মঙ্গল অভিযানে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে নাসার নতুন চপার

নাসা সম্প্রতি তাদের সফল ইনজেনুইটি হেলিকপ্টারের উন্নততর একটি সংস্করণ উন্মোচন করেছে। নতুন এই ড্রোনকে নাসা ‘মার্স চপার’ নামে অভিহিত করছে। এটি আকারে ইনজেনুইটির তুলনায় অনেক বড় এবং বহনক্ষমতায় উন্নত। এটি মঙ্গলগ্রহের কঠিন ভূখণ্ডে আরও কার্যকরভাবে অভিযান চালানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরি (জেপিএল) এবং অ্যামস রিসার্চ সেন্টারের সহযোগিতায় তৈরি এই চপারের কম্পিউটার রেন্ডারিংয়ে দেখা যায়, এটি একটি এসইউভি গাড়ির আকারের এবং এতে রয়েছে ছয়টি রোটর। প্রতিটি রোটরের ছয়টি ব্লেড ছোট হলেও আগের তুলনায় আরও বেশি লিফট (উচ্চতা ধরে রাখা) প্রদান করতে সক্ষম।
নতুন চপারটি পাঁচ কিলোগ্রাম পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি বহন করতে পারবে এবং একবারে তিন কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে সক্ষম হবে। এটি এমন অঞ্চলগুলোতে অভিযান চালাতে পারবে যেখানে রোভার পৌঁছানো সম্ভব নয়। নাসার মতে, এই ড্রোন মঙ্গলগ্রহসহ অন্যান্য গ্রহের কঠিন পৃষ্ঠ এবং পাতলা বায়ুমণ্ডলে গবেষণার জন্য একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।
ইনজেনুইটির ওজন ছিল মাত্র ১.৮ কিলোগ্রাম। এটি প্রথমে ৩০ দিনের জন্য পাঁচটি পরীক্ষামূলক উড়ানের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এটি প্রায় তিন বছর ধরে কার্যক্রম চালিয়ে ৭২টি সফল উড়ান সম্পন্ন করেছে এবং পরিকল্পনার চেয়ে ৩০ গুণ বেশি দূরত্ব পাড়ি দিয়েছে।
যদিও ইনজেনুইটি দীর্ঘ সময় ধরে সফলভাবে কাজ করেছে, গত মাসে এটি একটি দুর্ঘটনায় পড়ে। নাসার মতে, ইনজেনুইটির নেভিগেশন সিস্টেম মঙ্গলের জেজেরো ক্রেটারের ঢালু এবং বালুময় ভূখণ্ডে বিভ্রান্ত হয়েছিল। ফলে এটি ভারসাম্য হারিয়ে মাটিতে কঠোরভাবে আঘাত করে।
ইনজেনুইটি বর্তমানে মঙ্গলের আবহাওয়া এবং ইলেকট্রনিক ডেটা বিশ্লেষণ চালিয়ে যাচ্ছে। নাসা আশা করছে, এই ডেটা ভবিষ্যতের মঙ্গল অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ‘মার্স চপার’-এর উন্নত প্রযুক্তি মঙ্গলগ্রহ এবং অন্যান্য গ্রহে গবেষণার দিগন্ত খুলে দেবে বলে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী।
নতুন ড্রোন মঙ্গল অভিযানে দ্রুততা, দক্ষতা এবং নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে মঙ্গলগ্রহের অনাবিষ্কৃত অঞ্চলগুলোতে গবেষণার সুযোগ তৈরি করবে।