মিলবে না বেতন-পরিষেবা, বার্মিংহামকে দেউলিয়া ঘোষণা
শ্রীলঙ্কার অবস্থা হল বার্মিংহামের। ব্রিটেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরকে দেউলিয়া বলে ঘোষণা করল স্থানীয় প্রশাসন। পাশাপাশি সেখানে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। শুধু তাই নয়, শহরের সমস্ত অপ্রয়োজনীয় পরিষেবার ব্যয় স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিলের তরফে বিবৃতি দিয়ে গোটা শহরকে দেউলিয়া বলে ঘোষণা করে। সেখানে বলা হয়েছে, কাউন্সিলের পক্ষে শহরের খরচ চালানো আর সম্ভব নয়। সূত্রের খবর, বর্তমানে এই ব্রিটিশ শহরে ১০ লাখের বেশি মানুষ থাকেন। বার্মিংহাম দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় তাঁরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে চলেছেন বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞজের।
উল্লেখ্য, বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিলের ক্ষমতায় রয়েছে বিরোধী লেবার পার্টি। দলের তরফে শ্যারন থম্পসন জানিয়েছেন, “আমরা অভূতপূর্ব আর্থিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। কর্মীদের বেতন দেওয়ার মতো টাকাও আমাদের হাতে নেই।” প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবর্ষে বাজেটে ১০৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘাটতি রয়েছে। এই দেউলিয়ার জন্য কনজারভেটিভ পার্টি নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ সরকারের দিকে আঙুল তুলেছে লেবার পার্টি। পালটা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ব্রিটেনের রক্ষণশীল দল।
দলের তরফে বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিল দেউলিয়া হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন লেবার পার্টির অন্যতম নেতা জন কটন। তাঁর কথায় উঠে আসে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। “ব্যবসায়ীদের থেকে পাওয়া করের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে কমেছে। তাছাড়া মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবের জন্যও ঘাটতির মুখে পড়েছে কাউন্সিল।” সংবাদমাধ্যমকে বলেন কটন।
লেবার পার্টি নেতা-নেত্রীদের আরও অভিযোগ, তাঁরা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কাউন্সিলের ব্যয় বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে শ্যারন থম্পসন বলেন, “২০১০-র আমরা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রতিহিংসামূলক আচরণ করছে কনজারভেটিভ পার্টি। গত ১৩ বছরে প্রায় ১২৫ কোটি মার্কিন ডলার বাজেট কমানো হয়েছে।”
অন্যদিকে এই ইস্যুতে লেবার পার্টির কাউন্সিল পরিচালনার দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ব্রিটিশ রক্ষণশীল দল। প্রধানমন্ত্রীর দফতর তথা ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের তরফে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগামী দিনে কাউন্সিল আরও কঠিন অবস্থার মুখে পড়বে।
সূত্রের খবর, দেউলিয়া হওয়া বার্মিংহামকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলতে ব্রিটিশ সরকার বড় অংকের অর্থ বরাদ্দ করতে পারে। আগামী ৯-১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে বসবে জি২০ সম্মেলন। তাতে যোগ দেবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক। সেই বৈঠক সেরে দেশে ফেরার পরই এই নিয়ে তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে মিলেছে ইঙ্গিত।