International

ভারত মহাসাগরে প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতায় চীন-ভারত

চীন সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভারত মহাসাগরের দেশগুলোর সাথে নিরাপত্তা সম্পর্ক জোরদার করার উদ্যোগ বাড়িয়েছে। দেশটি মালদ্বীপের সাথে একটি নতুন নিরাপত্তা চুক্তিতে সই করেছে। এছাড়া চলতি মাসের শুরুতে এ অঞ্চলের তিন দেশে সামরিক প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে।

মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ৪ মার্চ ঘোষণা দিয়েছে যে দেশটি চীনের সাথে সামরিক সহযোগিতা চুক্তিতে সই করেছে। এই চুক্তির লক্ষ্য ‘আরো বলিষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সৃষ্টি’। তবে মন্ত্রণালয় চুক্তির বিস্তারিত জানায়নি।

চীনের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ মাসের শুরুর দিকে মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও নেপালে ১০ দিনের সফর করার জন্য সামরিক প্রতিনিধি দল পাঠায়।

মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতিনিধিরা মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু ও তিন দেশের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সাথে ‘অংশগ্রহণকারী সব দেশের জন্য প্রযোজ্য আঞ্চলিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়’, দ্বিপক্ষীয় সামরিক সম্পর্কের উন্নয়ন ও দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা করেন।

কয়েকজন বিশ্লেষক বলছেন, ভারত মহাসাগরের সাম্প্রতিক তৎপরতা চীনের আঞ্চলিক নিরাপত্তা উপস্থিতি বাড়ানোর দীর্ঘ-মেয়াদি উদ্যোগের অংশ। অস্ট্রেলীয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র গবেষণা ফেলো ডেভিড ব্রুস্টার টেলিফোনের মাধ্যমে ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেন, ‘চীন এ কাজটি প্রায় ১৫ বছর ধরেই করছে এবং তারা ভারত মহাসাগরে (নিরাপত্তা উপস্থিতি বাড়াতে) সুযোগসন্ধানী মনোভাব বজায় রেখেছে।’

মালদ্বীপে নতুন সরকারের অধীনে চীনের সাথে যোগাযোগ বাড়লেও ব্রুস্টার বলছেন, এই সম্পর্ক কতটুকু উল্লেখযোগ্য তা পরিষ্কার নয়। ভয়েস অব আমেরিকাকে তিনি বলেন, ‘(চীন ও মালদ্বীপের মধ্যে) সামরিক সহযোগিতার প্রথম ধাপগুলো তেমন বড় কিছু নয় এবং কীভাবে এই দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা সম্পর্ক সামনে আগাবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।’

তা সত্ত্বেও কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বলছেন, ভারত মহাসাগরে চীনের নিরাপত্তা উপস্থিতি বাড়তে থাকার বিষয়টি নিয়ে ভারত উদ্বেগে রয়েছে এবং তারা বেইজিংয়ের এসব উদ্যোগের জবাব দিতে নিজেদের উপস্থিতি সম্প্রসারণ বা প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা চালাতে পারে।

ভারতও কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ অঞ্চলে তাদের উপস্থিতি বাড়াতে ও নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। বিশ্বের ৮০ শতাংশ নৌপরিবহন এই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে সংঘটিত হয়।

অস্ট্রেলিয়া থেকে ব্রুস্টার বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো বেইজিং ও নয়াদিল্লির প্রভাব বিস্তারের নিরন্তর চেষ্টার অংশ।

কয়েকজন বিশ্লেষক বলছেন, এ অঞ্চলটিও বড় বড় ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের মধ্যে ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার আরেকটি ক্ষেত্রে পরিণত হবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button