মঙ্গল গ্রহের রং আসলে কী

রাতের আকাশে একটু খেয়াল করলে লাল তারার মতো দেখা যায় মঙ্গল গ্রহকে। মঙ্গল গ্রহের লালচে রঙের উৎস হচ্ছে সেখানকার পাথরে থাকা আয়রন অক্সাইড ও পৃষ্ঠতলের ধুলা। আমাদের পৃথিবীতে যে মরিচা পাওয়া যায়, তা আয়রন অক্সাইডের একটি সাধারণ রূপ। মরিচার রংও প্রায়ই লাল হয়। পৃথিবী থেকে পাঠানো বিভিন্ন রোভারের তোলা ছবিতে মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠে মরিচা কমলা রঙের ধুলার স্তর দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেনেসো স্টেট ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী ডেভিড জোফ জানিয়েছেন, মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠের সব অংশ সব সময় একই রং ধারণ করে না। মেরুর দিকে বরফ থাকায় সেখানে সাদা রং দেখায়। বরফের টুকরায় হিমায়িত কার্বন ডাই–অক্সাইড রয়েছে। এই শুষ্ক বরফের স্তরে সূর্যের আলো পড়লে খুব দ্রুত বাষ্পীভূত হয়ে যায়। সূর্যের আলো আড়ালে চলে গেলে এই সাদা অংশ আবার ফিরে আসে। এই প্রক্রিয়ার ফলে মঙ্গলের ঋতু অনুসারে সাদা বরফের আস্তরণ বৃদ্ধি পায় এবং আকারে সংকোচন দেখা যায়।
মঙ্গল গ্রহ থেকে এমন রঙের আলো নির্গত হয়, যা খালি চোখে দেখা যায় না। বিজ্ঞানীরা টেলিস্কোপে বিশেষ ক্যামেরা দিয়ে সেই রং দেখতে পান। আলো কেবল তরঙ্গ হিসেবেই নয়, ফোটন নামক কণার একটি প্রবাহ হিসেবে ভাবা হয়। প্রতিটি ফোটনের বহন করা শক্তির পরিমাণ এর রঙের সঙ্গে সম্পর্কিত। নীল ও বেগুনি ফোটনের শক্তি কমলা ও লাল ফোটনের চেয়ে বেশি।
বিজ্ঞানীরা টেলিস্কোপে নাইট–ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করে ইনফ্রারেড তরঙ্গে মঙ্গল গ্রহের বিভিন্ন ছবি তুলেছেন। বিজ্ঞানীদের তথ্য মতে, মহাকাশ থেকে মঙ্গল গ্রহের রং লালচে বাদামি দেখা যায়, তবে ইনফ্রারেড তরঙ্গের মাধ্যমে গ্রহটি দেখতে সবুজ ও লাল রঙের।