাড়ের গভীর খাদ বেয়ে নেমে আসা জলস্রোত এবং মাটি ও পাথর আছড়ে পড়ছে একটি গ্রামের ওপরে এবং একাধিক ভবন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে।
জানা গেছে- ওই ভবনগুলোর অনেকগুলোই আবাসিক হোটেল ছিল। হর্ষিল উপত্যকার ওই গ্রামটির নাম ধরালী। গঙ্গোত্রী যাওয়ার রাস্তায় পড়ে এই গ্রামটি।
গ্রামের বাসিন্দা আস্থা পাওয়ার ওই ভয়াবহ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমার বাড়ি রাস্তা থেকে একটু দূরে। এমনটা নয় যে একবারের জলস্রোতেই সব কিছু ভেসে গেছে। প্রথম যে স্রোতটা নেমে এসেছিল, সেটা প্রবল বেগে ধেয়ে এসেছিল, যথেষ্ট ভয়াবহ ছিল ওটা। ওই ভিডিওটাই সম্ভবত সবাই দেখছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘তারপর প্রায় ১০-১৫ বা ২০ মিনিটও হতে পারে, একের পর এক পাথর আর মাটির স্রোত আসতে থাকে। সেগুলোতে হোটেল ভেঙে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল। একেকবারে একটা বা দুটো করে হোটেল ভেঙে পড়ছিল।’
তাদের কোনো রকম সতর্কবার্তা দেয়া হয়নি। মঙ্গলবার কাজের দিন, বাচ্চাদের স্কুলও ছুটি ছিল না। কারো কোনো ধারণাই ছিল না যে এত বড় ঘটনা হতে চলেছে।
উল্লেখ্য, প্রচুর পরিমাণে উষ্ণ মৌসুমি বায়ু কনকনে ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এলে ঘন মেঘের সৃষ্টি হয়। উষ্ণ বাতাস ওপরের দিকে উঠতে থাকলে মেঘে সঞ্চিত জলকণা বৃষ্টি হয়ে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ঝরে পড়তে বাধা পায়। ফলে মেঘের ঘনত্বও ক্রমশ বাড়তে থাকে। পরে বাতাসের আঘাতে মেঘ ফেটে পানি বেরিয়ে আসে, তবে সেটা বৃষ্টির চেয়ে অনেকগুণ ভারী হয়।