মোদি সরকারের বাজেটের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ
ভারতের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের নতুন বাজেট পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। মঙ্গলবার পার্লামেন্টে তৃতীয় মেয়াদে নরেন্দ্র মোদি সরকারের পেশ করা প্রথম এই সাধারণ বাজেটে ৯টি অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র উল্লেখ করেছেন সীতারমণ। এর মধ্যে বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশের উন্নয়নে বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। এ নিয়ে বিরোধীদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। খবর এনডিটিভির
ভারতের কেন্দ্রীয় বাজেটকে মোদির ‘সরকার বাঁচানোর বাজেট’ অভিহিত করে বিরোধী পক্ষ গতকাল বুধবার সংসদ ভবনের ভেতরে ও বাইরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের প্রতি ‘বঞ্চনার বাজেট’ বলে অভিহিত করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিরোধীদের অভিযোগ, এই বাজেটের মূল লক্ষ্য অন্ধ্রপ্রদেশ ও বিহারকে খুশি রাখা, যাতে দুই শরিক তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ও জনতা দল সংযুক্ত (জেডিইউ) জোট না ছাড়ে। দুই দলের দুই মুখ্যমন্ত্রী যথাক্রমে– চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতীশ কুমার সরকার থেকে সমর্থন তুলে না নেন।
বিরোধীদের অভিযোগ, বাজেট প্রস্তুতির সময় প্রধানমন্ত্রী মোদির একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল দুই শরিককে সন্তুষ্ট রাখা, সংসদে যাদের মোট সদস্য ২৮। এ কারণে এই বাজেটে অন্য সব রাজ্য বঞ্চিত হয়েছে। এমনকি চলতি বছরের শেষে যে চার বিধানসভার ভোট রয়েছে, যেমন– মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড ও জম্মু-কাশ্মীর, উপেক্ষিত হয়েছে তারাও।
গতকাল সংসদের অধিবেশন শুরুর আগেই ইন্ডিয়া জোটের সংসদ সদস্যরা সংসদ ভবনের দরজার সামনে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাতে অংশ নেন সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে, তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকে, এসপি, এনসিপি (শরদ), শিবসেনাসহ (উদ্ধব) ইন্ডিয়া জোটের সদস্যরা। প্ল্যাকার্ডগুলোয় লেখা বাজেটে বঞ্চিত হওয়ার কথা। বিরোধীরা এই বাজেটকে ‘লজ্জার’, ‘জনবিরোধী’ ও ‘ধ্বংসাত্মক’ বর্ণনা করে বলেন, মোদির চিন্তায় সরকারের অস্তিত্ব রক্ষা ছাড়া আর কিছু ছিল না। তাই সবার স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে শুধু দুই শরিকের কথা তিনি ভেবেছেন। রাহুল বলেন, ‘এটা মোদির কুর্সি বাঁচানোর বাজেট।’
এই বঞ্চনার প্রতিবাদে আগামী শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে কংগ্রেসের কোনো মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন না। এমনকি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনও ওই বৈঠক বর্জন করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাসভবনে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
বাজেটে বিহারে নতুন মেডিকেল কলেজ এবং বিমানবন্দর তৈরির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গঙ্গার ওপর তৈরি হবে দুটি নতুন সেতু। অন্ধ্রপ্রদেশে নতুন রাজধানী নির্মাণে বরাদ্দ করা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। রাজ্য পুনর্গঠনের পর থেকেই বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশ বিশেষ মর্যাদার দাবিতে সরব। যদিও মোদি সরকার সেই দাবিকে সেভাবে আমল দেয়নি। এবার দুই সহযোগী সেই দাবি জোরালোভাবে না তুললেও বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ পেতে সচেষ্ট ছিলেন।